শূন্য রানে ৪ উইকেট, তা-ও আবার টেস্টে!
উৎপল শুভ্র
৭ জুন ২০২১
পাড়ার ক্রিকেটে হয়তো অহরহই হয়। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তো অনেকবারই হয়েছে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে শূন্য রানে প্রথম চার উইকেট পড়ে যাওয়া! এই অবিশ্বাস্য ঘটনা একবারই ঘটেছে। যেটির ভুক্তভোগী ভারত।
দুঃস্বপ্নের মতো শুরু। ক্রিকেট-রিপোর্টে এই কথাটা নিশ্চয়ই অনেকবারই পড়েছেন। তবে 'দুঃস্বপ্নের মতো শুরু' বলতে আসলে কী বোঝায়, তা জানতে আপনাকে ১৯৫২ সালের ইংল্যান্ড সফরে যাওয়া ভারতীয় দলের কারও সঙ্গে কথা বলতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে শূন্য রানে ৪ উইকেট (ভুল পড়েননি, শূন্য রানে ৪ উইকেটই!) হারিয়ে ফেলার 'রেকর্ড' যে শুধু সেই দলেরই আছে।
এই দুঃস্বপ্নের সঙ্গে বিজয় হাজারের ভারতীয় দলের পরিচয় লিডসের হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে। রানের ঘরে শূন্য, আর উইকেটের ঘরে ৪– ওপরের ছবিটি টেস্ট ইতিহাসে অনন্য সেই স্কোরবোর্ডের। পত্রপত্রিকায় সবচেয়ে বেশিবার ছাপা হওয়া স্কোরকার্ডও সম্ভবত এটিই। ইনিংসের ১৪ বলের মধ্যে স্কোরবোর্ডকে এমন চেহারা দেওয়ার মূলে ২১ বছর বয়সী এক তরুণ, ওই টেস্টেই যাঁর অভিষেক। নাম ফ্রেড ট্রুম্যান। টেস্ট ক্রিকেটে তিন শ উইকেট নেওয়া প্রথম বোলার।
ওই চার উইকেটের ৩টিই নিয়েছিলেন ট্রুম্যান, টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর প্রথম আট বলেই! ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের শবযাত্রার শুরু পংকজ রায়কে দিয়ে। নতুন বলই হাতে পেয়েছিলেন ট্রুম্যান, ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই হুক করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন পংকজ। পরের ওভারে অ্যালেক বেডসারের শিকার দত্তাজিরাও গায়কোয়াড় (অংশুমান গায়কোয়াড়ের বাবা)। দ্বিতীয় ওভার করতে এসে প্রথম দুই বলেই মাধব মন্ত্রী ও বিজয় মাঞ্জরেকারকে বোল্ড করে স্কোরবোর্ডের এমন চেহারা বানিয়ে দেন ট্রুম্যান।
ট্রুম্যানের হ্যাটট্রিক এবং শূন্য রানে ৫ উইকেটও হয়ে যাচ্ছিল প্রায়—'হ্যাটট্রিক বল'টি কীভাবে ঠেকিয়েছিলেন, অধিনায়ক বিজয় হাজারে নিজেও তা বুঝতে পেরেছিলেন কি না সন্দেহ আছে। দুঃস্বপ্নের মতো এমন শুরুর পর ভারতের ইনিংস কত রানে শেষ হয়েছিল বলে আপনার ধারণা? ভারত করেছিল ১৬৫। শূন্য রানে ৪ উইকেটের পর এটাকে তো পাহাড়প্রমাণ রানই বলতে হয়।