চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি না রোনালদোর পর্তুগাল?
উৎপলশুভ্রডটকম
২৭ নভেম্বর ২০২১
শেষে কারা কাতারের টিকিট পাবে, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও একটা ব্যাপার তো এখনই বলে দেওয়া যাচ্ছে। কাতার বিশ্বকাপে হয় চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি থাকবে নয়তো রোনালদোর পর্তুগাল। যেটাই হোক, বিশ্বকাপ তো একটু রং হারাবেই। সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে, বাদ পড়ে যেতে পারে দুই দলই।
আশঙ্কাই তবে সত্যি হলো! ২৬ নভেম্বর দর্শকদের উপহার দিল দুঃসংবাদ। রোনালদোর আবির্ভাবের পর কোনো বিশ্বকাপ মিস না করা পর্তুগাল থাকবে, নাকি ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি থাকবে? তবে কি ২০১৮ বিশ্বকাপই কি রোনালদোর শেষ হয়ে রইল? ২০১৮ এর পর ২০২২ বিশ্বকাপেও কি দেখা যাবে না ইতালিকে? প্লে-অফের ড্র হওয়ার পর থেকেই এমন প্রশ্নে তোলপাড় ফুটবল দুনিয়া।
ইউরোপীয় বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজ নিজ গ্রুপ জিতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে পর্তুগাল ও ইতালি। তখন থেকেই শঙ্কা ছিল, প্লে-অফে দুই দল না মুখোমুখি হয়ে যায়! তবে দুই দল প্রথমেই মুখোমুখি হচ্ছে না। তার আগে পাড়ি দিতে হবে আরেকটু পথ। ইউরোপীয় প্লে অফের তিন নম্বর ভাগে পড়েছে দুই দল। সঙ্গে আছে উত্তর মেসিডোনিয়া ও তুরস্ক। সেমিফাইনালে ইতালি খেলবে উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে। তুরস্কের বিপক্ষে ও পর্তুগাল। নিজ নিজ ম্যাচ জিতলে তবেই ইতালি ও পর্তুগালের দেখা হবে ফাইনালে। তার মানে সেমিফাইনালটাও খুব সহজ নয় পর্তুগালের জন্য।
২০১৮ বিশ্বকাপও খেলা হয়নি ইতালির। সেই হতাশা কাটিয়ে এবার ইতালিকে ইউরো জিতিয়েছেন কোচ রবার্তো মানচিনি। গড়েছেন অপরাজিত থাকার বিশ্ব রেকর্ড। কিন্তু ইউরোতে দারুণ পারফর্ম করা ইতালি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সুবিধা করতে পারেনি। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে সুইজারল্যান্ডের পেছনে পড়ে দ্বিতীয় হয়ে বিশ্বকাপ নিয়ে ঘোর শঙ্কায় তারা।
সেই শঙ্কা আরও স্পষ্ট ইতালির কোচ রবার্তো মানচিনি প্রতিক্রিয়ায়, 'এটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন ড্র, কারণ উত্তর মেসিডোনিয়া একটি ভালো দল এবং আমরা জিতলে ফাইনালে আমাদের তুরস্ক বা পর্তুগালের বিপক্ষে খেলতে হবে। এরা খুবই শক্তিশালী।'
অন্যদিকে পর্তুগালের ঘটনা তো আরও অপ্রত্যাশিত। কারণ দুই ম্যাচ বাকি থাকতে পর্তুগালের সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা এক রকম নিশ্চিতই মনে হচ্ছিল। ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর নিজেদের মাঠে সার্বিয়ার বিপক্ষে শেষ মিনিটের গোলে পরাজয় সেই পর্তুগালকেই ঠেলে দিয়েছে প্লে-অফের অনিশ্চয়তায়। আগে প্লে-অফে দুটি দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুটি ম্যাচ খেলত। ২০১০ ও ২০১৪ সালেও প্লে-অফ খেলেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিল পর্তুগাল। এবার নতুন নিয়মে প্লে-অফের দুটি ম্যাচই নকআউট। পর্তুগাল অবশ্য একটা সুবিধা পাচ্ছে। তুরস্ককে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারলে সেই ম্যাচটি নিজেদের দেশে খেলার সুযোগ পাবে তারা।
ইউরোপ অঞ্চলের ১০ গ্রুপের ১০ রানার্সআপ দল খেলছে এই প্লে অফে। সঙ্গে নেশনস লিগে ভালো করেছে, কিন্তু বিশ্বকাপে জায়গা করতে পারেনি, এমন দুই দল (অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র)। এই ১২ দলকে তিনটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এক একটি ভাগের চার দলের মধ্যে প্রথমে সেমিফাইনাল হবে। আর সেখান থেকে ফাইনালে যাবে বিজয়ী দুই দল। ফাইনালের বিজয়ী দল যাবে বিশ্বকাপে। এভাবে তিন ভাগ থেকে তিনটি দল যাবে কাতার বিশ্বকাপে।
প্লে অফের ড্রতে বাছাই হিসেবে ছিল ছয়টি দল—পর্তুগাল, স্কটল্যান্ড, ইতালি, রাশিয়া, সুইডেন ও ওয়েলস। অবাছাই হিসেবে ছিল তুরস্ক, পোল্যান্ড, উত্তর মেসিডোনিয়া, ইউক্রেন, অস্ট্রিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্র। ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাবে বাছাই হওয়া দলগুলো।
সেমিফাইনাল লাইনআপ :
প্রথম ভাগ
স্কটল্যান্ড বনাম ইউক্রেন
ওয়েলস বনাম অস্ট্রিয়া
দ্বিতীয় ভাগ
রাশিয়া বনাম পোল্যান্ড
সুইডেন বনাম চেক প্রজাতন্ত্র
তৃতীয় ভাগ
ইতালি বনাম মেসিডোনিয়া
পর্তুগাল বনাম তুরস্ক
আগামী ২৪ ও ২৫ মার্চ হবে সেমিফাইনাল। আর ফাইনাল ২৮ ও ২৯ মার্চ। ফাইনালের বাধা পার করে কারা কাতারের টিকিট কাটবে কারা, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও একটা ব্যাপার তো এখনই বলে দেওয়া যাচ্ছে। কাতার বিশ্বকাপে হয় চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি থাকবে নয়তো রোনালদোর পর্তুগাল। শুধুই সম্ভাবনার কথা বললে দুই দলই কিন্তু বাদ পড়ে যেতে পারে। একটাই তো ম্যাচ, সেমিফাইনাল হারলেই তো বিদায়!