২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

রানে ফেরার জন্য ফরম্যাটটা সহজ নয়: সাকিব

উৎপলশুভ্রডটকম

২২ অক্টোবর ২০২১

রানে ফেরার জন্য ফরম্যাটটা সহজ নয়: সাকিব

আবারও ম্যাচ-সেরা সাকিব

টানা দুই ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি, দ্বিতীয়টিতে আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে ভাগ বসানো...সাকিব আল হাসান এর চেয়েও বড় করে দেখাতে চাইছেন, ভালোয় ভালোয় সুপার টুয়েলভে উঠে যেতে পারাটাকে। যেখানে কমপক্ষে পাঁচটি ম্যাচ খেলার সুযোগ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আরও স্বাধীনতা নিয়ে খেলার সুযোগ দেবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।

ভয় ছিল, না জানি বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়। আশঙ্কা ছিল, না জানি আগামী বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও অংশ নিতে হয়! শঙ্কা ছিল, পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ম্যাচটায় না জানি স্কটল্যান্ডের ভাগ্যই বরণ করতে হয়।

সবকিছু শেষ পর্যন্ত অকারণ বলেই প্রমাণিত। টেস্ট খেলুড়ে দেশ আর সহযোগী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পার্থক্যটা যে এখনো আকাশ-পাতালই, এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সেটি বুঝিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ জয় পেল ৮৪ রানে। খুঁজতে গেলে অবশ্য আক্ষেপের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে সেখানেও। পিএনজির সপ্তম উইকেট তো পড়ে গিয়েছিল মাত্র ২৯ রানে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন সংগ্রহও যখন ১০ রান দূরত্বে।

ওমান ম্যাচের মতো এদিনও বাংলাদেশ জয় পেল সাকিব আল হাসানে চড়েই। এই বিশ্বকাপের আগে ব্যাট হাতে তাঁর সময়টা ভালো যাচ্ছিল না মোটেই, ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৩৬ রানের। তবে ওমানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৪২ রান করার পর আজ ব্যাট হাতে করেছেন ৪৬, কিছুটা রানে ফেরার স্বস্তি ছুঁয়ে গিয়েছে সাকিবকেও, 'রানে ফেরার জন্য ফরম্যাটটা সহজ নয়। নিজেকে ভাগ্যবানই বলব, (বাংলাদেশের হয়ে) ওপরে ব্যাট করার সুযোগ পাচ্ছি। উইকেটে থেকে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাওয়াটাই আমার লক্ষ্য।'৩৮ ডিগ্রি অনুভূত হওয়া তাপমাত্রায় ব্যাটিং করতে সাকিবের সংগ্রামটা বোঝা যাচ্ছিল টেলিভিশনেও। পানি পানের বিরতিতে মাঠে ছাতাও চেয়ে পাঠালেন। সঙ্গে টানা খেলার ক্লান্তি তো আছেই। সাকিব জানালেন, ক্লান্তিটা তিনিও টের পাচ্ছেন, 'সর্বশেষ পাঁচ/ছয় মাস ধরে নন-স্টপ ক্রিকেট খেলে যাচ্ছি। একটু ক্লান্তি তো ঘিরে ধরেছেই, তবে আশা করছি, টুর্নামেন্টটা ভালোয় ভালোয় শেষ করতে পারব।'

টুর্নামেন্টের শুরুটা অবশ্য দুর্দান্তই হয়েছে সাকিবের। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাতে উঠেছে ম্যাচ-সেরার ট্রফি। আইসিসি ইভেন্টে অবশ্য এই দৃশ্যটা এখন নিয়মিত দৃশ্যেই পরিণত। আইসিসি টুর্নামেন্টে  বাংলাদেশ কোনো জয় পাচ্ছে আর সেখানে সাকিব আল হাসান ম্যাচ-সেরার পুরস্কার পাননি, এমন ঘটনা সর্বশেষ দেখা গেছে সেই ২০১৫ সালে, যেবার ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেওয়ার ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জিতেছে, সর্বশেষ এমন ৬টি ম্যাচেই তো ম্যাচ-সেরার ট্রফি সাকিবের হাতে। 

শুধু ব্যাট হাতের পারফরম্যান্স নয়, পিএনজি ম্যাচে সাকিবকে ম্যাচ-সেরা বানাতে বল হাতে ৯ রানে ৪ উইকেটেরই বড় ভূমিকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে শহীদ আফ্রিদিকে ধরে ফেলেছেন। আর এই টুর্নামেন্টে এর চেয়ে ভালো অলরাউন্ড পারফরম্যান্স খুঁজে পেতে ফিরে যেতে হচ্ছে ২০০৯ সালে। সেবার লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে ডোয়াইন ব্রাভো করেছিলেন ৬৬, বোলিং ফিগার ছিল ৪-৩৮।  

নিজের ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলের জয়টাকেই অবশ্য বড় করে দেখতে চাইলেন সাকিব। স্কটল্যান্ডের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর টানা দুই ম্যাচে ক্রমোন্নতিটাও চোখে পড়ার মতো। সাকিবও তাই বলছেন, 'প্রতি ম্যাচেই আমরা আরও বেশি আত্মবিশ্বাস পাচ্ছি। অবশ্যই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারটা একটা ধাক্কা ছিল। তবে টি-টোয়েন্টি এমনই। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।'

অনিশ্চয়তা কাটিয়ে সুপার টুয়েলভে উঠে গিয়ে এখন অনেকটাই নির্ভার সাকিব। শুধু নিজের কথাই অবশ্য বলেননি, বলেছেন দলের কথাও, 'এখন আমরা অনেক বেশি স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারব।'

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×