ছন্দে ফেরা ফ্রান্স, নাকি সুইস-অঘটন?
উৎপলশুভ্রডটকম
২৮ জুন ২০২১
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড। কিক-অফের আগে পরিসংখ্যানের আয়নায় দুই দলের হালচাল।
টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে থেকেই শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদার মানা হচ্ছে তাদের। প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্সে বোঝা গিয়েছিল মানার কারণটাও। তবে পরের দুই ম্যাচেই ড্র আর একের পর এক খেলোয়াড়ের চোটে জেরবার অবস্থা ফ্রান্সের। ছোটখাটো অস্বস্তির কথা তো বাদই, দলের পাঁচ সদস্য ভুগছেন ম্যাচ না খেলতে পারার মতো চোটে। এরই মধ্যে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোল'র ম্যাচে নেমে পড়তে হচ্ছে ফরাসিদের। যদিও সুইজারল্যান্ডকে ফেবারিট বলা যাচ্ছে না এরপরও, তবুও সুইসদের সামনে ফ্রান্সকে রুখে দেওয়ার সেরা সুযোগ এটাই।
সুইসরা কি পারবে? কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই প্রশ্নের ঠিক-ঠিক উত্তরটা জানা যাবে, আপাতত পরিসংখ্যানের আয়নায় চোখ বুলিয়ে দেখে নেওয়া যাক, সংখ্যা কার হয়ে কথা বলছে।
★ এখন পর্যন্ত ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছে ৩৮ ম্যাচে। ফ্রান্সের ১৬ জয়ের বিপরীতে সুইজারল্যান্ড জয়ের হাসি হেসেছে ১২ ম্যাচে।
★ সুইজারল্যান্ডের সাথে শেষ সাত সাক্ষাতে হারেনি ফরাসিরা (জয় ৩, ড্র ৪), যা সুইসদের বিপক্ষে তাদের সবচেয়ে লম্বা অপরাজিত-যাত্রা। যদিও দু'দলের শেষ পাঁচটি ম্যাচই শেষ হয়েছে সমতায়।
★ বড় টুর্নামেন্টে ফ্রান্স- সুইজারল্যান্ড এ নিয়ে মুখোমুখি হচ্ছে পঞ্চমবারের মতো, তবে নক আউট পর্বে এবারই প্রথম। আগের চার দেখায় সুইসরা জয়ের দেখা পায়নি একবারও, ড্র করেছিল ২০১৬ ইউরো আর ২০০৬ বিশ্বকাপে।
★ ইউরো এবং বিশ্বকাপ মিলিয়ে ফ্রান্স তাদের শেষ ১৭ ম্যাচের মাত্র একটিতেই পরাজিত হয়েছে। সেই হারটা ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে, পর্তুগালের বিপক্ষে।
★ ২০১৪ আর ২০১৮ বিশ্বকাপ, মাঝে ২০১৬ ইউরো--এবারের আগে সর্বশেষ তিন বড় টুর্নামেন্টেই নক আউট পর্বে পৌঁছেছিল সুইসরা, এবং প্রতিবারে প্রথম ম্যাচেই হেরেছিল।
★ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ফ্রান্স সর্বশেষ হেরেছে ২০১৯ সালের জুনে, তুরস্কের বিপক্ষে ইউরোর বাছাইপর্বে। সেই থেকে ফ্রান্স জিতেছে ১৪টি ম্যাচে আর ড্র করেছে ৫টিতে। আজ না হারলে নিজেদের ইতিহাসের দীর্ঘতম অপরাজিত-যাত্রার সঙ্গে ব্যবধানটা কমে আসবে ৭ ম্যাচে। ১৯৯৪-১৯৯৯ সময়কালে যা গড়েছিল লেস ব্লু'রা, বর্তমান ম্যানেজার দিদিয়ের দেশম খেলেছিলেন যার ২১টিতেই।
★ প্রথমবারের মতো কোনো বড় টুর্নামেন্টে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড। এর আগে ২০ ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হয়ে সুইসরা ৯ ড্রয়ের বিপরীতে হেরেছে ৮টিতেই।
★ করিম বেনজেমা সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে একবারই খেলেছিলেন, সেটিতে দুটি গোলে সহায়তা করার পাশাপাশি নিজেও করেছিলেন একটি গোল। ২০১৪ বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে ফ্রান্সও জিতেছিল ৫-২ গোলে।
★ ফ্রান্সের সর্বশেষ ৫১ ম্যাচেই একাদশে ছিল আঁতোয়ান গ্রিজমানের নাম, যে ধারা শুরু হয়েছিল ৩১ আগস্ট ২০১৭ সালে হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। মাঝের সময়টায় গ্রিজমান ছাড়া আর কোনো ইউরোপীয় খেলোয়াড়কে দেশের হয়ে ৫০-এর বেশি ম্যাচে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
★ তুরস্কের বিপক্ষে জোড়া গোল করে জেরদান শাকিরি ছাড়িয়ে গেছেন জোসেফ হগিকে। বড় আসরে সুইজারল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি (৭) গোল এখন শাকিরির।
★ শাকিরির সামনে রেকর্ডের হাতছানি আছে ফ্রান্স ম্যাচেও। তুরস্ক ম্যাচের পর ৩ গোল নিয়ে ইউরোতে সুইজারল্যান্ডের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা ভাগাভাগি করতে হচ্ছে হাকান ইয়াকিনের সঙ্গে। আজ এক গোল করলেই রেকর্ডটা হয়ে যায় একান্ত নিজের, সাথে দলের সামনে এগোনোর সম্ভাবনাও বাড়ে। শাকিরি কি তা জানেন?