টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম জয়

টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম জয়

জয়ের দিনটি ধরে হিসাব করলে ঠিক চার বছর দুই মাস। ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেক আর প্রথম জয় ২০০৫ সালের প্রথম ১০ জানুয়ারি। চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই টেস্টটি ছিল বাংলাদেশের ৩৫তম। টেস্টের পঞ্চম দিন দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকে আসা সেই জয়ের ব্যবধান ২২৬ রান। ঘড়িতে তখন সময় ১২টা বেজে ৫৩ মিনিট। এই ছবিটি বাংলাদেশ দলের জয়োৎসবের। দুই টেস্টের সিরিজের পুরো স্কোয়াডের সঙ্গে যেখানে আছেন কোচ ডেভ হোয়াটমোর, ম্যানেজার এম এ লতিফ ও অন্য সব সাপোর্ট স্টাফ। প্রথম টেস্ট জয়ী দলের ১১ জনের নাম মনে হয় আলাদা করে বলা উচিত: হাবিবুল বাশার (অধিনায়ক), জাভেদ ওমর, নাফিস ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল, রাজিন সালেহ, আফতাব আহমেদ, খালেদ মাসুদ (উইকেটকিপার), মোহাম্মদ রফিক, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাপস বৈশ্য, এনামুল হক জুনিয়র।

অভিষেক টেস্টের বাংলাদেশ দল

অভিষেক টেস্টের বাংলাদেশ দল

একটু অবিশ্বাস্যই শোনাবে, সাধারণ অনেক ম্যাচেও যেখানে খেলা শুরুর আগে টিম ফটো তোলাটা এক রকম নিয়ম, সেখানে অভিষেক টেস্টের বাংলাদেশ দলের কোনো টিম ফটো নেই। উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী আসছেন, চারপাশে উৎসবের ডামাডোল, টিম ফটো তোলার কথা তাই সবাই বেমালুম ভুলে গেছেন। টিম ফটো একটা তোলা হলো বটে, তবে তা চতুর্থ দিনে টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পর। ম্যাচটা শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে সময় বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়াররা। শেষটা হয়েছে ফ্লাডলাইটের আলোয়। ছবিটাও তাই ভালো হয়নি, ক্রিকেটাররাও তখন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। তারপরও ছবিটার ঐতিহাসিক একটা মূল্য তো আছেই। ছবিতে বাঁ থেকে দাঁড়িয়ে: মোহাম্মদ রফিক, হাসিবুল হোসেন, এনামুল হক, আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম, খালেদ মাসুদ, সারওয়ার ইমরান (কোচ), আজিজ আল কায়সার (ম্যানেজার), নাঈমুর রহমান (অধিনায়ক), হাবিবুল বাশার, আল-শাহরিয়ার রোকন, গ্যাভিন বেঞ্জামিন (ফিজিও)। নিচে বসে: জাভেদ ওমর, ফাহিম মুনতাসির, মেহরাব হোসেন, শাহরিয়ার হোসেন, বিকাশ রঞ্জন দাস, রাজিন সালেহ ও মঞ্জুরুল ইসলাম। এঁদের মধ্যে এনামুল, জাভেদ, ফাহিম মুনতাসির, রাজিন সালেহ ও মঞ্জুরুল একাদশে ছিলেন না।

আইসিসি ট্রফি জয়ের পর

আইসিসি ট্রফি জয়ের পর

আইসিসি ট্রফি বাংলাদেশের জন্য যেমন এক ভালোবাসার নাম, আইসিসি ট্রফিও হয়তো বাংলাদেশকে খুব ভালো বাসে! কেন? একটু ভাবলেই কারণটা খুঁজে পেয়ে পাবেন। বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশে আইসিসি ট্রফি এমন রোমান্টিকতার নাম নয়। কারণ তো আছেই। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয়ের ওপরই আসলে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেই জয়ের হাত ধরেই ওয়ানডে স্ট্যাটাস, তিন বছরের মাথায় প্রবেশাধিকার স্বপ্নের টেস্ট দুনিয়াতেও। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এক তীর্থস্থানের মতো। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কিলাত ক্লাব মাঠ। এই মাঠেই ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের আইসিসি ট্রফি জয়। সেই জয়ের পর জাতীয় পতাকা নিয়ে ল্যাপ অব অনার। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তো আগেই মাঠটাকে এক টুকরো বাংলাদেশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। আইসিসি ট্রফি নিয়ে বাংলাদেশ দলের এই ছবি এ দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে অবশ্যই থাকবে। ছবিতে পেছনে দাঁড়ানো: সাইফুল ইসলাম, গর্ডন গ্রিনিজ (কোচ), আমিনুল ইসলাম বুলবুল (সহ-অধিনায়ক), জাওয়াদ আহমেদ (ফিজিও), আকরাম খান (অধিনায়ক), মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, আশরাফ হোসেন লিপু (ম্যানেজার), আতহার আলী খান, এনামুল হক মনি, হাসিবুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ রফিক। হাঁটু গেড়ে বসা: জাকির হোসেন, খালেদ মাহমুদ সুজন, সানোয়ার হোসেন, খালেদ মাসুদ পাইলট, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জাহাঙ্গীর আলম, আনিসুর রহমান ও জাভেদ ওমর বেলিম

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম

বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণের নিশ্চয়তা এনে দিয়েছিল ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়। সেদিন থেকেই অধীর অপেক্ষা। দুই বছর পর, ১৯৯৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের প্রথম আবির্ভাব। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেই প্রথম দল নির্বাচন জন্ম দিয়েছিল তুমুল বিতর্কের। এক যুগেরও বেশি জাতীয় দলে অপরিহার্য হয়ে থাকা সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে দল থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। পরে বিকেএসপিতে বিসিবির বিশেষ এক সভায় নির্বাচক কমিটি ভেঙে দিয়ে দলে ফেরানো হয় নান্নুকে। প্রথমে নির্বাচিত দলে থাকা ওপেনার জাহাঙ্গীর আলম ১৬তম খেলোয়াড় হিসাবে ইংল্যান্ডে গেলেও তিনি পরিণত হন প্লেয়িং মেম্বারে। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দলের এই অফিসিয়াল ফটো সেশন সে সময়ের বোর্ড সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর বাড়ির আঙিনায়। ছবিতে বাঁ থেকে দাঁড়ানো: নাঈমুর রহমান, ফারুক আহমেদ, খালেদ মাসুদ, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ রফিক, নিয়ামুর রশিদ রাহুল, মঞ্জুরুল ইসলাম, সফিউদ্দিন বাবু, হাসিবুল হোসেন, এনামুল হক, শাহরিয়ার হোসেন, মেহরাব হোসেন। চেয়ারে বসা বাঁ থেকে: মিনহাজুল আবেদীন, খালেদ মাহমুদ, গর্ডন গ্রিনিজ (কোচ), তানভীর মাজহার তান্না (ম্যানেজার), আমিনুল ইসলাম (অধিনায়ক), দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল (সমন্বয়ক), আকরাম খান, রবার্ট হান্ট (ফিজিও)।

সাফ ফুটবলে প্রথম সোনাজয়ী দল

সাফ ফুটবলে প্রথম সোনাজয়ী দল

বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থেই সোনার হরিণ হয়ে ছিল সাফ ফুটবলের সোনা। যে কেবল পালিয়ে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়, ডাক দিয়ে যায় ইঙ্গিতে....প্রথম সাতটি সাফ গেমসেই এই আক্ষেপের গল্প। শেষ পর্যন্ত তা ধরা দিয়েছিল ১৯৯৯ সালে কাঠমাণ্ডু সাফ গেমসে। তখন ফুটবলময় বাংলাদেশে এই একটা সাফল্যের জন্য যে কী আকুলতা ছিল, তরুণ প্রজন্ম তা কল্পনাও করতে পারবে না। আনন্দটাও ছিল তাই সেরকম। এই দলের কোচ ছিলেন ইরাকের পক্ষে বিশ্বকাপ খেলা সামির শাকির। আশির দশকে যিনি আবাহনীর হয়ে ঢাকা লিগে খেলে গেছেন। এমন একটা সাফল্য যাঁর হাত ধরে, বাফুফের সঙ্গে মনান্তরের কারণে সোনাজয়ী দলের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশেই ফেরেননি। ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ী বাংলাদেশ দলের প্রথম একাদশে ছিলেন: জুয়েল রানা (অধিনায়ক), আলফাজ, মনোয়ার, আনোয়ার, ফয়সাল, হাসান আল মামুন, ইকবাল, ডন, নজরুল, বিপ্লব (গোলরক্ষক), মতিউর মুন্না।

বাংলাদেশ নামে প্রথম ক্রিকেট দল

বাংলাদেশ নামে প্রথম ক্রিকেট দল

যে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন বিশ্ব জুড়ে লাল-সবুজ পতাকা ওড়ায়, চাইলে তার জন্মদিনও পালন করা যায়। ১৯৭৭ সালের ৭ জানুয়ারি বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত তখনকার ঢাকা স্টেডিয়ামে ‘বাংলাদেশ’ নামে প্রথম কোনো ক্রিকেট দল ম্যাচ খেলতে নেমেছিল। তিন দিনের সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। এর আগে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি দুই দিনের ম্যাচ খেলেছে এমসিসি, তবে তাতে স্বাগতিক দল হিসাবে খেলেছে উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল। ঢাকার ওই ম্যাচের পর যশোরে আরেকটি দুই দিনের ম্যাচে এমসিসির প্রতিপক্ষ ছিল দক্ষিণাঞ্চল দল। শুধু `বাংলাদেশ` নামে প্রথম বলেই নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমসিসির এই সফরের সূদৃরপ্রসারী তাৎপর্য আছে। আইসিসির সহযোগী সদস্য হতে বাংলাদেশের আবেদনের যৌক্তিকতা যাচাই করতেই আয়োজন সেই সফরের। এমসিসি তখনো ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এবং তাদের সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য পদ পেয়েছিল। বাংলাদেশ নামে খেলতে নামা সেই ম্যাচের ১১ জন: শামীম কবির (অধিনায়ক), রকিবুল হাসান, শফিকুল হক হীরা, মাঈনুল হক মাঈনু, এ এস এম ফারুক, দৌলতুজ্জামান, সৈয়দ আশরাফুল হক, ইউসুফ রহমান বাবু, ওমর খালেদ রুমি, দীপু রায় চৌধুরী, নজরুল কাদের লিন্টু।

×