‘অ্যামব্রোস-ওয়ালশের সঙ্গে আমি থাকলেও যা হয়েছে, তা-ই হতো’

উৎপল শুভ্র

১৮ এপ্রিল ২০২১

‘অ্যামব্রোস-ওয়ালশের সঙ্গে আমি থাকলেও যা হয়েছে, তা-ই হতো’

ইয়ান বিশপ

এখন সবাই তাঁকে চেনে টেলিভিশন কমেন্টেটর হিসাবে। অথচ ফাস্ট বোলার ইয়ান বিশপের শুরুটা ছিল সর্বকালের সেরাদের একজন হওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। ইনজুরি তা হতে দেয়নি। ইয়ান বিশপের ক্যারিয়ারের অন্য নাম তাই দীর্ঘশ্বাসও। সেই দুঃসহ সময়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত সেই পেস কোয়ার্টেট, লারা-টেন্ডুলকার...এমন আরও অনেক বিষয় উঠে এসেছিল গ্রেনাডায় নেওয়া এই ইন্টারভিউয়ে।

প্রথম প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০০৯। প্রথম আলো।

উৎপল শুভ্র: ৪৩ টেস্টে ১৬১ উইকেট—এটা ইয়ান বিশপের অর্ধেকটাই শুধু বলে। বাকি অর্ধেকটাতে আক্ষেপ—আরও কত কী হতে পারত! আপনি, ইয়ান বিশপ নিজেও কি ক্যারিয়ারটাকে ওভাবেই দেখেন?

ইয়ান বিশপ: হ্যাঁ, ওভাবে তো দেখাই যায়। ইনজুরিটা না হলে আমার ক্যারিয়ার হয়তো আরও দীর্ঘ হতো। তবে কী করার আছে, বলুন? এ নিয়ে এখন আর অনুতাপও করি না। ৪৩টা টেস্ট তো খেলেছি, এটা ভেবেই খুশি থাকতে চাই।

শুভ্র: এখন হয়তো এটা বলা সহজ। কিন্তু তখন তো এটা মেনে নেওয়া নিশ্চয়ই কঠিন হয়েছে। এত প্রতিশ্রুতি নিয়ে শুরু করেছেন, সর্বকালের সেরাদের দলে ঢুকে যাওয়ার হাতছানি। কতটা কঠিন ছিল নিষ্ঠুর বাস্তবটা মেনে নেওয়া?

বিশপ: ইনজুরিটা প্রথম দেখা দিল ১৯৯১ সালে। এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন ছিল। তখন আমি তরুণ... চোখে অনেক স্বপ্ন... কত কিছু অর্জনের লক্ষ্য...। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, তখন বেশির ভাগ মানুষ স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ব্যাপারটা ভালো বুঝতই না। তখন পর্যন্ত ক্রিকেটে এই ইনজুরির সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ ছিলেন ডেনিস লিলি। কেউই তাই নিশ্চিত ছিল না, আমি এক বছর না দুই বছর না কত দিন পর ফিরতে পারব! কী যে দিন গেছে, অনেক সময় কেঁদেছিও। 

শুভ্র: ডেনিস লিলির কথাটা আমিই তুলতাম। লিলি তো ভালোমতোই ফিরেছিলেন। তাঁর পরামর্শ নেননি?

বিশপ: নিয়েছিলাম। ১৯৯২ না ’৯৩-য়ে ইনজুরিটা আবার দেখা দিল। আমরা তখন অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট খেলছি। তখন ডেনিসের সঙ্গে আমার একটা নেট সেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বোলিং করার সময় শরীর-কব্জি এসবের অবস্থান নিয়ে ডেনিসের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

শুভ্র: ওই ইনজুরির কারণে তো আপনাকে অ্যাকশনও বদলাতে হয়েছিল। সাইড অন থেকে ওপেন চেস্টেড হয়ে বলে গতিও হারালেন। যে গতি দিয়েই চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে, সেটির ব্যাপারে আপস করা নিশ্চয়ই কঠিন ছিল, তাই না?

বিশপ: আসলে আমার শরীরটাই ফাস্ট বোলিংয়ের উপযুক্ত ছিল না। নানা রকম চেষ্টা করেছি। ছন্দ, বলের দিক ঠিক রাখতে প্রতিদিনই নতুন নতুনভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। একসময় এমন একটা অবস্থা হলো, আমি জানতাম কী করতে হবে, কিন্তু তা করতে পারতাম না।

এমন ইয়ান বিশপকে দেখা যায়নি খুব বেশি দিন। ছবি: গেটি ইমেজেস

শুভ্র: শেষপর্যন্ত হার মেনে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুহূর্তটা কতটা কঠিন ছিল?

বিশপ: চিন্তাটা প্রথম মাথায় এসেছিল ১৯৯৭ সালে, এই ক্যারাবিয়ানেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের সময়। কিন্তু তখন আমি অমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সাহসী ছিলাম না। চাইলে আমি আরও এক বছর হয়তো খেলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমি নিজের জন্য যে মানদণ্ড ঠিক করেছিলাম, সেটি করতে না পারায় খেলে যাওয়ার কোনো যুক্তি দেখিনি।

শুভ্র: ব্যথা সইতে হয়েছে অনেক?

বিশপ: শারীরিক ব্যথাটা তেমন ব্যাপার ছিল না। একটা ব্যথা তো সব সময়ই অনুভব করতাম, তবে সেটি সহ্য করা যেত। কিন্তু আমি যেভাবে পারফর্ম করতে চাই, সেভাবে করতে না পারার মানসিক যন্ত্রণাটা অসহ্য লাগত। শারীরিক ব্যথার চেয়ে ওই ব্যথা অনেক বেশি কষ্টদায়ক।

শুভ্র: অনেকেই এমন বলে, আপনার ইনজুরিটা না হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাজত্ব এত তাড়াতাড়ি শেষ হতো না। অ্যামব্রোস-ওয়ালশ দুজনই তো লড়ে গেলেন সারা জীবন, তৃতীয় কাউকে পেলেন না!

বিশপ: এটা বলা কঠিন যে আমার ইনজুরি না হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাজত্বটা আরও কত দিন বজায় থাকত। তবে আমি যেটা বুঝি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমস্যাটা তিন ফাস্ট বোলারের চেয়ে আরও গভীর কিছু। এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সামগ্রিক সমস্যা। অ্যামব্রোস ও ওয়ালশের সঙ্গে পুরো ফিট আমি থাকলে হয়তো আরও কিছুদিন আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব থাকত। তবে যা হয়েছে, কদিন আগে-পরে তা হতোই হতো।

মার্শাল, ওয়ালশ ও অ্যামব্রোসের সঙ্গে ইয়ান বিশপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখনো রাজত্ব করছে বিশ্ব ক্রিকেটে। ছবি: দ্য হিন্দু

শুভ্র: আপনি যখন উঠে আসছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তো কালজয়ী সব ফাস্ট বোলার। আদর্শ মানতেন কাউকে?

বিশপ: অনেককেই। আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা বুঝতে শুরু করলাম, বিশ্ব ক্রিকেটে তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাধিপত্য। জোয়েল গার্নার, মাইকেল হোল্ডিং, ম্যালকম মার্শাল...সামনে কতজন! এদের প্রত্যেকের সঙ্গেই আমার যোগাযোগ ছিল। ১৯৮৭ সালে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলতে শুরু করার সময়ই জোয়েলের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর ১৯৮৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে খেলা শুরু করার পর ম্যালকমের সঙ্গে বোলিং নিয়ে অনেক আলোচনা হতো। ডার্বিশায়ারে যখন খেলতে গেলাম, তখন পেলাম হোল্ডিংকে। আমার ওপর এদের প্রত্যেকেরই প্রভাব ছিল।

শুভ্র: শুরুতে তো জোয়েল গার্নারের সঙ্গে আপনার অনেক তুলনা হয়েছে।

বিশপ: মানুষের যা মনে হয়েছে, বলেছে। তবে আমি আলাদা কারও কথা বলব না। ওই পেস কোয়ার্টেটের কাছ থেকে এত কিছু শেখার ছিল...শিখেছিও। অ্যান্ডি রবার্টসের সঙ্গে প্রথম দেখা তো সেই ১৯৮৫-৮৬ সালে, যখন তিনি ত্রিনিদাদে কোচিং করাতে গিয়েছিলেন। কার সঙ্গে আমার তুলনা হয়েছে এটা জানি না। আমি শুধু জানি, ওদের প্রত্যেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের গর্ব আর স্বাতন্ত্র্যের প্রতীক। পরের প্রজন্মের প্রেরণা।

শুভ্র: এদের মধ্যে বা এদের বাইরে কাকে আপনি আদর্শ ফাস্ট বোলার বলে মানেন?

বিশপ: আমি গ্রেটেস্ট বলব ম্যালকম মার্শালকে। ওর সঙ্গে খেলেছি, খুব কাছ থেকে দেখেছি। স্যার রিচার্ড হ্যাডলি আরেকজন, যদিও তাঁকে খুব বেশি দেখিনি। আমার কাছে ম্যালকম ছিল সম্পূর্ণ এক ফাস্ট বোলার। গতি ছিল, নিয়ন্ত্রণ ছিল, বোলিং বুদ্ধিমত্তায় তো ওর ধারেকাছে কাউকে পাইনি। কোন ঘটনায় ম্যালকমকে প্রথম চিনেছিলাম, সেটাও মনে আছে। অস্ট্রেলিয়ায় খেলছিলাম, আমি মিড অফে ফিল্ডিং করছি। ম্যালকম আমাকে বলল একটু বাঁ দিকে সরে দাঁড়াতে। ব্যাটসম্যানের টেকনিক পর্যবেক্ষণ করে তাঁর নাকি মনে হয়েছে ওখানে ক্যাচ উঠবে। পরের বলেই আমার হাতে ক্যাচ! এরপর ওর সঙ্গে বোলিং নিয়ে কত কথা যে বলেছি!

এখন তাঁরা। ইয়ান বিশপ টেলিভিশন কমেন্টেটর হিসেবে আগেই প্রতিষ্ঠিত। ইদানীং মাঝেমধ্যেই মাইক্রোফোন হাতে সঙ্গী পাচ্ছেন কোর্টনি ওয়ালশ ও কার্টলি অ্যামব্রোসকে। ছবি: আইসিসি টুইটার

শুভ্র: ফাস্ট বোলারদের কাছে সবচেয়ে আনন্দের দৃশ্য কোনটা? ব্যাটসম্যানকে আউট করা না তাঁকে গায়ে মারা?

বিশপ: আমার মনে হয় ব্যাটসম্যানের গায়ে মেরে আনন্দ পেতে হলে সেই বোলারকে খুব নিষ্ঠুর হতে হবে। আমার কাছে স্টাম্প ডিগবাজি খাচ্ছে, এই দৃশ্যটাই ছিল সবচেয়ে আনন্দের।

শুভ্র: প্রশ্নটা করেছি, কারণ জেফ টমসনের মতো অনেকে তো ঘোষণা দিয়েই বলেছেন, আমি উইকেটে রক্ত দেখতে ভালোবাসি!

বিশপ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাস্ট বোলাররা কিন্তু ব্যতিক্রম, বেশি কথা বলায় বিশ্বাসী নয়। আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি—ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোস, কোর্টনি ওয়ালশ...সবাই কিন্তু একটা দর্শনেই বিশ্বাসী ছিল—বলই যা বলার বলবে। আমরা কখনো কিছু বলে বা স্লেজিং করে ব্যাটসম্যানকে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করিনি। ক্রিকেটটা এভাবেই খেলা উচিত। 

শুভ্র: আপনি যা বললেন, স্লেজিংয়ের তীব্র বিরোধী সুনীল গাভাস্কার এই উদাহরণটা প্রায়ই দেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রেট ফাস্ট বোলাররা কখনো মুখে কিছু বলেননি।

বিশপ: আমাদের ওই গ্রেটদের আগে হয়তো কেউ কেউ ছিল, যারা মাঠের বাইরেও ছিল খুব আক্রমণাত্মক-বদমেজাজি। কিন্তু রবার্টস-গার্নাররা সবাই ছিল সহজ-সরল, অনেকে তো খুবই শান্ত। মানুষ হিসেবে সবাই ছিল খুবই ভালো। এ কারণেই আপনি যখন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলারদের কথা ভাববেন; বলের কথাই বেশি মনে হবে, লোকটাকে নয়। 

শুভ্র: এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। প্রসঙ্গের নাম ব্রায়ান লারা। আপনারা দুজনই তো ত্রিনিদাদের, একসঙ্গে খেলেছেন, ভালো বন্ধুও। লারাকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করেন?

বিশপ: ফেনোমেনাল। আমরা স্কুল দলে একসঙ্গে খেলেছি, আন্ডার নাইনটিনেও। আমি শুধু বলব, ব্রায়ানের মতো অমন বিশাল ইনিংস খেলার ক্ষমতা আমি আর কোনো ব্যাটসম্যানের মধ্যে দেখিনি। এটা সেই অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার সময় থেকেই। ওর চেয়েও হয়তো আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় ছিল, ভিভ রিচার্ডসের খেলায় হয়তো আরও বেশি আধিপত্য ছিল। দুজনের মধ্যে কে সেরা—আমি সেই তর্কে যাব না। আমি শুধু বলব, ব্রায়ানের রানক্ষুধার সঙ্গে আর কারও তুলনা হয় না।

শুভ্র: পরিসংখ্যানেই তো এর প্রমাণ। ৩৭৫, ৪০০, ৫০১—আশ্চর্য সব সংখ্যা! 

বিশপ: এসবের সঙ্গে ওর ডাবল সেঞ্চুরির সংখ্যাটাও দেখুন না! অনুপ্রাণিত ব্রায়ান লারাকে আউট করাটা সব সময়ই ছিল সবচেয়ে কঠিন। যখন অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ডে ও ৪০০ করল, দিনশেষে ও ১৮০ না কত রানে অপরাজিত, ওকে দেখে একটুও ঘাম ঝরেছে বলে মনেই হয়নি। যেন ওর জন্মই হয়েছে ব্যাটিং করার জন্য। আমি লারাকে এভাবেই মনে রাখব। মনে রাখব তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ব্যাটসম্যান হিসেবে।

লারা-টেন্ডুলকার, দুজনেই মুগ্ধ বিশপ। ছবি: গেটি ইমেজেস

শুভ্র: কিন্তু সব সময়ই লারার এমন বিতর্কের মধ্যে বসবাস ছিল কেন? এটা কি খ্যাতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার কারণে, নাকি তাঁকে ভুলও বোঝা হয়েছে?

বিশপ: ওর মতো এত অল্প বয়সে এত সব অর্জনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যে কারও জন্যই কঠিন হতো। হ্যাঁ, অনেক সময় ওকে ভুলও বোঝা হয়েছে। ব্রায়ান এমন সব বিষয়ের জন্য লড়েছে, যা বলে ও ওর সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। আমাদের সবার মতো ওরও হয়তো এখন মনে হয়, কিছু জিনিস এখন ও অন্যভাবে করত। তবে আমি শুধু একটা কথাই বলব, আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ক্রিকেটারের নাম লারা। মানসিকভাবে সবচেয়ে শক্ত ক্রিকেটারের নাম লারা।

শুভ্র: ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় ক্রিকেট তো নিয়মিতই দেখতে হয়। কার খেলা দেখতে সবচেয়ে পছন্দ করেন?

বিশপ: আমি যাদের সঙ্গে বা বিপক্ষে খেলেছি, তাদের মধ্যে দেখার জন্য সব সময়ের প্রিয় ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে চলে আসার পরও ওর সোজা ব্যাট, সহজ-সাবলীল ব্যাটিংয়ে আমি এখনো এমন মুগ্ধ যে এখনো আমি আর কারও নাম বলতে পারছি না।    

শুভ্র: আপনি তো দেখা যাচ্ছে লারাতেও মুগ্ধ, টেন্ডুলকারেও। এই দুজন দুই মাঠে ব্যাটিং করতে থাকলে আপনি কাকে দেখতে যাবেন?

বিশপ: আমি ভাগাভাগি করে দুজনকেই দেখব।

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×