ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর

ক্ষুব্ধ শোয়েব আখতার একই সঙ্গে বিস্মিতও

উৎপলশুভ্রডটকম

২৬ অক্টোবর ২০২১

ক্ষুব্ধ শোয়েব আখতার একই সঙ্গে বিস্মিতও

শোয়েব আখতার

পাকিস্তানের শ্রেষ্ঠত্ব কেন মেনে নিতে পারল না ভারতীয় মিডিয়া? কেন তারা এমন ভাব দেখায় যে, ভারত কখনো হারতেই পারে না! কেন এমন তাদের প্রকাশ যে পাকিস্তানকে সবসময় হারাবে তাদের দল? এই সব প্রশ্ন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস শোয়েব আখতারের। বিরক্ত শোয়েব অবশ্য জবাবও দিয়েছেন নিজেই।

সব দেখেশুনে খুব খেপেছেন শোয়েব আখতার। এমনিতে ভারত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এই সাবেক গতিতারকা খুব সতর্ক থাকেন। এমনকি এবারের বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর বিষয় নিয়ে কথা বলার সময়ও অন্যদের সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, এমন কিছু কেউ যেন না বলেন, যাতে সীমা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়ার 'সীমা ছাড়ানো পক্ষপাত' দেখে আর মুখ বুজে থাকতে পারলেন না শোয়েব। ক্ষোভ তো প্রকাশ করলেনই, দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা কিভাবে নিজেদের দল নিয়ে ‘ফালতু কথা’ বলেন, তাতে বিস্ময়ও।

দুবাইয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়ার আগে ও পরে ভারতীয় মিডিয়ার নিদারুণ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ দেখেছেন শোয়েব। অথচ ম্যাচটায় তো ভারতকে পাকিস্তান স্রেফ উড়িয়ে দিল। ১০ উইকেটের জয়। নিজেও ভারতের বিপক্ষে খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক খেলেছেন। দলকে জিতিয়েছেন। তাই শোয়েবের বিশ্বাস এই দুই দল সমানে সমান। যার যেদিন ভালো যায়, সে সেদিন জয় পায়। 

৪৬ বছর বয়সী শোয়েব তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ভারতীয় মিডিয়া নিয়ে, ‘ভারতীয় মিডিয়া কেন এমন ভাব দেখায় যে, তাদের দল কোনো ম্যাচ হারতেই পারে না? এটা ক্রিকেট। পাকিস্তান দাপটের সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে জিতেছে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারত। এটাই খেলাটার সৌন্দর্য।’

কেন এমন হয়, তা অবশ্য শোয়েবের অজানা নয়। সেটা তুলে ধরে বলেছেন, ‘মিডিয়া কেন এটা করে, তা আমি বুঝি। এটা তাদের ব্যবসা।’ কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছেন না শোয়েব। তা হলো নিজের দলের বিরুদ্ধে কিভাবে যান কোনো সাবেক ক্রিকেটার? ‘এটা কখনোই বুঝতে পারি না যে, কিভাবে সাবেক ক্রিকেটাররা যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছে তারা এমন ফালতু কথা বলেন নিজেদের দল নিয়ে। তাও একটা হারের পর। এটা খুবই হতাশার।’
 

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর

রোববার বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে কোনো জয় পেয়েছে পাকিস্তান। এর আগে দেখা ১২ ম্যাচেই হারতে হয়েছিল। শোয়েবের বিশ্বাস, ভারতের বিপক্ষে এই জয় পাকিস্তানের ক্রিকেটে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এমনকি শাহিন শাহ আফ্রিদি, বাবর আজমদের মতো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে উঠতি ক্রিকেটাররা অনুপ্রেরণা নেবে। আর ওই জয় পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের জন্যও আত্মবিশ্বাস ওপরে তুলে নেওয়ার। 

‘ভারতের বিপক্ষে এই জয় পাকিস্তানের জন্য দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। ভারত আমাদের শত্রু বলেই শুধু নয়, পাকিস্তান সাম্প্রতিক অতীতে অনেক ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে।’ 'রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস' এই একটা জয়ের কতো বড় ভূমিকা. তা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘সেই ২০০৯ থেকে পাকিস্তানের ক্রিকেট ভূগছে। এরপর নিউজিল্যান্ড অধ্যায় হয়ে গেল।’ বিশ্বকাপের আগে পরিকল্পিত সিরিজ না খেলেই পাকিস্তান থেকে নিউজিল্যান্ড দলের দেশে ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বর্তমানে ফিরেছেন শোয়েব, ‘এই জয় আমাদের জন্য এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে, বাবর ও শাহিনের মতো খেলোয়াড়দের আমাদের সন্তানরা অনুকরণ করতে চাইবে। এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় জয়।’ 

প্রসঙ্গত, ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে পাকিস্তানের ওই দুই ক্রিকেটারের ভূমিকা ছিল দারুণ। লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা ও ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির উইকেট তুলে নিয়ে দলকে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দেন ২১ বছর বয়সী বাঁহাতি ফাস্ট বোলার শাহিন। এরপর ব্যাট হাতে বাকি কাজটুকু করেন অধিনায়ক বাবর ও উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। বাবর ৬৮ আর রিজওয়ান ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তান পায় সারা জীবন গল্প করার মতো এক জয়।

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×