‘গ্রেটদের সারিতে জায়গা পেতে চাই’
উৎপল শুভ্র
১৪ মে ২০২১
পরিণত সাকলায়েন মুশতাককে সবাই দেখেছেন। দেখেছেন `দুসরা` আবিষ্কার করে অফ স্পিন বোলিংকেই চিরদিনের জন্য বদলে দিতে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কেমন ছিলেন পাকিস্তানের এই অফ স্পিনার? কী স্বপ্ন দেখতেন, কার মতো হতে চাইতেন...এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর আছে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সাকলায়েনের এই সাক্ষাৎকারে। তাঁর যে লক্ষ্যের কথা দিয়ে হেডিং করা হয়েছে, তা যে পূরণ হয়েছে, তা তো আর বলার প্রয়োজন পড়ছে না।
প্রথম প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ১৯৯৭। ভোরের কাগজ।
তাঁর বয়স মাত্র ২০। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন দেড় বছরের সামান্য বেশি। এর মধ্যেই বিশ্বের সেরা অফ স্পিনার হিসেবে তাঁকে মেনে নিয়েছেন মোটামুটি সবাই। যদিও সাকলায়েন মুশতাক মনে করেন, তিনি এখনও ক্রিকেটের এবিসি নিয়েই পড়ে আছেন। তাঁকে আরও অনেক কিছু শিখতে হবে। ওয়ানডেতে একটি হ্যাটট্রিক আছে তাঁর, তার চেয়েও বড় গলায় বলার মতো একটি বিশ্বরেকর্ডও আছে। সবচেয়ে কম বয়সে ('অফিসিয়াল' বয়সকেই বিবেচনায় নিয়ে রেকর্ডটা এখন রশিদ খানের), সবচেয়ে কম ম্যাচে (মিচেল স্টার্কের হাত ঘুরে রেকর্ডটা এখন রশিদ খানের দখলে) এবং সবচেয়ে কম সময়ে ওয়ানডেতে এক শ উইকেট নিয়েছেন সাকলায়েন মুশতাক। এজন্য উইকেট প্রতি খরচ তাঁর ২০ রানেরও কম, অথচ নিয়মিত স্লগ ওভারে বোলিং করেন । ২০ বছর বয়সী কোনো অফ স্পিনারের মধ্যে এর আগে এত ভ্যারিয়েশন কেউ দেখেনি, তাই ক্রিকেট ইতিহাসে গ্রেট বোলারদের সারিতে স্থান পাওয়ার যে স্বপ্ন দেখেন সাকলায়েন, তা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কলকাতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইন্ডিপেন্ডেন্স দ্বিতীয় ফাইনালের আগের রাতে (২৬ মে, ১৯৯৭) সাকলায়েন মুশতাকের এই সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম তাঁর হোটেল রুমে।
উৎপল শুভ্র: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বছর দেড়েকের সামান্য বেশি কেটেছে আপনার। এই সময়টার একটা সারসংক্ষেপ যদি করতে বলি...
সাকলায়েন মুশতাক: শুরুটা খারাপ হয়নি। আমি আল্লাহতায়ালার কাছে কৃতজ্ঞ যে, এই সময়ে আমি নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। এর মধ্যে ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বয়সে এক শ উইকেট পাওয়ার একটা বিশ্ব রেকর্ড করেছি। এই রেকর্ডটি করতে পেরে আমি খুব খুশি। যখন আমি শুরু করেছিলাম, সেই সময়ের তুলনায় এখন আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি জানি, আমাকে আরও অনেক কিছু শিখতে হবে, এখনও আমার শেখার সময় চলছে। ক্রিকেট আমার জীবন, ক্রিকেটের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। তবে আমার একটাই স্বপ্ন, একদিন যেন 'গ্রেট' হিসেবে আমার নাম বলে সবাই। এজন্য আরও অনেক পরিশ্রম করতে হবে, এটা আমি জানি। তা করতে আমি প্রস্তুত। যেদিন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, তখনই ঠিক করে নিয়েছি ক্রিকেটের জন্য যা কিছু করতে হয়, তা আমি করব। বলতে পারেন, আমার জীবন ক্রিকেটের জন্য উৎসর্গীকৃত।
শুভ্র: আপনার শুরুর দিনগুলোর কথা বলুন। কীভাবে ক্রিকেটে জড়ালেন?
সাকলায়েন: আমার বড় দুই ভাই ক্রিকেট খেলতেন। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলেছেন জুলকারনাইন মুশতাক ও সাদরাইন মুশতাক। তাঁদের খেলা দেখেই আমি ক্রিকেটের ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হই। আমার পরিবারও আমাকে সব সময়ই সমর্থন দিয়ে এসেছে। আমার বাবা মুশতাক আহমেদ সরকারি চাকুরে। তিনি কখনোই আমাকে খেলতে নিষেধ করেননি। শুধু বলেছেন, খেলার সঙ্গে সঙ্গে পড়াশুনাও চালিয়ে যেও। প্রথমে তো শখেই খেলতাম। কিছুদিনের মধ্যেই খুব ভালো লেগে গেল, এরপর থেকে ক্রিকেটই আমার ধ্যানজ্ঞান। প্রথমে ক্লাব ক্রিকেটে শুরু করেছিলাম। এরপর কলেজ টিমে খেলেছি। লাহোর আন্ডার নাইনটিন টিমের পক্ষে আমার পারফরম্যান্স ছিল খুবই ভালো। এরপর ইউনিভার্সিটির পক্ষে এক বছর খেলার পর আমি পিআইএ দলে সুযোগ পাই। এক বছর ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলার পরই পাকিস্তান ‘এ’ দলে ডাক পাই, এরপর বছর না ঘুরতেই পাকিস্তান দলে।
শুভ্র: পাকিস্তান ‘এ’ দলের পক্ষে আপনি ১৯৯৪ সালে ঢাকায় সার্ক ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন। তখনই আপনার সঙ্গে আমার পরিচয়। কী মনে আছে সেই টুর্নামেন্টের?
সাকলায়েন: হ্যাঁ, সেই স্মৃতি আলাদাভাবে মনে আছে আমার। কারণ ওটাই ছিল আমার প্রথম ট্যুর। তাছাড়া ওই টুর্নামেন্টেই প্রথম অনেক দর্শকের সমানে খেলার অভিজ্ঞতা হয় আমার। মাঠে এত দর্শক থাকলে বাড়তি একটা চাপ থাকে। সেই চাপ সামলে কীভাবে খেলতে হয়, তা আমি তখনই শিখতে শুরু করি।
শুভ্র: প্রথম পাকিস্তান দলে ডাক পাওয়ার অনুভূতিটা কেমন ছিল?
সাকলায়েন: খুশিতে প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। আমার বাড়িতে প্রায় উৎসবের মতো একটা পরিবেশ এসে গিয়েছিল। আমি খবরটা পেয়েছিলাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটা সাইড ম্যাচ খেলার সময়। সে ম্যাচে আমি ৭ উইকেট নিয়েছিলাম। এরপরই কে যেন এসে বলল, রেডিওতে প্রথম টেস্টের দল ঘোষণা করা হয়েছে, আমি দলে আছি। পরে সেদিনই আমাদের কোচ মুশতাক মোহাম্মদ জানান খবরটা।
শুভ্র: সিঙ্গাপুরে সিঙ্গার ট্রফির (১৯৯৬ সালের মার্চে) সময় যখন আপনার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, প্রিয় অফ স্পিনার হিসেবে মোহাম্মদ নাজির ও তৌসিফ আহমেদের কথা বলেছিলেন। তাঁরাই কি আপনার ‘আইডল’?
সাকলায়েন: বলতে পারেন তা-ই। নাজির জুনিয়র ও তৌসিফ আহমেদ দারুণ স্পিনার ছিলেন। যদিও আমি তাঁদের খেলা খুব বেশি দেখিনি। তবে আমি যখন ছোট, তখন তাঁরা পাকিস্তানের পক্ষে খেলেন। তখনই নাম দুটি মনে গেঁথে গিয়েছিল। স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম, একদিন আমিও তাঁদের মতো পাকিস্তান দলে খেলব। সিঙ্গাপুরে আমি আপনাকে আমার ক্লাবের দুজন স্পিনারের কথাও বলেছিলাম। তাঁদের নাম ইসরার আহমেদ ও আহমেদ হাসান। আমার আদর্শ বলতে পারেন ওঁরাই। ক্লাবের পক্ষে সব অবস্থাতেই দারুণ পারফরম্যান্স তাঁদের। এঁরা দুজন আমাকে খুব সাহায্যও করেছেন। শুরু থেকেই বলেছেন, তোমার প্রতিভা আছে, চালিয়ে যাও।
শুভ্র: এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে স্মরণীয় পারফরম্যান্স হিসেবে কোনটিকে বেছে নেবেন?
সাকলায়েন: একটা নয়, দুটির কথা বলব। একটি হ্যাটট্রিক করেছি আমি, আর সবচেয়ে কম সময়ে ও কম বয়সে এক শ উইকেট নিয়েছি। দুটোই আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।
শুভ্র: হ্যাটট্রিকের তৃতীয় বলটি করার আগে কী ভাবছিলেন?
সাকলায়েন: আমি শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম, দরূদ শরীফ পড়ছিলাম। আমার মন বলছিল, হয়ে যাবে, হয়ে যাবে। হয়তো আল্লাহই আমাকে এতটা আত্মবিশ্বাস যুগিয়েচিলেন। হ্যাটট্রিক হওয়ার পর এতই খুশি হয়েছিলাম যে, চতুর্থ বলটিতে আর মনঃসংযোগ ঠিক রাখতে পারিনি। তাই সেই বলটিতে কিছু রান হয়ে যায়। তবে পরের বলে আমি আবার উইকেট পাই। অর্থাৎ পাঁচ বলের মধ্যে চারটি উইকেট পেয়েছিলাম আমি। (সংযোজন: ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেশোয়ারে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই আরেকটি হ্যাটট্রিক করে ওয়াসিম আকরামের পর দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে দুটি হ্যাটট্রিকের মালিক হয়েছিলেন সাকলায়েন)।
শুভ্র: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনার সবচেয়ে স্মরণীয় উইকেট কোনটি, বা এমন কোনো উইকেট, যা খুব আনন্দ দিয়েছিল?
সাকলায়েন: অস্ট্রেলিয়াতে স্টিভ ওয়াহকে আউট করে খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। স্টিভ ওয়াহ বারবার অন সাইডে খেলছিল। তাই আমি একটি বল করি, যা বেরিয়ে যাচ্ছিল। স্টিভ ওয়াহ সেই বলটিকেও অন সাইডে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেয়। এই আউটটি খুবই মজা দিয়েছিল আমাকে। (সাকলায়েন যে আউটটির কথা বলছেন, তা ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে সিবি ওয়ানডে সিরিজে অ্যাডিলেডে)।
শুভ্র: ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া এই বলটিই ('দুসরা' নামটা তখনো চালু হয়নি) তো আপনাকে এত মারাত্মক বোলারে পরিণত করেছে। এটি কীভাবে শিখলেন?
সাকলায়েন: এটা প্রকৃতিদত্ত। আমি ছোটবেলা থেকেই এটি করতে পারি। এরপর যখন এর গুরুত্বটা বুঝতে পারলাম, তখন থেকে প্র্যাকটিস করে করে এখন এটির ওপর আমার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এসে গেছে। আমি যখন ইচ্ছে এই বলটা করতে পারি।
শুভ্র: এটাকেই কি আপনার বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় অস্ত্র মনে করেন?
সাকলায়েন: তা বলতে পারেন।
শুভ্র: ১৯৯৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে শ্রীলঙ্কা দলের বর্তমান কোচ ব্রুস ইয়ার্ডলি আপনাকে কী যেন টিপস দিয়েছিলেন। এক ম্যাচে আপনি উইকেট পাওয়ার পর কমেন্ট্রি বক্সে লাফিয়ে উঠেছিলেন ইয়ার্ডলি... কী টিপস দিয়েছিলেন তিনি?
সাকলায়েন: আমার সাফল্যে নিশ্চয়ই তিনি খুশি হয়েছিলেন। উনি আমাকে বলেছিলেন, বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে ওভার দ্য উইকেট বোলিং না করে রাউন্ড দ্য উইকেটে বোলিং করো। তাহলে বল ড্রিফট করাতে পারবে। এ ছাড়া ওনার কথাবার্তাও আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিল। বলেছিলেন, যা করছ সব ঠিক আছে। মনঃসংযোগটা ঠিক রাখলেই হবে। ক'দিন আগে বিষেণ সিং বেদিও একই কথা বলেছেন।
শুভ্র: সেই অস্ট্রেলিয়া সফরেই ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে খেলার পর ডিন জোন্সও আপনার খুব প্রশংসা করেছিলেন...
সাকলায়েন: ম্যাচ চলার সময়ই ডিন জোন্স আমাকে বলেছিলেন, ‘তোমার মতো অফ স্পিনার আগে দেখিনি আমি।' উৎসাহ দিয়েছিলেন। জোন্সের কথাই দারুণ খুশি হয়েছিলাম। তখন আমার মাত্র শুরু, তাই জোন্সের মতো স্পিনের বিপক্ষে এত ভালো একজন ব্যাটসম্যানের প্রশংসা পাওয়া ছিল দারুণ ব্যাপার।
শুভ্র: স্পিনের বিপক্ষে ভালো ব্যাটসম্যানদের প্রসঙ্গেই আসি। বর্তমান ক্রিকেটে কাদের নাম করবেন আপনি?
সাকলায়েন: শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা, অরবিন্দ ডি সিলভা, মার্ক ওয়াহ ও স্টিভ ওয়াহ।
শুভ্র: মোটামুটি প্রথম সারির সব ব্যাটসম্যানের নামই তো বলে ফেললেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাকে বল করা?
সাকলায়েন: আমি এভাবে ভাবিই না। বোলিং করার সময় আমি যদি ভাবি, যার বিপক্ষে বোলিং করছি, তাকে বল করা খুব কঠিন, তাহলে তো ভালো করতে পারব না। আমি বোলিংয়ের প্রতিটি মূহুর্তই উপভোগ করি। কঠিন-সহজ কোনো ব্যাপার না, স্পিনের বিপক্ষে যারা ভালো ব্যাটসম্যান, আমি তাদের নাম বললাম। কঠিন ব্যাটসম্যান ভাবলে তো টেনশন শুরু হয়ে যাবে আগেই। আর টেনশন নিয়ে ক্রিকেট খেলা যায় না।
শুভ্র: বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে বোলিং করে কি আলাদা আনন্দ পান?
সাকলায়েন: বাঁহাতি-ডানহাতি কোনো সমস্যা মনে হয় না আমার। আর আনন্দের কথা যদি বলেন, বোলিং জিনিসটাই বড় আনন্দ দেয় আমাকে। বোলিংয়ে কখনও ক্লান্তি নেই আমার।
শুভ্র: একটা ব্যাপারে সবাই একমত যে, ক্রিকেট ইতিহাসে, বিশ বছর বয়সে আপনার মতো বৈচিত্র্য আর কোনো অফ স্পিনার দেখাতে পারেনি। স্পিনাররা তো বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিণত হয়। বোলিংয়ে আর কী যোগ করতে চান আপনি?
সাকলায়েন: মানুষ আমাকে ভালো বলছে। সেটা শুনতে ভালোই লাগে। তবে আমি নিজেকে এখনও ছাত্রই মনে করি। মনে করি, এখনও আমার অনেক কিছু শেখার বাকি। এখনও আমি ক্রিকেটের এবিসিতেই পড়ে আছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি আরও অনেক কিছু শিখব। অনেক বড় বোলার হতে চাই আমি।
নিজেকে এখনও ছাত্রই মনে করি। মনে করি, এখনও আমার অনেক কিছু শেখার বাকি। এখনও আমি ক্রিকেটের এবিসিতেই পড়ে আছি।
শুভ্র: বিশ্বের সেরা অফ স্পিনার হিসেবে আপনার সঙ্গে মুরালিধরনের নামও উচ্চারিত হয়। মুরালিধরন সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
সাকলায়েন: মুরালি খুব ভালো বোলার। সে শ্রীলঙ্কার পক্ষে নিয়মিত উইকেট নিচ্ছে। ভালো বোলার না হলে কি এটা সম্ভব হতো?
শুভ্র: নির্দিষ্ট কোনো টার্গেট আছে, যা অর্জন করার স্বপ্ন দেখেন?
সাকলায়েন: টার্গেট অনেক বড়। বোলার হিসেবে আমি গ্রেটদের সারিতে জায়গা পেতে চাই। আমি বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হতে চাই, সেরা ফিল্ডার হতে চাই। জানি, এই টার্গেট অর্জন করতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, আরও অনেক কিছু শিখতে হবে। আমার হাতে সময়ের অভাব নেই এবং আমি পরিশ্রম করতেও ভয় পাই না। আমি বিশ্বাস করি, একদিন আমার পক্ষে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হওয়া সম্ভব। আমি বর্তমানে ব্যাটিং প্র্যাকটিসে অনেক বেশি সময় দিচ্ছি। আগামীতে এর ফল মিলবে বলে আমি আশাবাদী।
শুভ্র: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জীবনে এরই মধ্যে অনেক প্রাপ্তিযোগ। এর মধ্যে কোনটিকে সবচেয়ে বড় মনে করেন?
সাকলায়েন: এই যে রাস্তায় বেরোলে লোকে আমাকে চিনতে পারে,এগিয়ে এসে কথা বলে-- এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া মনে হয়। আমি বাকি সবার মতোই সাধারণ এক মানুষ। শুধু ক্রিকেটের জন্য আমাকে আলাদা করে চিনছে সবাই। এজন্য ক্রিকেটের কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। ক্রিকেটকে আমি তাই সম্মানের চোখে দেখি। এই সবকিছু তো পেয়েছি ক্রিকেটের জন্যই।