এমন সিরিজের দেখা সহজে মেলে না
রিফাত বিন জামাল
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশ জিতে নিয়েছে ৩-২ ব্যবধানে, সঙ্গে দাগ কাটা হয়েছে রেকর্ড বইয়ের নানা পাতায়। সব একসঙ্গে এই লেখায়...
চলতি বছরে নবম জয় যেদিন পেয়েছিল বাংলাদেশ, সেদিনই নিশ্চিত হয়েছিল টি-টোয়েন্টিতে নবম সিরিজ জয়ও। তবে সুযোগ ছিল এ বছরে সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ডে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। কিন্ত সিরিজের শেষ ম্যাচে আজ নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশ হেরে গেছে ২৭ রানে। গেল কিছুদিনের অভিজ্ঞতায় বলতে হয়, এ ম্যাচে ব্যাতিক্রমী পিচে ঘটেছে ভিন্ন কিছুই। অবশ্য ব্যাতিক্রমী বলা যায় এই সিরিজটাকেও। চলুন এই ‘ব্যাতিক্রমী দুই’ ঘুরে আসি, সংখ্যায় সংখ্যায়...
৫- আজকের ম্যাচের আগে খেলা ৮ ইনিংসের মধ্যে ৫ ইনিংসেই মোট বাউন্ডারি সংখ্যা ছিল ১০-এর নিচে। যেখানে আজকে নিউজিল্যান্ডের পাওয়ারপ্লেতেই এসেছে ৭ চার ও ৩ ছয় মিলিয়ে মোট ১০টি বাউন্ডারি।
২- এই সিরিজে যে দুটি ফিফটি এসেছে, তা শুধু ল্যাথামের ব্যাট থেকেই। এর আগের অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও মাত্র দুটি ফিফটিরই দেখা মিলেছিল। পূর্ণ কিংবা সহযোগী, সব মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে এর চেয়ে কম পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসের দেখা মেলেনি আর। তাই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে সর্বনিম্ন ফিফটির দিক দিয়ে এই দুই সিরিজই আছে যৌথভাবে প্রথমে।
১৮- দুই দলের মধ্যে হওয়া পাঁচ ম্যাচের সিরিজগুলোতে ব্যাটসম্যানরা সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যকার আগের সিরিজেই। ওই সিরিজের সাথে এই সিরিজের স্ট্রাইক রেটেরও যদিও তফাৎ খুব কমই, ৯২.১৮ এবং ৯২.২৯-এর মধ্যে পার্থক্য তো মাত্র ০.১১ই। তবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ৯২.১৮ স্ট্রাইক রেটে রান এলেও ছক্কা এসেছিল ৩০টি। আর এই সিরিজে ছয়ের সংখ্যা ১৮! পাঁচ ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে সবচেয়ে কম ছক্কার মার দেখা গেছে নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের এই সিরিজেই।
১৫.৯৬- নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের এই সিরিজে ব্যাটিং গড় ১৫.৯৬। অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ সিরিজে যা ছিল আরও কম, ১৩.৯৭। এর চাইতেও কম ব্যাটিং গড় ছিল বেলজিয়াম-মাল্টার সিরিজে, মাত্রই ১৩.০৬। পাঁচ ম্যাচের দ্বিপাক্ষীয় সিরিজে সর্বনিম্ন ব্যাটিং গড়ের তালিকায় এই তিনটি সিরিজই সবার উপরে।
১০.২৩- আজ ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্রের ওপেনিং জুটিতে রান উঠেছে ওভারপ্রতি ১০.২৩ করে। এই পার্টনারশিপ বাদে মিরপুরে হওয়া গেল দুই সিরিজের ১৯ ইনিংসের ১৭টিতেই ওপেনিং পার্টনারশিপে রান এসেছে ৮ এর কম রান রেটে। বলের হিসাবে ওপেনিং পার্টনারশিপের মধ্যে গেল দুই সিরিজে অ্যালেন ও রবীন্দ্রের আজকের জুটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাদের এই ৩৪ বলের পার্টনারশিপের চেয়ে আরও ২৩ বল বেশি টিকেছিল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লিটন-নাঈমের ৫৯ রানের ওপেনিং জুটি।
১৭০.৮৩- রান করা যেখানে রীতিমতো দুঃসাধ্য, সেখানে আজ ফিন অ্যালেন রান করেছেন ১৭০.৮৩ স্ট্রাইক রেটে। এই সিরিজে কমপক্ষে ১০ বল খেলা ইনিংসগুলোর মধ্যে ১৫০ অথবা এর বেশি স্ট্রাইক রেটের তিন ইনিংসের দুটিই অবশ্য বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যানের। আজকের আগে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিনি করেছিলেন ১০ বলে ১৫। এই দুই ইনিংসের মাঝে আছে কোল ম্যাককঙ্কির আজকের ইনিংসটি, ১০ বলে তিনি করেছেন ১৭।
৫.৭২- কমপক্ষে তিন ম্যাচ হওয়া দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন রান রেটের তালিকায় এই সিরিজটিই আছে প্রথম স্থানে। মিরপুরে হওয়া পাঁচ ম্যাচের এ সিরিজে ওভারপ্রতি রান এসেছে ৫.৭২ করে। আগের রেকর্ডটা মাত্র এক মাসই পুরনো, ৫.৮৫ রান রেট নিয়ে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ এখন দ্বিতীয় স্থানে। কমপক্ষে তিন টি-টোয়েন্টির আর সব সিরিজেই ওভারপ্রতি রান উঠেছে ছয়ের বেশি।
৪৮- শরিফুল ইসলাম আজ চার ওভার বল করে ১২.০০ ইকোনমিতে রান দিয়েছেন ৪৮। মিরপুরে সর্বশেষ দশ ম্যাচে কমপক্ষে দুই ওভার বল করে তাঁর চেয়ে ওভারপ্রতি বেশি রান দিয়েছেন মাত্র একজন। যেদিন সাকিবের এক ওভারে ড্যান ক্রিশ্চিয়ান ৫ ছক্কা হাঁকান, সেদিন সাকিবের ইকোনমি ছিল ১২.৫০। এই দুজনের বাইরে শেরে-বাংলা স্টেডিয়ামে হওয়া গেল ১০ ম্যাচে কমপক্ষে ১২ বল করেছেন যারা, তাদের মধ্যে আর কেউই ওভারপ্রতি ১০ রানের বেশি দেননি।