শেভচেঙ্কোর ইউক্রেনের ইতিহাস গড়ার ম্যাচ?
ইংল্যান্ড-ইউক্রেন
উৎপলশুভ্রডটকম
৪ জুলাই ২০২১
সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড-ইউক্রেন। মহারণের আগে ইতিহাস আর পরিসংখ্যানে দুই দলের হালচাল।
দল নিয়ে প্রত্যাশার পারদ আকাশ ছোঁয়ানোটা ইংলিশ মিডিয়ার জন্য নতুন কিছু নয়। ২০১৮ বিশ্বকাপ থেকে তো জুড়েছে নতুন এক ট্যাগ লাইন, 'ইটস কামিং হোম।'
তা শিরোপাকে যদি ঘরে আনতেই হয়, তো এবারের ইউরোর চেয়ে ভালো সুযোগ ইংল্যান্ড আর পাবে বলে মনে হয় না। ফাইনালের আগে নামে-ভারে বড় দলগুলোর মুখোমুখি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই, শেষ ষোলতে জার্মানিকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসটাও বাড়িয়ে নেওয়া গেছে--এবার না হলে ইংল্যান্ডের আর কবে হবে!
কিন্তু ফাইনালে পৌঁছাতে হলে আগে তো কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা পেরোনো চাই। সেখানে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য প্রস্তুত আন্দ্রেই শেভচেঙ্কোর ইউক্রেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হওয়ার পর যাদের সামনে প্রথমবারের মতো ইউরোর সেমিফাইনালে ওঠার হাতছানি। ইউক্রেন-শিবিরে তাই উৎসাহের ঘাটতি থাকার কোনো কারণই নেই। ইতিহাস-পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের সামনে আরও বেশ কিছু রেকর্ড গড়ার কিংবা ভাঙার সুযোগ আছে এই ম্যাচে।
কী কী রেকর্ড? দেখে নেবেন চলুন:
★ সব মিলিয়ে দু'দল মুখোমুখি হয়েছে সাতবার। ২০০৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজয় ছাড়া ইংল্যান্ড হারেনি আর একবারও (৪ জয়, ২ ড্র)।
★ সাত দেখায় ইংল্যান্ডকে মাত্র ৩ গোল দিয়েছে ইউক্রেন, এবং কোনো ম্যাচেই ১টির বেশি না।
★ ইউরোতে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড-ইউক্রেন। ২০১২ সালে প্রথম সাক্ষাতে ওয়েইন রুনির একমাত্র গোলে জিতেছিল ইংলিশরা।
★ ইউরোতে ইংল্যান্ডের সর্বশেষ তিনটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। ১৯৯৬ ইউরোতে স্পেনকে টপকে সেমিফাইনালে উঠলেও ২০০৪ সালে পর্তুগাল আর ২০১২-তে ইতালি আটকে দিয়েছিল তাদের।
★ ইউরোতে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্রথম চার ম্যাচেই ক্লিন শিট রেখেছে ইংল্যান্ড, এর আগে ২০১৬ ইউরোতে যে কীর্তি গড়েছিল জার্মানি। ইংল্যান্ডকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে ইতালি, এখন পর্যন্ত একমাত্র ইউরোপীয় দল হিসেবে বড় টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচ ম্যাচেই জাল অক্ষত ছিল তাদের (১৯৯০ বিশ্বকাপে)।
★ বড় টুর্নামেন্টে এর আগে একবারই শেষ আটে উঠেছিল ইউক্রেন, ২০০৬ বিশ্বকাপের ম্যাচটা শেষ হয়েছিল ইতালির বিপক্ষে ৩-০ গোলের পরাজয়ে।
★ ইউরোতে নিজেদের সর্বশেষ তিন ম্যাচের দুটিতে জিতেছে ইউক্রেন, যা এই প্রতিযোগিতায় তাদের প্রথম সাত ম্যাচে জেতা ম্যাচসংখ্যার দ্বিগুণ।
★ ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড প্রথম চার ম্যাচে মাত্র ৮টি অন-টার্গেট শটের মুখোমুখি হয়েছেন, যা ১৯৮০ ইউরো থেকে হিসাব করলে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন।
★ এবারের ইউরোতে ইংল্যান্ডের ৪ গোলের ৩টিই এসেছে রাহিম স্টার্লিংয়ের পায়ে। ইংল্যান্ডের হয়ে এক ইউরোতে এর চেয়ে বেশি গোল করেছেন মাত্র দু'জন--১৯৯৬ ইউরোতে অ্যালান শিয়ারার (৫), ২০০৪ ইউরোতে ওয়েইন রুনি (৪)।
★ ইউরোতে ইউক্রেনের ৮ গোলের ৫টিতেই জড়িয়ে আছে আন্দ্রেই ইয়ারমোলেঙ্কোর নাম(২ গোল, ৩ অ্যাসিস্ট), যা তাঁকে দাঁড় করিয়েছে বর্তমান ম্যানেজার আন্দ্রেই শেভচেঙ্কোর পাশে। এর আগে ৪ গোল আর ১ অ্যাসিস্ট নিয়ে বড় টুর্নামেন্টে ইউক্রেনের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলে জড়িয়ে ছিলেন শেভচেঙ্কোই।
★ এবারের আসরে কমপক্ষে দুই শ পাস দিয়েছেন, এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে কেবল আয়মেরিক লাপোর্তেরই (৯৫.৩%) নির্ভুল পাসের হার ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনসের চেয়ে বেশি (৯৫.১%)।