মুমিনুলকে আরও দশ বছর টেস্ট ক্যাপ্টেন দেখতে চান তামিম
শুভ্র.আলাপে তামিম ইকবাল
প্রস্তাব পেলে ওয়ানডের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতেও অধিনায়কত্ব করতে রাজি তামিম ইকবাল। কিন্তু টেস্টে কোনোমতেই নন। কারণ কী? কারণ হলো, তিনি মনে করেন বাংলাদেশের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক এই কাজের জন্য সবচেয়ে যোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদে তাঁরই টেস্ট অধিনায়ক থাকা উচিত। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুল হককে কেন এত পছন্দ কেন তামিমের?
তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের তিন অধিনায়ক। এর মধ্যে একমাত্র তামিম ইকবালই তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত। তাহলে তিন ফরম্যাটেই একজনই অধিনায়ক থাকলে সমস্যা কী? ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমকে বাকি দুই ফরম্যাটেই ক্যাপ্টেনসি করার প্রস্তাব দিলে তা কি তিনি গ্রহণ করবেন? না, তামিম তা করবেন না। সাদা বলের আরেকটা ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে তিনি অধিনায়কত্ব করতে রাজি আছেন, কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে না। কেন, কারণ কী?
প্রশ্নটা উঠতে পারে জেনেই তা করার আগেই তামিম ব্যাখ্যা দিয়ে দিলেন। শুভ্র.আলাপে অতিথি হয়ে এসে বললেন, টেস্ট ফরম্যাটের বর্তমান অধিনায়ক যিনি, সেই মুমিনুল হকের টেস্ট নিয়ে ভাবনা-চিন্তার ওপর তাঁর অগাধ আস্থা এবং আগামী দশ বছরেও এই আস্থায় চিড় ধরবে না।
মুমিনুলকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে কারণটাও ব্যাখ্যা করেই বলছেন, 'ওর টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি যে ফিলিংস, যে চিন্তাধারা; আমার মনে হয়, ওইটা আমার মধ্যে নাই। টিমের কারও যদি (টেস্টের প্রতি) ফিলিংসটা কাছাকাছি থেকে থাকে, সম্ভবত সেটা মুশফিকের। বাট, ওর (মুমিনুল) যে ফিলিংস, যে চিন্তাধারা, প্ল্যানিং, কিংবা কী করতে চায়--টিমের মধ্যে আর কারও সেটা নেই। আনফরচুনেটলি টেস্ট ক্রিকেটে আমরা দুর্বল, কিন্তু আমার মনে হয় না, ওর চেয়ে ভালো কেউ কাজটা করতে পারবে। হি ইজ দ্য ফিউচার। শুধু আজকে না, ওর আরও দশ বছর টেস্ট ক্যাপ্টেন থাকা উচিত।'
কিন্তু তামিমের এই কথার সঙ্গে 'সহমত' বলার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে তো? শ্রীলঙ্কা সিরিজেই মুমিনুলের ক্যাপ্টেনসি নিয়ে টুকটাক সমালোচনা হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেট বাংলাদেশের সাম্প্রতিক যে বেহাল দশা, তার দায়ও বেশির ভাগ তো গিয়ে পড়ে অধিনায়কের ওপরই। মুমিনুলকে সময় দেওয়া প্রসঙ্গে উৎপল শুভ্র তাই তামিমকে মনে করিয়ে দিলেন, এই কাজটা আসলে ক্রিকেট বোর্ডের। বিসিবির উচিত, মুমিনুলকে শান্তিতে অধিনায়কত্ব করে যাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া। অনন্তকালের জন্য গ্যারান্টি তো আর দেওয়া যায় না। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় অধিনায়ককে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যেতে হবে বিসিবিকে। বোঝাতে গিয়ে তিনি বললেন, 'মিডিয়ার কাজই খুঁত বের করা। কেউ বাজে শট খেলে আউট হলে তাঁকে নিয়ে সমালোচনা হতো, হবেই। পাবলিকও নানা কথা বলবে। কিন্তু সেসবের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে বিসিবির দায়িত্ব হবে, মুমিনুলকে আগলে রাখা।'
তামিমও অনুমিতভাবেই একমত হচ্ছেন। বিসিবি তাঁদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেন, তবে জনসম্মুখে নিজেদের সমর্থনটা সরাসরি জানালে অধিনায়ক আরও বেশি ভরসা পাবেন বলেও মনে হয় তাঁর। তা শুধু মুমিনুলের ক্ষেত্রে নয়, সবার ক্ষেত্রেই সত্যি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মুমিনুলের আবেগ বোঝাতে গিয়ে তামিম বললেন, 'অনেক কিছু হয়তোবা ও এক্সপ্রেস করতে পারে না মিডিয়াতে এসে, ভালো করে বুঝিয়েও বলতে পারে না। বাট, ও তো আমাদের সাথে থাকে, আমাদের সাথে কথা বলে। আমরা জানি, ও কতটুকু ফিল করে; কতটুকু আপসেট হয় একটা ম্যাচ হেরে গেলে, কিংবা কতটুকু খুশি হয়, যখন আমরা ছোট ছোট সেশন জিতি।'
তা মুমিনুলের বন্ধ হয়ে থাকা কুঠুরির চাবিটা গণমাধ্যম খুঁজে না পেলে কি-ই বা ক্ষতি হবে, বিসিবি কর্তারা খুঁজে পেলেই তো চলে!