জার্মানি-ইংল্যান্ড: ইতিহাস বনাম সাম্প্রতিক ফর্ম
উৎপলশুভ্রডটকম
২৯ জুন ২০২১
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ওয়েম্বলিতে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড-জার্মানি। মহারণের আগে ইতিহাস আর পরিসংখ্যান ঘেঁটে জানানো হচ্ছে দু`দলের হালচাল।
গ্যারেথ সাউথগেট তো মুখের ওপর না বলে দিচ্ছেন। 'হারলেই বিদায়' এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ওসব ইতিহাসের বুলি আওড়ানোর সময় আছে না কি? ইংলিশদের কাছে অর্থহীন মনে হওয়া ইতিহাসগুলোই অবশ্য জার্মানদের অনুপ্রেরণা। আজ ওয়েম্বলিতে খেলতে নামার আগে জোয়াকিম লো ক্ষণিকের জন্য ইতিহাসের শিক্ষক হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছ নেই।
এখন অব্দি ২০ বার ইংল্যান্ডের মুখোমখি হয়ে জয় ১২ বার, সঙ্গে পক্ষে কথা বলছে আরও নানা ইতিহাস আর পরিসংখ্যান--কথা বলার জন্য লো'র সামনে তো বিষয়ের অভাব নেই।
★ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড-জার্মানির এটি ১৩তম সাক্ষাৎ। এখানেই জার্মানিকে হারিয়ে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড, এমনকি প্রথম পাঁচ দেখায় হেরেছিল মাত্র একটি ম্যাচে। তবে এরপর থেকেই পাশার দান উল্টে গেছে, জার্মানরা এই স্টেডিয়ামে শেষ সাতটিতেই অপরাজিত (জয় ৫, ড্র ২)।
★ বড় টুর্নামেন্টে (ইউরো এবং বিশ্বকাপ) ইংল্যান্ড এবং জার্মানি এর আগে সাতবার মুখোমুখি হয়েছে। দু'পক্ষই জিতেছে দুটি করে ম্যাচ, ড্র বাকি তিনটি। যদিও, দুটো ড্রয়ের পর পেনাল্টি শ্যুটআউটে জিতে পরবর্তী পর্বে উঠেছে জার্মানরা।
★ ইউরোতে ইংল্যান্ড ও জার্মানির দেখা হচ্ছে তৃতীয়বার। এর আগে ১৯৯৬ ইউরোর সেমিফাইনাল ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর পেনাল্টিতে জার্মানি জেতে ৬-৫ ব্যবধানে। আর ২০০০ ইউরোর গ্রুপ পর্বের ম্যাচটা ইংল্যান্ড জিতেছিল ১-০ গোলে।
★ জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচটি ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের ৩০০তম, আর ২০০৭ সালে সংস্কারের পর পুনরায় চালু হওয়া মাঠে ৭৭তম। আগের ২৯৯ ম্যাচে থ্রি লায়নরা জিতেছে ১৮৭ বার, ৭৩ ড্রয়ের বিপরীতে হার ৩৯টিতে। ওয়েম্বলিতে সাম্প্রতিক ফর্মটা অবশ্য ইংলিশদের আশাই জাগাবে, বিশ্বকাপ কিংবা ইউরোর মঞ্চে এই ভেন্যুতে সর্বশেষ ১৪ ম্যাচেই অপরাজিত তারা, ৯ জয়ের পাশে ড্র ৫টিতে।
★ এখন পর্যন্ত ইউরোর নক আউট ম্যাচে একবারও ৯০ মিনিটের মাঝে জয়ের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড (ড্র ৪, হার ২)। চারবার ম্যাচ গড়িয়েছে পেনাল্টি শ্যুটআউটে। ইংল্যান্ড সামনে এগোতে পেরেছিল মাত্র একবারই, এই ওয়েম্বলিতেই ১৯৯৬ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে।
★ সর্বশেষ তিন ইউরোতেই জার্মানি অন্তত সেমিফাইনাল অব্দি পৌঁছেছিল। ব্যপ্তিটা যদি বাড়িয়ে নেওয়া হয় ১৯৯৬ ইউরো পর্যন্ত, তবে নক আউট পর্বে পা রেখে জার্মানি শেষ চারে খেলেছে প্রতি বারই।
★ রক্ষণাত্মক ফুটবলে গ্যারেথ সাউথগেটের দল বিরক্তি ধরিয়ে দিয়েছে সবার মনে। ইংল্যান্ড শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই জয় পেয়েছে ১-০ ব্যবধানে, সংখ্যাটা আগের ২৬ ম্যাচের সমান। এর আগে, ১৯৯০ সালে তারা পাঁচটি ম্যাচে জিতেছিল ১-০ ব্যবধানে।
★ ইংল্যান্ডের শক্তিমত্তাই জার্মানির দুর্বলতা। বড় মঞ্চে জার্মানি সর্বশেষবার জাল অক্ষত রেখে ম্যাচ শেষ করতে পেরেছিল ২০১৬ ইউরোতে, স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে। এরপর খেলা আট ম্যাচেই অন্তত একবার জালে বল ঢুকেছে তাদের। ১৯৩৪-১৯৫৪ সালের মধ্যে টানা ৯ বিশ্বকাপ ম্যাচে বল ঢুকেছিল জার্মানির জালে, আজও ক্লিন শিট না রাখতে পারলে জোয়াকিম লো'র দল নাম লেখাবে 'টানা গোল হজম'-এর ওই জার্মান রেকর্ডেই।
★ থ্রি লায়নদের হয়ে প্রথম ৪৫ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ২ গোল, আর সর্বশেষ ১৯ ম্যাচে রাহিম স্টার্লিং করেছেন ১৪ গোল। স্টার্লিংয়ের ১৬টা গোলই এসেছে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই সব গোল করেছেন, এমন কীর্তিতে ২৮ গোল নিয়ে কেবল স্টিভেন ব্লুমারই আছেন স্টার্লিংয়ের ওপরে।
★ ইলকায় গুন্ডোগান এর আগে ওয়েম্বলিতে গোল করেছেন দুবার। ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে, আর সর্বশেষবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে। আজ গোল করলে ভাগ বসাবেন পার মার্টসেকারের কীর্তিতে, ক্লাব এবং জার্মানি জাতীয় দলের হয়ে ওয়েম্বলিতে গোল করার কৃতিত্বটা এর আগে একমাত্র তিনিই দেখিয়েছিলেন।