দ্য নেম ইজ বোল্ট...উসাইন বোল্ট
এমন কেউ কি আর আসবে কখনো!
উৎপল শুভ্র
২১ আগস্ট ২০২১
ট্র্যাকে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, এটা তো সবারই জানা। কিন্তু উসাইন বোল্টের মহিমা তো শুধুই ওখানে শেষ নয়। বোল্ট মানে আনন্দ, বোল্ট মানে সূর্যকিরণ, বোল্ট মানে অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রতিশব্দ। পুরোটা মিলিয়ে যে প্যাকেজ, এমন কেউ আর কখনো আসবে বলে মনে হয় না।
সংবাদ সম্মেলন জীবনে অনেক কাভার করেছি। কিন্তু অমন আর একটিও নয়। পাঁজরে কনুইয়ের গুঁতো লাগছে। পা মাড়িয়ে দিচ্ছে অন্য কারও পা। রীতিমতো ধাক্বাধাক্কি চলছে। নোট নিতে হচ্ছে এর মধ্যে দাঁড়িয়েই। আবার একটু পরপর হাসতেও হচ্ছে! সংবাদ সম্মেলন যিনি করছেন, তিনি যে প্রায় কথায় কথায় কৌতুকে মাতিয়ে তুলছেন সবাইকে।
সামনের চেয়ারগুলো সব পূর্ণ। পেছনের খালি জায়গাটায় আমরা ৪০-৫০ জন সাংবাদিক মানবজটলা হয়ে দাঁড়িয়ে। ‘জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন’ বলে একটা কথা সংবাদমাধ্যমে খুব প্রচলিত, যেটি শুনলেই আমার বেইজিংয়ের ওই রাতটার কথা মনে পড়ে যায়। এর আগে-পরে কত সংবাদ সম্মেলনেই তো থেকেছি। এমন আর কখনো দেখিনি।
একটু আগে বার্ডস নেস্টে যা হয়েছে, তেমন কিছুও যে কেউ কখনো দেখেনি আগে। বেশির ভাগ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট শেষ হওয়ার পর যেখানে কে জিতল, তাৎক্ষণিকভাবে তা বোঝার উপায় থাকে না, সেটিতেই কিনা একজন প্রায় ২০ মিটার বাকি থাকতে এদিক-ওদিকে তাকাচ্ছেন। ১০ মিটারের মতো বাকি থাকতে বুক চাপড়ে বিজয়ী ঘোষণা করছেন নিজেকে। সমাপ্তিরেখা পেরোচ্ছেন হেলতে-দুলতে। তারপরও ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড জানিয়ে দিচ্ছে, এই মাত্র একটা বিশ্ব রেকর্ড হয়ে গেল!
এই জীবনে যত খেলা দেখেছি, বেইজিংয়ে বোল্টের ১০০ মিটারের চেয়ে অভাবনীয়, অচিন্তনীয়, অত্যাশ্চর্য কিছু আর দেখিনি! যেকোনো খেলার গ্রেটরাই কখনো কখনো এমন মুহূর্তের জন্ম দেন, যখন অবিশ্বাসে চোখ কচলে বলতে হয়, যা দেখলাম তা কি সত্যি! নাকি এক মায়াবী বিভ্রম! ১০০ মিটারের প্রায় এক পঞ্চমাংশ বাকি থাকতেই উসাইন বোল্টের শুরু দেওয়া ওই উদযাপন ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে ভেসে ওঠা ওই ৯.৬৯ টাইমিং—সে রাতে বার্ডস নেস্টে থাকা ভাগ্যবান ৯০ হাজার দর্শককেই মনে করিয়েছে অমন। যা দেখলাম, তা কি সত্যি!
দেখেছিলামও মন ভরে। বার্ডস নেস্টে বিশাল প্রেস গ্যালারি নিচ থেকে একেবারে ওপর পর্যন্ত বিস্তৃত। একেবারে নিচে শুধু দুই সারি চেয়ার, সামনে টেবিল-ফেবিল কিছু নেই। এথেন্স অলিম্পিকে টেবিলসহ আসন না পেয়ে একটু বিরক্তি নিয়েই বসেছিলাম সেখানে। এবার বসেছি ইচ্ছে করেই। এথেন্সেই যে বুঝেছিলাম, ওখানে বসতে হওয়াটা শাপে বর—সবচেয়ে কাছ থেকে দেখার সুযোগ। ঠিক ফিনিশিং লাইনের পাশে হাত দশেক দূরত্বে বসে দুচোখ ভরে দেখলাম ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ইতিহাসে স্মরণীয়তম কীর্তি।
১০০ মিটার স্প্রিন্ট মানেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের গায়ে গায়ে লেগে থেকে দৌড় শেষ করা, ফটোফিনিশ ক্যামেরার কর্মব্যস্ত হয়ে ওঠা কে প্রথম-কে দ্বিতীয় জানতে স্টেডিয়ামের ডিসপ্লে বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকা। এথেন্সেই যেমন দৌড় শেষ হওয়ার পর টেলিভিশন ক্যামেরা সোনাজয়ী ভেবে যাকে প্রথম ক্লোজআপে ধরেছিল, সেই শন ক্রফোর্ড আসলে হয়েছিলেন চতুর্থ। অথচ বেইজিংয়ে বাকিদের সঙ্গে বোল্টের এমনই ব্যবধান যে, মনে হলো দুটি দৌড় হচ্ছে। একটি বোল্টের নিজের সঙ্গে নিজের, অন্যটি বাকি সাত প্রতিযোগীর মধ্যে।
বিস্ময়, মুগ্ধতা সব কিছু ছাপিয়ে অবিশ্বাস! শুধু দর্শকেরাই নয়, যে অনুভূতিতে আক্রান্ত বোল্টের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কিম কলিন্স যেমন ঘোষণাই করে দিলেন, 'ও (বোল্ট) মানুষ নয়!'
এথেন্সের ওই ১০০ মিটার শেষ হওয়ার পরপরই স্বীকৃতি পেয়ে যায় সর্বকালের সেরা বলে। তা এমনই প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় ছিল যে, ৯.৮৯ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেও কোনো পদক জোটেনি শন ক্রফোর্ডের। এথেন্সের ১০০ মিটার স্প্রিন্টকে স্মরণীয় করে তুলেছিলেন প্রতিযোগীরা সবাই মিলে, আর বেইজিংয়ে উসাইন বোল্ট একাই। অ্যাথলেটিকসে কোনো বিশ্ব রেকর্ড হওয়ার সময় অলিম্পিক স্টেডিয়ামে থাকার অনুভূতিটা একেবারেই অন্য রকম। পুরো আবহটাই কেমন যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যায়। বাতাসে নেচে বেড়ায় উত্তেজনা আর রোমাঞ্চের অদৃশ্য রেণু। তবে ২০০৮ সালের ১৭ আগস্ট রাতে বোল্টের ১০০ মিটার উত্তর বার্ডস নেস্টে যা হয়েছিল, সেটির বোধ হয় কোনো তুলনা নেই। বিস্ময়, মুগ্ধতা সব কিছু ছাপিয়ে অবিশ্বাস! শুধু দর্শকেরাই নয়, যে অনুভূতিতে আক্রান্ত বোল্টের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কিম কলিন্স যেমন ঘোষণাই করে দিলেন, 'ও (বোল্ট) মানুষ নয়!'
অ্যাথলেটিকসের মহাকাশে নক্ষত্র হয়ে উসাইন বোল্টেরও উদয় হলো সেই রাতে। যা আর অস্ত যায়নি কখনো। শুধু উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতরই হয়েছে তার আলো। নিজেকে পরম সৌভাগ্যবানই মনে হয়, বোল্টের সব অলিম্পিক-কীর্তিই স্টেডিয়ামে বসে দেখেছি। এর আগে-পরে মিক্সড জোন ও প্রেস কনফারেন্সে খুব কাছ থেকে দেখেছি মানুষ বোল্টকে। ভিন্ন দুই ভূমিকায় বোল্ট আর আমার অলিম্পিক ক্যারিয়ার মিলে যাওয়াটা সৌভাগ্য ছাড়া আর কি! ২০০৪ এথেন্সে শুরু বোল্টের, যদিও তখন জ্যামাইকা দলের বাইরে কেউ বোল্টকে খুব একটা চিনতই না। চেনানোর মতো কিছু করতেও পারেননি। পঞ্চম হয়ে বাদ পড়েছিলেন ২০০ মিটারের হিট থেকেই। বোল্টের শেষ ২০১৬ রিওতে, ততদিনে অলিম্পিক ইতিহাসের বড় একটা অধ্যায় বরাদ্দ তাঁর জন্য। আমারও এথেন্সেই অলিম্পিকের সঙ্গে পরিচয়, পরে কখনো আবার যাওয়া হয় কি না কে জানে, আপাতত বোল্টের মতো আমারও শেষ অলিম্পিক রিও ২০১৬।
বোল্টকে নিয়ে কিছু বলতে গেলে ব্র্যাডম্যান সম্পর্কে ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেনিস কম্পটনের কথাটা খুব মনে পড়ে। যা অনুবাদের চেষ্টা করতে গিয়ে মনে হলো, সুরটা ঠিক ধরা যাচ্ছে না। ইংরেজিতেই না হয় তুলে দিই—ব্র্যাডম্যান ইজ আ ব্যাটসম্যান অ্যাপিয়ারিং নট জাস্ট ওয়ান্স ইন আ লাইফটাইম, বাট ওয়ান্স ইন দ্য লাইফ অব আ গেম।
এই কথাটা দিয়েই সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা করা যায় বোল্টকে। ওপরের লাইনটা আবার পড়ুন। ‘ব্র্যাডম্যান’-এর বদলে ‘বোল্ট’ বসিয়ে দিন আর ‘ব্যাটসম্যান’-এর জায়গায় স্প্রিন্টার। বোল্ট ইজ আ স্প্রিন্টার অ্যাপিয়ারিং নট জাস্ট ওয়ান্স ইন আ লাইফটাইম, বাট ওয়ান্স ইন দ্য লাইফ অব আ গেম।
ক্রিকেটে ব্র্যাডম্যান যেমন একজনই এসেছেন, অ্যাথলেটিকসেও বোল্ট তেমনি একমেবাদ্বিতীয়মই হয়ে থাকবেন। কী কারণে, সেটি ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজন দেখছি না। কেউ যা কখনো করতে পারেননি, তা-ই করেছেন। কেউ কখনো যা সম্ভব বলে মনে করেননি, তা-ও। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পিউমা তাঁর স্পনসর। তবে রিওতে তাঁর শেষ অলিম্পিকেও তিনটি সোনা জয়ের পর বোল্টের কথা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, তাঁর সঙ্গে তো আসলে ভালো যায় অ্যাডিডাসের ওই স্লোগানটা—নাথিং ইজ ইমপসিবল। এত কিছু কীভাবে হলো, প্রশ্নটা মনে হয় এমনই ছিল। বোল্ট জবাব দিয়েছিলেন, ‘আমি নিজেকে সব সময়ই বলেছি, অসম্ভব বলে কিছু নেই। নিজের জন্য আমি কখনো কোনো সীমা বেঁধে দিইনি।’
দেননি বলেই কখনো কেউ যা কল্পনা করেননি, এমন সব অর্জনে ভরেছে তাঁর ডালি।
—বোল্টের আগে কোনো পুরুষ স্প্রিন্টার অলিম্পিকে দুবার স্প্রিন্ট ডাবল জেতেননি, ২০০ মিটারে দুটি সোনাও না। বোল্ট জিতেছেন তিনবার।
—১০০ ও ২০০ মিটার এবং রিলের ‘ট্রিপল’ কারও একবারের বেশি জোটেনি। বোল্ট তিনবার তা জিতে ‘ট্রিপল ট্রিপল’ কথাটার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সবাইকে।
—অলিম্পিক ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কারোর একবারের বেশি স্প্রিন্ট ডাবল জয়ের কীর্তি নেই। বোল্ট জিতেছেন ছয়বার।
সতীর্থের ডোপ-পাপে বোল্টের একটা ‘ট্রিপল’ যে ‘ডাবল’ হয়ে গেছে, এর চেয়ে দুঃখের কিছু আর হয় না। সবচেয়ে বড় দুঃখটা বোল্টই পেয়েছেন। সেটি শুধু পদক হারানোর কারণে নয়, তাঁর বড় একটা গর্বের জায়গাটায় যে চরম আঘাত হেনেছে নেস্টা কার্টারের ওই কুকীর্তি। ডোপিংয়ের নিকষ অন্ধকারে ডুবে যাওয়া অ্যাথলেটিকসে বোল্ট আজীবন জ্বলেছেন সত্য আর সুন্দরের অনির্বাণ শিখা হয়ে। নিষ্কলুষ থেকেও যে জোরে দৌড়ানো যায়—হারিয়ে যাওয়া এই বিশ্বাসটা ফিরিয়ে দিয়েছেন সবার মনে। তাঁর কাছে অ্যাথলেটিকসই তাই চিরঋণী। ডেকাথলনে দুবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ড্যালি টমসন তো আর এমনিতেই বলেননি, ‘উসাইন বোল্ট না এলে গত কয়েক বছরে আমাদের খেলাটা কোথায় তলিয়ে যেত!’
শুধু ট্র্যাকের কীর্তিতেই তো বোল্ট-মহিমার শেষ নয়। তাঁর আমুদে চরিত্র, দর্শককে খেলার অংশ করে নেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে যে ‘প্যাকেজ’, সেটির তুলনা শুধু অ্যাথলেটিকসে কেন, অন্য কোনো খেলায়ও তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বোল্ট মানেই আনন্দ, বোল্ট মানেই উদযাপন, বোল্ট মানেই সোনালি সূর্যকিরণ।
নিজেই নিজেকে ‘লেজেন্ড’ বলে দিচ্ছেন, সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করছেন, ‘আই অ্যাম দ্য গ্রেটেস্ট’। জ্যামাইকার আরেক কিংবদন্তি বব মার্লে তাঁকে নিয়ে গান লিখলে কী শিরোনাম হতো প্রশ্নে অবলীলায় বলে দিচ্ছেন, ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অলটাইম।’
ট্র্যাকে স্প্রিন্টের আগে-পরে বোল্টকে দেখে থাকলেই আপনি একমত হতে বাধ্য। তবে আমি যখন লিখছি, ট্র্যাকের বোল্ট আর সংবাদ সম্মেলনের বোল্টের ছবি মিলে একটা কোলাজ হয়ে যাচ্ছে। বোল্টের সংবাদ সম্মেলন মানেই আনন্দের নির্ঝরিণী। কথায় কথায় কৌতুক, ছেলেমানুষি সব অঙ্গভঙ্গি, সাংবাদিকদের সঙ্গে খুনসুটি…। তারকাকুলে তিনি বৃহস্পতি, অথচ কথাবার্তা শুনে মনে হবে, ঠিক যেন পাশের বাসার আমুদে এক ছেলে!
নিজেকে কথায় কথায় শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা করে দেওয়াটাও যে কারণে একদমই ঔদ্ধত্যের মতো শোনায় না। মোহাম্মদ আলী একবার বলেছিলেন, ‘আমার মতো গ্রেট হলে বিনয়ী হওয়াটা খুব কঠিন।’ বোল্ট এখানেই অনন্য। নিজেই নিজেকে ‘লেজেন্ড’ বলে দিচ্ছেন, সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করছেন, ‘আই অ্যাম দ্য গ্রেটেস্ট’। জ্যামাইকার আরেক কিংবদন্তি বব মার্লে তাঁকে নিয়ে গান লিখলে কী শিরোনাম হতো প্রশ্নে অবলীলায় বলে দিচ্ছেন, ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অলটাইম।’ অথচ বোল্টকে একদমই উদ্ধত, আত্মম্ভরী বলে মনে হচ্ছে না। এই রহস্যের ব্যাখ্যা কী? ২০১৭ সালে লন্ডনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর শেষ দৌড়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্নটা করেছিলেন। বোল্ট যে উত্তরটা দিয়েছেন, তাঁকে দেখার অভিজ্ঞতা বলছে কারণ আসলে এটিই, ‘আমি এমন বলতে পারি, কারণ আমি ট্র্যাকে বারবার তা প্রমাণ করেছি। আর ট্র্যাকের বাইরে আমি একেবারেই সহজ-সরল।’
তাঁর সম্পর্কে সাংবাদিকদের কখনোই বিশেষণ খুঁজতে হয়নি। নিজেই তা সরবরাহ করে এসেছেন। লন্ডন অলিম্পিকে এসেই বলেছিলেন, এবার ‘স্প্রিন্ট ডাবল’ জিতলে আমি হব ‘কিংবদন্তি’। রিওতে এসে বললেন, এবারও যদি ট্রিপল হয়, আমি হব ‘অমর’। জীবনের শেষ মিটে নতুন একটা স্লোগান নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর রানিং শুতেও যা লেখা ছিল—ফরএভার ফাস্টেস্ট! জীবনের শেষ দৌড়ে জিততে পারেননি। শেষ করেছেন তৃতীয় হয়ে। তারপরও পুরো ক্যারিয়ারের দিকে ফিরে তাকালে ওই স্লোগানটাই সত্যি বলে মনে হয়।
ফরএভার ফাস্টেস্ট!
আমাকে যদি আরও কিছু যোগ করতে বলেন, তাহলে আমি বলব, এমন কেউ আর কখনো আসবে বলে মনে হয় না।