ভারত দলে কোহলির পক্ষ-বিপক্ষ দেখছেন শোয়েব

উৎপলশুভ্রডটকম

২ নভেম্বর ২০২১

ভারত দলে কোহলির পক্ষ-বিপক্ষ দেখছেন শোয়েব

ভারত দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখছেন শোয়েব আখতার

রোববার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের হারের পর হারের ধরন নিয়ে নানা কথাই হচ্ছে। সাবেক পাকিস্তানি পেস বোলার শোয়েব আখতার বললেন একেবারে নতুন কথা। বাইরে থেকেই বিরাট কোহলির দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখতে পাচ্ছেন তিনি। কোহলির পক্ষ ও বিপক্ষও।

ভারত দলটা কি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে? সেই দুই ভাগের একটিতে বিরাট কোহলির অনুসারীরা আর অন্যটা তার বিরুদ্ধে? এমন প্রশ্ন উঠে আসছে পাকিস্তানের সাবেক গতিতারকা শোয়েব আখতারের মনে। শুধু মনে এলেও হতো। শোয়েব তা প্রকাশ করেছেন ভাষায়। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি তা স্পষ্ট করে বলেছেন। 

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে সেমিফাইনালে খেলার আশা প্রায় শেষ হয়ে গেছে ভারতের। প্রথমে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে তাদের ১০ উইকেটের বিশাল হার, এরপর নিউজিল্যান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করার মানসিকতায় ৮ উইকেটের পরাজয় তাদের জন্য সেমিতে খেলা দূরের স্বপ্ন বানিয়ে দিয়েছে। 

বিরাট কোহলির দলে সত্যি কি অন্তর্দ্বন্দ্ব? ছবি: গেটি ইমেজেস

শোয়েব আখতারের চোখে লেগেছে গত রোববার নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের হারটা। যে ম্যাচে ভারত দলকে দলটার ছায়া মনে হয়েছে। ১১১ রানের টার্গেট দিয়ে ১৪.৩ ওভারে খেলাটা হেরে গেছে তারা। তবে সেদিনকার সব দেখেশুনে শোয়েবের মনে হয়েছে, হারার আগেই হেরে গিয়েছিল ভারত। তাদের শরীরী ভাষায় খেলার শুরু থেকেই যা স্পষ্ট ছিল। মাঠে নামা দলটার দিকে তাকিয়ে বোঝা যাচ্ছিল ভেতরে ভেতরে দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার ব্যাপার। তবে শোয়েব এ-ও বলছেন যে ভারত দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেলেও এবং গত দুই ম্যাচে ভুলের পর ভুল কর থাকলেও কোহলিকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে।

‘দলটার মধ্যে আমি দুইটা শিবির কেন দেখতে পাই? একটা কোহলির পক্ষে, অন্যটা কোহলির বিরুদ্ধে। এটা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ।’ নিজের ধারণা যে ভুল নয়, সেটা জোর দিয়ে বলছেন শোয়েব। এমনিতে ভারত দল নিয়ে কথা বলতে গেলে খুব সতর্ক থাকেন। আর এখন তো বলছেন খুব স্পর্শকাতর একটা বিষয় নিয়ে। নিশ্চিত না হলে যে বিষয় নিয়ে কথা বলা যায় না. সেই বিষয় নিয়ে শোয়েবের স্পষ্ট কথা, ‘দলটা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এটো কেন ঘটছে, তা আমি জানি না। হতে পারে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বের কারণে। সে হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর তা সত্যও বটে। কিন্তু সে একজন বিরাট ক্রিকেটার এবং তাকে আমাদের সম্মান দিতেই হবে।’

পাকিস্তানের কাছে এই বিশ্বকাপের আগে কখনো কোনো বিশ্বকাপে হারেনি ভারত। ওটা ছিল চলমান আসরে তাদের প্রথম ম্যাচ। ব্যাট হাতে কিছুটা লড়াই করতে পারলেও বল হাতে তারা ছিল হেরে যাওয়া দল। বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে দাপটের সঙ্গে জিতিয়েছিলেন দলকে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে হারের পর কোহলি নিজেও তাঁর দলের সমালোচনা করেছিলেন। দলটার শরীরী ভাষা যে নেতিবাচক ছিল, তা বলার পাশাপাশি জিগীষাও যে দেখা যায়নি, স্বীকার করেছিলেন সেটিও। 

এই বিশ্বকাপের পর আর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক থাকছেন না কোহলি ছবি: গেটি ইমেজেস

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ওই মানসকিতার সমালোচনা করছেন শোয়েবও। দলটাকে প্রথম থেকে তার কাছে চুপসে যাওয়া মনে হয়েছে। ম্যাচের একদিন পেরিয়ে গেলেও শোয়েব মনে করেন ভারত দলের হার ও মানসিকতা নিয়ে কথা বলা যৌক্তিক, ‘হ্যাঁ, সমালোচনার গুরুত্ব আছে, কারণ তারা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাজে ক্রিকেট খেলেছে এবং তাদের মানসিকতাতেও ছিল সমস্যা। টস হারার পর তাদের প্রত্যেকের মাথা নিচে নেমে গিয়েছিল। কী হচ্ছে না হচ্ছে তা বুঝতে পারছিল না। ভারত, তখন তো কেবল টস হেরে গিয়েছিলে তোমরা, গোটা ম্যাচ তো হারোনি তখনো। তারা কেবল (শারীরিকভাবে) সেখানে উপস্থিত ছিল এবং তাদের কোনো গেমপ্ল্যান ছিল না।’ 

সেমিফাইনালে খেলার আশা প্রায় শেষ হয়ে গেলেও ভারতের হাল ছাড়ার উপায় নেই। আরও তিনটা ম্যাচ বাকি। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। এই তিনের বিপক্ষে কোহলিদের জিততেই হবে। শুধু জিতলেই হবে না অবশ্য। ভারতের ভাগ্য আর ভারতের হাতে নেই। নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের ম্যাচগুলোর দিকেও তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। 

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×