বড় জুটি মানেই মুশফিক
উৎপলশুভ্রডটকম
২৭ নভেম্বর ২০২১
চলতি চট্টগ্রাম টেস্টে লিটনের সঙ্গে মুশফিকের ২০৬ রানের জুটিটি টেস্টে বাংলাদেশের এগারোতম সর্বোচ্চ জুটি। শীর্ষ ১১ জুটির ছয়টিরই অংশীদার মুশফিক। এর তিনটিতেই তাঁর সঙ্গী টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
'মিস্টার ডিপেন্ডেবল' নিকনেমটা কার সাথে মানায়? এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আরেকটা প্রশ্নের জন্ম নেয় — 'এ আবার কেমন প্রশ্ন?' কেননা, মুশফিকের নিকনেম হিসেবে তো এটা জুড়ে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। ভক্ত-সমর্থকদের কাছ থেকে পাওয়া এই নিকনেম সম্মাননাও বটে। যেটির যথার্থতা আবারও প্রমাণ করেছেন মুশফিক। চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে লিটনের সঙ্গে ২০৬ রানের জুটি গড়ে।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বেশির ভাগ বড় জুটিতেই রয়েছে মুশফিকুর রহিমের অবদান। প্রথম দশটি বড় জুটির অর্ধেক অর্থাৎ পাঁচটিতেই আছেন মুশফিক। সেই পাঁচ জুটির তিনটিতেই মুশফিকের সঙ্গী ছিলেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। পরিসংখ্যানের কথা শুনে নিশ্চিত এখন পুরো তথ্য জানার লোভ হচ্ছে সবার। তাহলে জানিয়েই দেওয়া যাক...
১.
সাকিব-মুশফিক
৩৫৯, প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, ওয়েলিংটন ২০১৭
সাকিবের অনবদ্য ২১৭ ও মুশফিকের ১৫৯ রানের ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন সেদিন সাকিব ও মুশফিক। পেছনে ফেলেন ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম-ইমরুলের ৩১২ রানের ঐতিহাসিক উদ্বোধনী জুটির রেকর্ডকে। যা কিনা এর আগে ছিল সর্বোচ্চ রানের জুটি বাংলাদেশের জন্য যেকোনো উইকেটে।
২.
আশরাফুল-মুশফিক
২৬৭, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, গল ২০১৩
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম স্মরণীয় টেস্ট ম্যাচ। পাঁচ দিন খেলে যে ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিও করেছিলেন এই ম্যাচে। মুশফিকের আগে ডাবল সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও ১৯০ রান কাটা পড়েন আশরাফুল। পঞ্চম উইকেটে তো বটেই, যেকোনো উইকেটেই এটি তখন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি হয়ে যায়। বর্তমানে যা টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পঞ্চম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি।
৩.
মুশফিক-মুমিনুল
২৬৬, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, মিরপুর ২০১৮
২৬ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এই দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে ম্যাচে ফিরে এসেছিল বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষ হওয়ার ২৭ বল আগে ১৬১ রানে মুমিনুলের বিদায়ে সমাপ্তি ঘটে এই জুটির। দিনশেষে অপরাজিত থাকেন মুশফিক ১১১ রানে৷ পরের দিন সেই শতককে নিজের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দেন।
৪.
মুশফিক-মুমিনুল
২৩৬, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, চট্টগ্রাম, ২০১৮
তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুমিনুলের সাথে মুশফিকের এই জুটি সেদিন আবার প্রমাণ করেছিল যে, চট্টগ্রাম মুমিনুলের সৌভাগ্যের তীর্থভূমি। মুমিনুল শতকের দেখা পেলেও ৯২ রানে আউট হয়ে ফিরে যান মুশফিক। ডাবল সেঞ্চুরির আশা নিয়ে প্রথম দিন শেষ করা মুমিনুল দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ফিরে যান ২৪ রান দূরে থাকতে।
৫.
মুমিনুল-মুশফিক
২২২, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, মিরপুর, ২০২০
ঘুরেফিরে আবারও সেই দুই ব্যাটসম্যান, আর প্রতিপক্ষও আরেকবার জিম্বাবুয়ে। ভেন্যুটাও মিরপুর। তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে শুরু হওয়া জুটি থামে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে মুমিনুলের ১৩২ রানে বিদায়ে। এদিনও দিনের শেষ সেশনে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিকুর রহিম।
চলতি চট্টগ্রাম টেস্টে লিটনের সাথে মুশফিকের ২০৬ রানের জুটি টেস্টে বাংলাদেশের এগারোতম সর্বোচ্চ জুটি। সেই হিসেবে শীর্ষ ১১ জুটির ছয়টিরই অংশীদার মুশফিক।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাঁচ জুটির দুটিতে প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা, সেই দুটি টেস্টই ড্র হয়েছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টেস্টেই জিতেছে বাংলাদেশ। যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি যে ওয়েলিংটন টেস্টে, সেটিতে বাংলাদেশ হারে ৭ উইকেটে।