শুভ্রদার লেখায় অলিম্পিককে নতুন করে চেনা
উৎপল শুভ্র নির্বাচিত পাঠকের লেখা
রিজওয়ান রেহমান সাদিদ
২৩ জুলাই ২০২১
অলিম্পিকের খোঁজখবর এই পাঠক রাখতেন, কিছু খেলা-টেলা দেখতেনও। ওকেই আমি দায়িত্ব দিয়েছিলাম, আমার কাভার করা চারটা অলিম্পিকের লেখা ওয়েবসাইটে তুলতে। ওই লেখাগুলো পড়তে গিয়েই ওর ভেতরে একটা উপলব্ধি হলো। আশে-পাশে 'অলিম্পিক অনেক বড়' বলে যে শোর ওঠে, আমিও দুয়েকবার যা লিখেছি-- অলিম্পিক নাকি তার চেয়েও অনেক অনেক বড়।
অনুভূতিটা আমার গেল বছরও হয়েছিল। সত্যজিৎ রায়ের 'ফেলুদা সমগ্র' নিয়ে বসেছিলাম করোনার প্রথম ধাক্কায়। পড়তে পড়তে যেন ভারতবর্ষের 'কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী' পুরোটাই ঘুরে আসা হলো রায়বাবুর সঙ্গে; পুরোটা পড়ে যখন শেষ করলাম, ফেলুদার সঙ্গে সঙ্গে আমার বয়সও যেন বেড়ে গিয়েছিল ২৭ বছর।
খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইটে 'ফেলুদা সমগ্র' নিয়ে আলাপ দেখে কি ভিরমি খাচ্ছেন? একটু কি বিরক্তও? কী আর করা যাবে, বলুন! অনুভূতিটা আবার ফিরে এল যে! আর খেলার কারণেই এলো বলে ওই অভিজ্ঞতাটা আপনার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না।
খোলাসা করেই বলা যাক। গত মাসেরই শেষদিকে শুভ্রদা, মানে উৎপল শুভ্র জানালেন পরিকল্পনাটা, টোকিও অলিম্পিক কাভার করতে চেষ্টা করবেন, এথেন্স-বেইজিং-লন্ডন-রিওতে যেমন করেছিলেন। পার্থক্য বলতে ওই চারবার সশরীরে তিনি অলিম্পিক-নগরীতে ছিলেন, এবার করোনাক্রান্ত সময়ে কাভার করবেন দেশে বসেই। তবে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে দিন-রাত ভুলে কাজে ঝাঁপাতে হবে না, লেখালেখির কাজটা তিনি নিজেই করবেন। আমাদের কেবল তাঁর পাশে থাকলেই চলবে। এই যেমন, গত চারটা অলিম্পিক কাভার করতে গিয়ে তিনি যে লেখাগুলো লিখেছিলেন, তা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা অলিম্পিক শুরুর আগে ওয়েবসাইটে তুলে দিলেই হবে।
লেখাগুলো আমার কাছে আগে থেকেই ছিল। শুভ্রদার কথা শুনে হিসাব করতে গিয়ে দেখি, সেই 'নির্বাচিত কিছু'র সংখ্যাটাও শয়ের কম না। এখনো জীবনের দুঃখ-কষ্ট-চাপের কিছুই দেখিনি বলে হতাশও হইনি, তবে সত্যিটা স্বীকার করেই নিই, ওই মুহূর্তে পৃথিবীর যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট-হতাশা আমাকে গ্রাস করে নিয়েছিল। একটা পুরনো লেখা তোলা মানে তো শুধুই লেখা না, ওই ঘটনার সঙ্গে মানানসই ছবি খুঁজে বের করো, অক্ষরগুলো ভেঙে গেলে তা ঠিক করো, এবং এর জন্যে পুরো লেখাটা মন দিয়ে পড়ো…উৎপলশুভ্রডটকমের সঙ্গে মাস পাঁচেকের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, কাজটা কঠিন না হলেও বেশ সময় সাপেক্ষ।
এই সময় সাপেক্ষ কাজটা করব না সিদ্ধান্ত নিয়েই লেখাগুলো ভাগ-বাটোয়ারা করে চাপিয়ে দিলাম শাহরিয়ার ফিরোজ ভাই আর ইমরান আফ্রাত ভাইয়ের কাঁধে। তাঁদের কাজটা খুব সহজ। ফিরোজ ভাই লেখাটা পড়ে তুলে দেবেন, আর ইমরান ভাই ছবি খুঁজবেন। মাঝে থেকে আমার কাজটা একটু খোঁজ নেওয়ার, 'কী ব্যাপার? আপনাদের কতদূর হলো?'
কিন্তু গুণীজনরা তো বলে গিয়েছেন, অভাগা তাকালে সাগরের শুকিয়ে যাওয়াটাই নিয়ম। যে কারণে ইমরান ভাই কারিগরি ত্রুটির কারণে ছবিগুলো বসাতে পারলেন না, ফিরোজ ভাইকে গছানোর চেষ্টা করলে তিনিও ব্যর্থই হলেন। বাধ্য হয়ে দায়িত্বটা তাই এই অভাগাকেই নিতে হলো। তখন কি আর জানি, সৌরভ গাঙ্গুলীর 'জীবনে ভালো সব কিছু পরিকল্পনার বাইরে গিয়েই ঘটে' কথাটা সর্বাংশে সত্য?
অলিম্পিকের খোঁজখবর আমি রাখতাম, 'কিছুটা' দেখতামও। কিছুটা শব্দে বাড়তি জোর দেওয়ার কারণ, শব্দটা লিখেই মনের ভেতর খচখচ করছে, বাড়িয়ে বললাম কি? ৩৩ খেলার ৫০টা ডিসিপ্লিনে ৩৩৯ স্বর্ণের লড়াই (টোকিও অলিম্পিকে তা-ই হচ্ছে) হয় যেখানে, সেখানে দুই কদম দৌড়, ফুটবলের ফাইনাল, একটু করে সাঁতার আর অনেকক্ষণের হাইলাইটস দেখাকে কি 'কিছুটা'-ও বলা চলে? আমার অলিম্পিক দেখার অভিজ্ঞতাকে আরও নগণ্য মনে হচ্ছে গত কয়েকদিনের পঠন-অভিজ্ঞতায়। নাতালি ডু টোইট, নাতালিয়া পার্তিকা, ইয়ান মিলার কিংবা ওকসানা চুসোভিটিনা…তাঁদের গল্পগুলো দূরে থাক, নামগুলোই যে আমার জানা ছিল না!
ডু টোইটের এক পা নেই, পার্তিকার নেই ডান হাতের কনুই থেকে নিচের অংশটুকু। এ নিয়েই তাঁরা লড়ে গিয়েছেন বেইজিং অলিম্পিকে। তেত্রিশেও জিমন্যাস্টিকসের ম্যাটে ফুল হয়ে ফুটছিলেন চুসোভিটিনা। কারণ? ছেলে আলিশারের লিউকেমিয়ার চিকিৎসার দেনা চুকাতে হবে তাঁর! বেইজিং অলিম্পিকটাকে বোল্ট-ফেলপসের বলেই জানি। একজন ১০০ মিটার স্প্রিন্টকে ছেলেখেলা বানিয়েছেন আর অন্যজন ওই অলিম্পিকেই ৮ সোনা জেতার অতিমানবীয় কীর্তি গড়েছেন বলে তা জানাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যাঁরা কেবল প্রবল ইচ্ছেশক্তিকে সঙ্গী করেই লড়ে যান, আর লড়তে লড়তে জানিয়ে যান 'মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়', তাঁদের না জানাটা তো ভীষণ অন্যায় হতো!
যেমন অন্যায় হতো কেম্বাইকে না চেনাটা। কেম্বাই যে খেলাটা খেলেন, সেটি ১০০ মিটার স্প্রিন্টের মতো ভুবনমোহিনী নয়। যে কারণে ৩০০০ মিটার স্টিপলচেজের সর্বকালের সেরা বলে যে কেনিয়ানকে মেনে নিয়েছেন মোটামুটি সবাই, ২০০৪ থেকে শুরু করে অলিম্পিক ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ মানেই ছিল যাঁর গলায় সোনা, তাঁকেই তো আমার চেনা হয়নি শুভ্রদার 'কেম্বাইয়ের জন্য মন খারাপ, কেম্বাই কে?' লেখাটা পড়ার আগে।
হিশাম এল গেরুজের গল্পটা আবার অন্য রকম। ১৫০০ মিটার দৌড়ে তখন তিনি রীতিমতো অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বিশ্ব রেকর্ড তাঁর, এর আগের চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপাও। আট বছরে হেরেছিলেনই মাত্র চারবার। কিন্তু সেই চারবারের দুটিই অলিম্পিকে! সিডনিতে শেষ দিকে এসে নোয়া এনগেনি পেছনে ফেলে দিয়েছিলেন, এথেন্সে বার্নার্ড লাগাত সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন তাঁকে। এথেন্স অলিম্পিকের বছরই জন্মানো মেয়ে হিবার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই শক্তি পেলেন এল গেরুজ। সেই শক্তিতেই জিতলেন সোনা। যা জেতার পর ট্র্যাকেই শুয়ে পড়ে কাঁদতে শুরু করলেন।
ইয়েলেনা ইসিনবায়েভার গল্পটা কি জানতেন আপনি? আমি জানতাম না। অলিম্পিকে আসার মাসখানেক আগেই ৪.৯০ মিটার লাফিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন, অথচ অলিম্পিকের চাপে পেরোতে পারছিলেন না ৪.৭০ মিটারের বাধাই। স্বদেশি ফিওফানোভা পেরিয়ে গেলেন ৪.৭৫ মিটারও, ইসিনবায়েভাকে তাই বাধ্য হয়েই বারটাকে তুলতে হলো ৪.৮০ মিটারে। ইসিনবায়েভা এবার পারলেন। পরে তো বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারলেন ৪.৯১ মিটার পেরিয়েও। ইয়েলেনা ইসিনবায়েভার মতো আক্ষরিক অর্থেই বাধা ডিঙানোর না হলেও, অলিম্পিক তো এমনই সব বাধা ডিঙানোর গল্প।
বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে রাফায়েলা সিলভার গল্পটাই পড়ুন। রিওর সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ এক এলাকায় জন্ম রাফায়েলার। যেখানে চুরিচামারি, খুনখারাবি ছিল প্রতিদিনের রুটিন ব্যাপার। এক সময় পুলিশও যেখানে যেতে ভয় পেত। সেই নরক থেকে উঠে আসতে রাফায়েলাকে কী করতে হয়েছে, তা তিনি নিজে জানতেন আর জানতেন সর্বজ্ঞ ঈশ্বর। বাকি বিশ্বকে জানানোর দায়িত্বটাও তুলে নিয়েছিলেন নিজ হাতে, রিও অলিম্পিকে ব্রাজিলকে প্রথম স্বর্ণ এনে দিয়েছিলেন তিনিই।
সিমোন ম্যানুয়েলের গল্পটা ঠিক নরকের নয়। নরকে নিশ্চয়ই সাদা-কালোর ভেদাভেদ করে শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখেননি ঈশ্বর। যা রেখেছে এই জগতের মানুষরা। গায়ের রং দিয়ে মানুষকে বিচার করার আদিমতম সংস্কৃতি এখনো সমস্যা হয়ে বিদ্যমান এই পৃথিবীতে। 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলন চলছে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও। অলিম্পিকে অংশ নিতে এসেও তাই ম্যানুয়েলকে বলতে হয়, 'ম্যানুয়েল কালো সাঁতারু-- শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত।'
রিও অলিম্পিকে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলের ওই ইভেন্টটা হওয়ার কথা ছিল ব্রন্টি নয়তো কেট ক্যাম্পবেলের। ওই ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ড তখন কেটের, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তাঁরই বোন ব্রন্টি। কিন্তু অলিম্পিকের স্বর্ণটা জিতলেন ম্যানুয়েল, প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে এক আগে যাঁর কখনো সোনাই জেতা হয়নি। এমন সাফল্যের রহস্য ব্যাখ্যা করা যায় ওই লাইনেই, ম্যানুয়েলকে বিশ্বজুড়ে বঞ্চনার আগুনে পোড়া কালো মানুষদের অনুপ্রেরণা হতে হতো যে!
অলিম্পিক মানে তো এমনই সব ম্যানুয়েলের গল্প। বিশ বছর আগে পয়েন্টের ভগ্নাংশের ব্যবধানে সোনা হারানো বাবার কান্নাটা মেয়ে বদলে দিয়েছেন আনন্দাশ্রুতে...অলিম্পিক তো এমন গল্পও দেখেছে। সেসব বলতে গেলে এই লেখা আর শেষ হবে না বলে 'আর কারও নাম লিখব না' সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়ার পরও মনের কোণে উঁকি দিয়ে যাচ্ছেন চির সবুজ মারলিন ওটি, পরক্ষণেই আবার ভেসে উঠছে জিমন্যাস্টিকসের প্রথম 'পারফেক্ট টেন' নাদিয়া কোমানেচের মুখটা, ২০০৪ সালের রোমানিয়া জিমন্যাস্ট দলের সঙ্গে একদম এঁটে ছিলেন বলে শুভ্রদা যাঁকে চিনতেই পারেননি প্রথমে।
অলিম্পিক বলতে বহুদিন বোল্ট-ফেলপসকেই বুঝলেও শুভ্রদার লেখা পড়ে বুঝলাম, তাঁদের অনেক কিছুই অজানা ছিল। আমি তো শুধু ট্র্যাকে আর পুলে দুজনকে দেখেছি, এর বাইরের ছবিটাও এঁকেছেন শুভ্রদা। দুজনের এত সব কীর্তির প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁদের নিয়ে তাই লেখাও অনেক। গ্রিন-ওটিকে চিনতে চাইলে কিংবা বোল্ট-ফেলপসের জানা-অজানা গল্পগুলো জানতে যদি আপনারও কৌতূহল হয়, তা হলে আমি ঠিকানাটা বলে দিচ্ছি: https://utpalshuvro.com/category/olympic, নিজেই না হয় জেনে নেবেন! আরও কত কিছু যে বলতে বাকি থেকে গেল। কিউবার প্রমীলা ভলিবল দলের খেলোয়াড়দের যে 'কাস্ত্রোস্ গার্লস্ নামে ডাকা হয়, সেটাই কি জানতাম নাকি! যাদের নিয়ে শুভ্রদা এথেন্স থেকেও লিখেছেন, যখন তারা আগের তিনটি অলিম্পিকের সোনাজয়ী। লিখেছেন বেইজিং থেকেও। সেমিফাইনাল থেকেই কিউবা বিদায় নেওয়ার পর কী হলো কাস্ত্রোর মেয়েদের প্রশ্ন করে উত্তর খুঁজেছেন নিজেই। যে লেখায় আছেন লিং প্যাং-ও। চীনের ভলিবল কিংবদন্তি ফাইনালে নিজের দেশের পরাজয় নিশ্চিত নীলনকশা আঁটতে ব্যস্ত, কারণ ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে যে দেশকে হারিয়ে সোনা জিতেছিলেন, ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে তিনি সেই যুক্তরাষ্ট্র দলের কোচ। কী দারুণ গল্প!
ভবিষ্যদ্বক্তা হিসেবে শুভ্রদার দিকে সশ্রদ্ধ নয়নে আগে থেকেই তাকাই। কারণটা ২০০৬, ২০১০ আর ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপের আগে তাঁর লেখাগুলো যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা সকলেই জানেন। তবে এবার তাঁর অলিম্পিকের লেখাগুলো পড়ার থেকেই তাঁকে দিয়ে হাতটা দেখিয়ে আসব বলে ভাবছি। ২০০৪ অলিম্পিকের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের তিনটি পদকের একটিও যায়নি ক্যারিবিয়ানে; তবুও তিনি লিখলেন, 'ক্যারিবিয়ানরা আসছে, আর এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে জ্যামাইকা।' মাথায় রাখতে বলি, তখনো অলিম্পিকের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে জ্যামাইকার সাফল্য বলতে ১৯৭৬ মন্ট্রিয়ল অলিম্পিকে হ্যাসলি ক্রফোর্ডের এনে দেওয়া সোনা। এমন ইতিহাস মাথায় রেখেও শুভ্রদা যখন ২০০৪ সালেই বাজাতে পেরেছিলেন ক্যারিবীয়দের আগমনী সংগীত...গ্রহ-নক্ষত্রের ওপর তাঁর বিশেষ দখল না থেকে পারেই না!
****
মাত্র দিন পনেরর এক আয়োজন, তাতেই লুকিয়ে কত-শত হাসি-কান্নার গল্প। কত মানুষ-জাতি-বর্ণ-শহর-দেশের গল্প। আল-মাখতুমের মতোই অলিম্পিক তাই হয়ে ওঠে কখনোই কোনো খেলায় মাঠে না নামা জিয়ান্না অ্যাঞ্জেলোপোলসের, নিজেদের সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দেওয়া বেইজিং অলিম্পিকের স্বেচ্ছাসেবীদের। অলিম্পিক দিয়ে বেইজিংয়ের আয়োজকরা তাই স্বপ্ন দেখেন এক পৃথিবীর, লন্ডন অলিম্পিকে স্বপ্নটা থাকে পৃথিবীকে সবুজে ভরে দেওয়ার। অলিম্পিকে এসে মার্টিন নাভ্রাতিলোভারও তাই মনে হয়, 'অলিম্পিকে না এলে আমার জীবনটা অপূর্ণ থেকে যেত।'
অর্থকড়ির হিসাব না হয় বাদই দিলাম; এককে যাঁর গ্র্যান্ড স্লাম সংখ্যা ১৮, সেই নাভ্রাতিলোভার কথাকে অতিরঞ্জনই মনে হয়েছিল প্রথমে। কী এমন আছে অলিম্পিকে যে, এখানে না এলে নাভ্রাতিলোভার জীবনটা ব্যর্থতাতেই পর্যবসিত হবে?
শুভ্রদার লেখায় ২০০৪-২০১৬ অলিম্পিক ঘুরে এসে জানি, অলিম্পিক টাকাপয়সা-সাফল্যের সীমানা ছাড়িয়ে অনেক বড়। জীবনে প্রথম অলিম্পিক কাভার করে ফেরার পর দুই পর্বের 'অলিম্পিক এত বড়' রচনা লিখেও শুভ্রদা যার বিশালত্বের পুরোটা ধরতে পারেননি বলে আফসোস করেছেন।