বার্সা প্রেসিডেন্টের কথায় কষ্ট পেয়েছি: মেসি
উৎপলশুভ্রডটকম
২ নভেম্বর ২০২১
লিওনেল মেসির বার্সেলোনা-অধ্যায় এখন তিন মাস পুরোনো, তবে কদিন পরপরই নানা প্রসঙ্গে তা ফিরে ফিরে আসে। সর্বশেষ যা ফিরিয়ে এনেছেন মেসি নিজেই। স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁর কষ্টের কথা।
লেবু বেশি কচলানো হয়ে যাচ্ছে কি না, এমন একটা আশঙ্কা আছেই। মেসি-বার্সেলোনা অধ্যায় তো এখন মাস তিনেক পুরনো। কিন্তু তবুও কি আলোচনা থামছে! নতুন করে আলাপটা জাগিয়ে তুলেছেন লিওনেল মেসিই। স্পোর্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন বার্সার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে। বার্সার বর্তমান সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা যে কথার তিরেই বিদ্ধ করেছেন তাঁকে, জানিয়েছেন ওই সাক্ষাৎকারেই।
লা লিগার বেঁধে দেওয়া বেতনকাঠামো নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে না পারার কারণে লিওনেল মেসির সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবটিতে যেদিন তাঁর নতুন চুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার কথা ছিল, সেদিন উল্টো আসে তাঁর বিদায়ের ঘোষণা। ২১ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পাড়ি জমান প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে।
কিছুদিন পরেই মেসির ন্যু ক্যাম্প ছাড়া প্রসঙ্গে বার্সা প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তার মন্তব্য অবাক করে সবাইকে। স্প্যানিশ গণমাধ্যমে লাপোর্তা বলেছিলেন, ‘মেসির প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। কারণ আমি জানি তার এখানে থাকার তীব্র ইচ্ছা ছিল, কিন্তু অন্যান্য প্রস্তাবগুলোর কারণে সে চাপে ছিল। সবকিছু ইঙ্গিত দেয়, সে ততদিনে পিএসজির কাছে প্রস্তাব পেয়েছে। সবাই জানত সেই প্রস্তাবটা বেশ ভালো অঙ্কের। তবে আমি আমি আশা করেছিলাম, শেষ মিনিটে মেসি হয়তো বলবে, সে বিনা বেতনে হলেও খেলতে চায়। আমার খুব ভালো লাগত এবং আমি রাজিও হতাম। আমার মনে হয় লিগ কর্তৃপক্ষও রাজি হতো। কিন্তু তার মত সফল একজন খেলোয়াড়কে আমরা নিজ থেকে এসব বলতে পারি না।’
হোয়ান লাপোর্তার এমন মন্তব্য মেসির বার্সেলোনা ছাড়া নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে অনেক। বার্সা প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য শোনার পরেও এতদিন মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও অবশেষে মুখ খুললেন মেসি।
বার্সেলোনাভিত্তিক স্প্যানিশ দৈনিক স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, 'সত্যি বলতে, আমার (বার্সা থেকে) বিদায়ের দিনে যেটা বলেছি, আমি থাকার জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করেছিলাম। সেখানে একটা মুহূর্তের জন্যও কেউ বিনা বেতনে খেলার কথা বলেনি আমাকে। আমার বেতন ৫০ শতাংশ কমাতে অনুরোধ করেছিল, কোনো প্রশ্ন ছাড়াই সেটা করেছি আমি। ক্লাবকে আরও সাহায্য করতে তৈরি ছিলাম।'
এরপরই জানিয়েছেন এতদিন নিজের ভেতর জমিয়ে রাখা কষ্টের কথা, 'আমার ও আমার পরিবারের ইচ্ছা ছিল বার্সেলোনায় থাকার। কেউ তখন বিনা বেতনে খেলার প্রসঙ্গ তোলেনি, কিন্তু এখন সভাপতির (বার্সা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা) কথাগুলো শুনে মনে হয়েছে, এগুলো খামোখাই বলেছেন। তাঁর এমন কথায় কষ্ট পেয়েছি আমি, কারণ তাঁর এগুলো বলার কোনো দরকার ছিল না। এগুলো মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে, যেটা নিশ্চয়ই আমার প্রাপ্য না।'
পিএসজির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছেন ৩৪ বছর বয়সী মেসির। তবে চুক্তিপত্রে দুই পক্ষের সম্মতিতে চাইলে তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। খেলোয়াড়ি জীবনটা যদি সেখানেই শেষ হয় তো পরবর্তী পরিকল্পনাও ঠিক করে নিয়েছেন মেসি। কোনো একটা ক্লাবের টেকনিক্যাল সেক্রেটারি হবেন।
তা সেই ক্লাবটা কি বার্সেলোনা? উত্তরটা মেসিও সময়ের হাতেই তুলে দিয়েছেন।