শচীনের সেই বিদায়ী বক্তৃতা
উৎপলশুভ্রডটকম
১৬ নভেম্বর ২০২১
ক্রিকেট ব্যাট হাতে সারা জীবনই মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন, তবে বক্তা হিসেবে তেমন সুনাম কখনোই ছিল না। সেই শচীন টেন্ডুলকারই বিদায়বেলায় এমন একটা বক্তৃতা দিয়ে বসলেন যে, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের সীমানা ছাড়িয়ে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা কোটি কোটি দর্শকও যাতে অভিভূত। ইংরেজিতে দেওয়া সেই বক্তৃতার অনূদিত রূপ।
বিশ্বাস করতে পারছি না, ২২ গজে আমার ২৪ বছরের অসাধারণ পথচলা অবশেষে শেষ হলো। এই সুযোগে আমি তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা আমার এই পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই প্রথম আমি একটা তালিকা করে এনেছি, পাছে কারও নাম বলতে ভুলে যাই। আশা করছি, আপনারা (আমার অবস্থাটা) বুঝতে পারবেন। কথা বলাটা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আশা করি, আমি পারব।
আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছেন আমার বাবা, ১৯৯৯ সালে যিনি চলে গেছেন। তাঁর অভিভাবকত্ব না পেলে আজ আমি এখানে থাকতাম না। ১১ বছর বয়সেই তিনি আমাকে স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছিলেন। শুধু বলেছিলেন, স্বপ্নকে তাড়া করো, তবে কোনো শর্টকাট খুঁজো না। পথ হয়তো কঠিন হবে, কিন্তু হাল ছেড়ো না । আমি শুধু তাঁর নির্দেশ অনুসরণ করেছি। তিনি আরও বলেছিলেন, ভালো মানুষ হও। যা হওয়ার চেষ্টা আমি চালিয়ে যাব। আমি যখনই বিশেষ কিছু করেছি, ব্যাট দেখিয়ে বলেছি এটা বাবার জন্য।
আমার মা, আমি মাঝেমধ্যে ভাবি, আমার মতো দুরন্ত বাচ্চাকে উনি কীভাবে সামলেছেন। আমাকে সামলানো সহজ ছিল না! ধৈর্যের কী পরীক্ষাই না তাঁকে দিতে হয়েছে! একজন মায়ের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর সন্তান যেন নিরাপদ ও সুস্থ থাকে। তিনি এ নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন থাকতেন। গত ২৪ বছর তিনি আমার দেখাশোনা করেছেন। এমনকি তারও আগে, আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করার দিন থেকেই আমার জন্য প্রার্থনায় বসেছেন। আমার মনে হয়, তাঁর প্রার্থনাই আমাকে পারফর্ম করার শক্তি জুগিয়েছে। আমার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সে জন্য মাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
স্কুলজীবনে চার বছর বাড়ি থেকে স্কুল দূরে বলে আমি আমার কাকা ও কাকির সঙ্গে থেকেছি। তাঁরা আমাকে নিজেদের সন্তানের মতোই দেখেছেন। সারা দিন খেলে ক্লান্ত আমি যখন ঘুমে ঢুলুঢুলু, কাকি আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছেন, যাতে আমি পরদিন আবার খেলতে যেতে পারি। ওই মুহূর্তগুলো আমি ভুলতে পারি না। আমি ওঁদের সন্তানের মতো ছিলাম এবং এখনো আছি।
আমার বড় ভাই নীতিন আর তাঁর পরিবার সব সময়ই আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে। বড় ভাই কথা কম বলেন। শুধু যে কথাটা সব সময় বলে গেছেন, 'আমি জানি, তুমি যা-ই করবে, তাতে শতভাগ ঢেলে দেবে। তোমার ওপর আমার পুরো বিশ্বাস ও আস্থা আছে।' তাঁর দেওয়া উৎসাহ আমার জন্য ছিল অনেক কিছু।
আমার বোন সবিতা ও তার পরিবারও ব্যতিক্রম নয়। আমাকে প্রথম ব্যাটটা দিয়েছিল আমার বোন। কাশ্মীরের কাঠের তৈরি ব্যাট, তা দিয়েই আমার যাত্রা শুরু। আমি যখনই ব্যাট করেছি, ও উপোস থেকেছে।
অজিত, আমার ভাই, ওর সম্পর্কে আমি কী-ই বা বলতে পারি? এই স্বপ্নযাত্রার পথটা আমরা একসঙ্গেই পেরিয়েছি। আমার জন্য ও নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছে। ও আমার মধ্যে কিছু একটা দেখেছিল। ১১ বছর বয়সে ও আমাকে আচরেকার স্যারের কাছে নিয়ে যায় এবং এরপর আমার জীবনটাই বদলে যায়। কাল রাতেও আমাকে ফোন করে আমার আউটটা নিয়ে আলোচনা করেছে। আমি আর হয়তো ব্যাটিং করারই সুযোগ পাব না, এটা জেনেও! এ এমনই অভ্যাসের ব্যাপার! আমার জন্মের পর থেকেই ওর সঙ্গে আমার যে বোঝাপড়া, এটি সব সময়ই বজায় ছিল এবং থাকবেও। আমার টেকনিক বা টেকনিক্যাল অনেক জিনিস নিয়ে আমরা যেমন একমত হয়েছি, আবার অনেক কিছু নিয়ে হইওনি। আমাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে, তর্ক হয়েছে। তবে পেছন ফিরে তাকিয়ে বুঝি, ও না থাকলে আমি এর চেয়ে অনেক খারাপ ক্রিকেটার হতাম। ক্রিকেট না খেললেও আমি হয়তো ওর সঙ্গে টেকনিক নিয়ে আলোচনা করেই যাব।
আমার জীবনে সবচেয়ে সুন্দর ঘটনাটা ঘটে ১৯৯০ সালে, যখন আমি আমার স্ত্রী অঞ্জলির দেখা পাই। ওই বছরগুলো আমার জীবনে বিশেষ কিছু, এরপরও তা-ই থেকেছে এবং আশা করি তেমনই থাকবে। ও চিকিৎসক, সামনে ছিল দারুণ একটা ক্যারিয়ার। বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ও নিজে থেকেই বলল, 'তুমি ক্রিকেট নিয়েই ভাবো, পরিবারের দায়িত্ব আমার। এটি না হলে আমি এভাবে চাপমুক্ত হয়ে ক্রিকেট খেলে যেতে পারতাম না। আমার হতাশা, উল্টাপাল্টা কথাবার্তা সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমার জীবনের সেরা জুটিটা তোমার সঙ্গেই হয়েছে।
আমার জীবনের অমূল্য দুই হীরকখণ্ড অর্জুন আর সারা। ওরা এখন বড় হয়ে গেছে। সারা এখন ১৬, অর্জুন ১৪। সময় কীভাবে চলে যায়! ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েও পারিনি। বিশেষ উপলক্ষগুলো, যেমন ওদের জন্মদিন, স্কুলে স্পোর্টসের দিনে থাকতে পারিনি, ওদের নিয়ে ছুটি কাটাতে যেতে পারিনি। তোমাদের বলে বোঝাতে পারব না, তোমরা আমার কাছে কতটা স্পেশাল। গত ষোলো বছর তোমাদের সময় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখতে পারিনি। কিন্তু প্রতিজ্ঞা করছি, আগামী ১৬ বছর কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় সবকিছুই তোমাদের জন্য।
আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, আনন্দ মেহতা ও অ্যানাবেল...জীবনের নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, উপদেশ নিয়েছি। সুসংবদ্ধ একটা পরিবার থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যারা সব সময় সঙ্গে থাকবে এবং পথ দেখাবে। আপনারা করতালি শুরু করার আগে বলি, সবচেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ, তাঁরা আমার সঙ্গে অঞ্জলিকে বিয়ে দিয়েছেন।
গত ২৪ বছর ভারতের পক্ষে খেলার সময় আমার অনেক নতুন বন্ধু হয়েছে। তবে এর আগেও ছেলেবেলার বন্ধুরা ছিল। ওদের সবার অনেক অবদান । যখনই ওদের বলেছি, সব কাজ ফেলে ওরা আমাকে নেটে বল করেছে। ছুটিতে যাওয়া হোক বা ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা, কীভাবে আরও ভালো পারফর্ম করা যায় ভেবে যখন আমি একটু চাপে...এমন প্রতিটি মুহূর্তেই ওরা আমার পাশে থেকেছে। যখন আমি চোটগ্রস্ত, অনেক দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হয়েছে, আমার ক্যারিয়ার শেষ। আমার সঙ্গে ড্রাইভে যাওয়ার জন্য রাত তিনটায় ওদের হয়তো ঘুম ভাঙিয়েছি। ওরা আমাকে বিশ্বাস জুগিয়েছে যে, আমার ক্যারিয়ার শেষ নয়। ওরা না থাকলে আমার জীবন অসম্পূর্ণ থাকত।
আমার ক্যারিয়ার শুরু ১১ বছর বয়সে, যখন অজিত আমাকে আচরেকার স্যারের কাছে নিয়ে যায়। এখানে ওনাকে স্ট্যান্ডে দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। এমনিতে উনি টেলিভিশনে আমার সব ইনিংসই দেখতেন। আমার ১১-১২ বছর বয়সে ওনার স্কুটারের পেছনে চড়ে দিনে দুটি প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলেছি। শিবাজি পার্কে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করার পর আবার আজাদ ময়দানে হয়তো অন্য কোনো ম্যাচে। যাতে আমি ম্যাচ প্র্যাকটিস পেতে পারি, সে জন্য উনি আমাকে নিয়ে মুম্বাই চষে বেড়িয়েছেন।
তবে মজা হলো, গত ২৯ বছরে কখনো উনি আমাকে ওয়েল প্লেড বলেননি। কারণ, তিনি ভাবতেন তাতে হয়তো আমার আত্মতুষ্টি চলে আসবে এবং আমি পরিশ্রম করা ছেড়ে দেব। এখন আমাকে শুভকামনা জানাতে পারেন স্যার, আমার ক্যারিয়ার নিয়ে 'ওয়েল প্লেড' বলতে পারেন। কারণ, আমার জীবনে আর কোনো ম্যাচ নেই। আমি এখন থেকে ক্রিকেট দেখব, ক্রিকেট আমার হৃদয়ে থাকবে। আমার জীবনে আপনার অবদান অপরিমেয়। ধন্যবাদ, স্যার।
মুম্বাইয়ের হয়ে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল এই মাঠেই। মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আমার হৃদয়ের খুব কাছের। আমার মনে আছে, নিউজিল্যান্ড থেকে ভোর চারটায় নেমে সকাল আটটায় আমি ম্যাচ খেলতে এসেছি। কেউ আমাকে জোর করেনি, মুম্বাই ক্রিকেটের অংশ হতে চাই বলেই তা করেছি। করেছি মুম্বাই ক্রিকেটকে ভালোবাসি বলে। এমসিএ সভাপতি এখানে আছেন। আপনাকে, আপনার টিমকে ধন্যবাদ আমার দিকে এত খেয়াল রাখার জন্য।
আমার স্বপ্ন ছিল ভারতের হয়ে খেলা, এভাবেই বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু। শুরু থেকেই বিসিসিআই ছিল অসাধারণ। আমার অভিষেকের দিন থেকে তারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে আমাকে দলে ডাকা ছিল বিরাট ব্যাপার। নির্বাচকদের সবাইকে ধন্যবাদ আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য। মাঠে নিজেকে প্রকাশ করার স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য বিসিসিআইকে ধন্যবাদ। বিশেষ করে, আমি যখন চোট পেয়েছি, তারা আমার পাশে থেকেছে। সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, যাতে আমি ফিট হয়ে আবার ভারতের পক্ষে খেলায় ফিরতে পারি।
২৪ বছরের এই পথচলা ছিল অসাধারণ। আমি অনেক সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলেছি, আরও অনেক সিনিয়র ক্রিকেটারের খেলা টিভিতে দেখেছি। সবাইকে ধন্যবাদ। আমি হয়তো অনেকের সঙ্গে খেলতে পারিনি, কিন্তু তাদের অর্জন ও অবদানকে আমি অনেক মূল্য দিই।
বড় পর্দায় রাহুল, লক্ষ্মণ, সৌরভকে দেখছি। অনিল এখানে নেই। আর আমার এখনকার সতীর্থরা। পরিবারের বাইরে তোমরা আমার কাছে আরেকটি পরিবারের মতো। আমার সময়টা অসাধারণ কেটেছে। আর এই ড্রেসিংরুমে না থাকা, ওসব বিশেষ মুহূর্তগুলোর অংশীদার হতে না পারাটা হবে খুব কঠিন। সব কোচকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের দিকনির্দেশনার জন্য। টেস্টের প্রথম দিন এমএস ধোনি যখন আমাকে ২০০তম টেস্টের ক্যাপ দিয়েছিল, দলের প্রতি আমার সংক্ষিপ্ত একটা বার্তা ছিল। আবারও সেটি বলতে চাই। আমি যেটা অনুভব করি, ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য হয়ে দেশের হয়ে কিছু করতে পারছি বলে আমরা খুব ভাগ্যবান। একই সঙ্গে এটি গর্বের ব্যাপারও। আমি সবাইকে চিনি বলেই জানি, তোমরা সবাই একই উৎসাহ আর মূল্যবোধ নিয়ে দেশের হয়ে খেলে যাবে। আমরা সৌভাগ্যবান যে, খেলাটির সেবা করার জন্য ঈশ্বর আমাদের বেছে নিয়েছেন। প্রতিটি প্রজন্মই নিজেদের সাধ্যমতো খেলাটির সেবা করার এই সুযোগটা পায়। তোমাদের ওপর আমার পুরো আস্থা আছে তোমরা সঠিক চেতনা ও নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনার চেষ্টা করে যাবে। শুভকামনা রইল ।
এতগুলো বছর ধরে যারা আমাকে খেলার মতো ফিট রেখেছেন সেসব চিকিৎসক, ফিজিও আর ট্রেনারদের ধন্যবাদ না দিলে অন্যায় হবে। আমি যতবার চোটে পড়েছি, জানি না কীভাবে আপনারা আমাকে ফিট রেখেছেন, কিন্তু এটা জানি আপনাদের বিশেষ চেষ্টা ছাড়া এটা কখনো সম্ভব হতো না। ডাক্তারদের যখন-তখন বিরক্ত করেছি। মুম্বাই থেকে কখনো চেন্নাইয়ে ডেকেছি, মুম্বাই থেকে দিল্লিতে। কাজ, পরিবার ফেলে আমার জন্য পরের ফ্লাইটেই উড়ে এসেছেন। সবাইকেই অনেক ধন্যবাদ আমাকে এভাবে ফিট রাখার জন্য।
আমার প্রিয় বন্ধু মার্ক মাসকারেনহাস, সে ছিল আমার প্রথম ম্যানেজার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০০১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা তাকে হারিয়েছি। কিন্তু সে ছিল ক্রিকেটের, আমার খেলার, ভারতীয় ক্রিকেটের বিশাল শুভাকাঙ্ক্ষী। ও জানত, একটা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে কী পরিমাণ আবেগ দরকার হয়। ও আমাকে নির্ভার থাকতে দিয়েছে, কখনো স্পনসরদের দাবি অনুযায়ী কোনো বিজ্ঞাপন করতে বা কোনো অনুষ্ঠানে যেতে জোর করেনি। ও-ই সব সামলেছে। আজ তাকে অনেক মিস করছি। অনেক ধন্যবাদ, মার্ক।
মার্ক যা করেছিল, আমার বর্তমান ম্যানেজমেন্ট টিম, ডব্লিউএসজিও তা-ই করেছে। চুক্তি স্বাক্ষর করার সময়ই ওদের কাছ থেকে আমার চাওয়াটা সুনির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছিলাম। আমার প্রতিনিধিত্ব করতে হলে কী কী করতে হবে, তা-ও। ওরা সেটিই করে এসেছে। ১৪ বছর ধরে আমার সঙ্গে আছে আরও একজন, আমার ম্যানেজার বিনোদ নাইডু। ও আমার পরিবারের মতোই। আমার কাজের জন্য সে নিজের পরিবারকে সময় দিতে পারেনি। ওর আর ওর পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আমার স্কুলজীবনে যখনই ভালো পারফর্ম করেছি, সংবাদমাধ্যম আমাকে অনেক সমর্থন জুগিয়েছে। আজ সকাল পর্যন্তও তারা তা-ই করে গেছে। আমাকে সমর্থন করার জন্য এবং আমার পারফরম্যান্সকে মূল্য দেওয়ার জন্য সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ। এটা অবশ্যই আমার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সব আলোকচিত্রীকেও ধন্যবাদ অসাধারণ সব মুহূর্ত ধরে রাখার জন্য, যা বাকি জীবন আমার সঙ্গী হয়ে থাকবে।
জানি, বক্তৃতাটা বড় হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শেষে একটা কথা বলতে চাই। যাঁরা আমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন, আমি শূন্য করি বা এক শ, আমাকে সমর্থন দিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এটা আমার কাছে অনেক কিছু।
আমি অনেককে চিনি, যাঁরা আমার জন্য উপোস থেকেছেন, প্রার্থনা করেছেন, আরও কত কী করেছেন! এসব ছাড়া আমার জীবনটা এরকম হতো না। আমি অন্তরের অন্তস্তল থেকে সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সময় দ্রুত চলে গেছে, কিন্তু আপনাদের সঙ্গে আমার যে স্মৃতি, সেটা রয়ে যাবে চিরদিন। বিশেষ করে, ‘শচীন’ ‘শচীন’ ধ্বনি জীবনের শেষনিঃশ্বাস ফেলা পর্যন্ত আমার কানে বাজবে। অনেক ধন্যবাদ। যদি কিছু ভুলে গিয়ে থাকি, আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন।
বিদায়।