‘আমার আর কিছু প্রমাণ করার নেই’
তৃতীয় অলিম্পিকে ‘স্প্রিন্ট ডাবল’ জেতার পর বোল্ট
উৎপল শুভ্র
২০ জুলাই ২০২১
উসাইন বোল্ট টানা তৃতীয় অলিম্পিকে ‘স্প্রিন্ট ডাবল’ জেতার পর নিজেকে ‘গ্রেটেস্ট’ বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন। আবার কিছু বিচারের ভার তুলে দিয়েছেন সাংবাদিকদের হাতে। বাংলাদেশে শুক্রবার সকাল হয়ে যাওয়া রিওর বৃহস্পতিবার রাতে ২০০ মিটার জয়ের পর মিক্সড জোন ও সংবাদ সম্মেলনে
প্রথম প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০১৬। প্রথম আলো
উসাইন বোল্ট টানা তৃতীয় অলিম্পিকে ‘স্প্রিন্ট ডাবল’ জেতার পর নিজেকে ‘গ্রেটেস্ট’ বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন। আবার কিছু বিচারের ভার তুলে দিয়েছেন সাংবাদিকদের হাতে। বাংলাদেশে শুক্রবার সকাল হয়ে যাওয়া রিওর বৃহস্পতিবার রাতে ২০০ মিটার জয়ের পর মিক্সড জোন ও সংবাদ সম্মেলনে উসাইন বোল্টের কথা শুনে নির্বাচিত অংশ তুলে ধরেছেন উৎপল শুভ্র
যেমন লাগছে
ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আটবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন! আমার আর কিছু করার বাকি নেই। আমি বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছি যে আমিই গ্রেটেস্ট। এ জন্যই আমি এখানে এসেছিলাম। এ কারণেই এটা আমার শেষ অলিম্পিক। কারণ আমার আর কিছু প্রমাণ করার নেই।
একটু আগে শেষ হওয়া ২০০ মিটার নিয়ে
আমি আমার সময় নিয়ে খুশি নই। বিশ্ব রেকর্ড করে ফেললেও আপনি চাইবেন আরও দ্রুত দৌড়াতে। কিন্তু আজ আমার পা দুটি যেন বলল, তারা আর পারছে না। আমি এত ক্লান্ত ছিলাম যে শেষ দিকে আর পারছিলামই না। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমি জিতেছি। সোনার পদকটাই তো আসল কথা, তাই না?
সেমিফাইনালে তাঁকে ক্লান্ত করতে আন্দ্রে দে গ্রাসের কৌশল নিয়ে
ও নিজেই তো ক্লান্ত হয়ে গেছে। ও বাচ্চা ছেলে। দারুণ প্রতিভা। আমাকে খুব করে হারাতে চেয়েছে। এ জন্য ওকে আমি সম্মান করি। তবে আমি তরুণদের সব সময় বলি, ‘তোমরা আমাকে হারাতেই পারবে না।’ পিচ্চিপাচ্চারা আমাকে হারাবে, এটা কেমন কথা!
সর্বশেষ হেরেছেন
মনে হয় রোমে গ্যাটলিনের কাছে। ২০০ মিটার? ট্রায়ালে ব্লেকের কাছে (২০১২)। হারা মানেই কিন্তু শেখার সুযোগ। পরাজয় নতুন কিছু শেখার অভিজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু নয়। আমি তো সব সময়ই তা থেকে শিখি।
ডোপ-কলঙ্কহীন পরিচ্ছন্ন অ্যাথলেট বলে বাড়তি তাৎপর্য
এটা অনেক বড় ব্যাপার। এ কারণেই লোকে বলে, আমি খেলাটার জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ। যাতে উঠে আসতে থাকা তরুণ প্রজন্ম দেখতে পায়, সফল হতে শুধু পরিশ্রম আর দৃঢ়প্রতিজ্ঞা লাগে। আমি শুধু একটা কথাই বলব, নিজেকে আরও নিংড়ে দাও, নিজের মধ্যে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস জাগাও।
অলিম্পিকে শেষ একক দৌড়ের অনুভূতি
অবশ্যই খুব আবেগের ব্যাপার ছিল। তবে এই মুহূর্তে আমি এটা নিয়ে ভাবতে চাই না। আগামীকালের ৪X১০০ মিটার রিলে নিয়েই ভাবছি। দেশে ফেরার পর হয়তো এসব ভেবে আবেগাক্রান্ত হব।
সমাপ্তিরেখা পেরোনোর পর যা মনে হয়েছে
আমি সবাইকে গুডবাই বলেছি। অলিম্পিকে এটাই আমার শেষ একক দৌড়। রিলেতে কী হবে, এটা কেউ বলতে পারে না। আমি তাই এখানেই
গুডবাই বলে দিতে চেয়েছি।
এই অলিম্পিকের পর
আমি অবশ্যই লন্ডনে (২০১৭ সালে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে) ১০০ মিটার ও রিলেতে দৌড়াব। আমি জানি, কোচ আমাকে ২০০ মিটারও দৌড়াতে বলবে। দেখি, কী হয়!
অলিম্পিকে শুরুতে যে স্বপ্ন ছিল
২০০৪ সালে এথেন্সে তো যাওয়ার জন্যই গিয়েছিলাম। প্রথম রাউন্ডও পেরোতে পারিনি। তখন আমার চাওয়া ছিল একটাই, একবার যেন ২০০ মিটার দৌড়াতে পারি আর একটা সোনা জিততে পারি। এটা মনে রাখলে ৮টা সোনার পদক অনেক কিছু।
আলী ও পেলের সঙ্গে একই কাতারে কি না
এটার জন্যই তো এত বছর পরিশ্রম করলাম। আমি সেরা হওয়ার জন্য, গ্রেটদের কাতারে যাওয়ার জন্য কষ্ট করেছি। এই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করার অর্থই হলো, আমার সেই কষ্ট সার্থক হয়েছে। আমি অলিম্পিক শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখতে চাই, মিডিয়া ও ফ্যানরা আমাকে ওই দলে রাখে কি না। আমার মনে হয়, ওঁদের পর্যায়ে যেতে আমার আর একটা ধাপই পেরোতে বাকি।
সর্বকালের সেরা অলিম্পিয়ান ফেলপস না তিনি
আমি বলতে পারব না। আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি খেলার লোক। এই বিচারের ভারটা তাই সাংবাদিকদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া ভালো। সে সন্দেহাতীতভাবে নিজেকে সেরাদের একজন হিসেবে প্রমাণ করেছে। এত বছর ধরে এত এত পদক জিতেছে। সেটিও আধিপত্য ছড়িয়ে জিতেছে। ফিরে এসেছে, এসে আবারও প্রমাণ করেছে, সে সেরাদের একজন। এ জন্য আমি তাঁকে সম্মান করি। আমরা দুজন নিজ নিজ ক্ষেত্রে গ্রেট।
অবসর নেওয়ার পর যা করবেন
আমি খেলাটার সঙ্গেই থাকতে চাই। খেলাটার আশপাশেই থাকতে চাই। তবে কোচ হিসেবে অবশ্যই নয়। আমি জানি না কী করব, অকারণে আমাকে টেনশনে ফেলছেন।