২০০৯-এর মতো জেগে ওঠার ডাক আফ্রিদির
উৎপলশুভ্রডটকম
১৫ অক্টোবর ২০২১
শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তান পরিণত হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিষিদ্ধ ভূমিতে। এর কয়েক মাস পরই ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যাতে পাকিস্তানকে কেউ হিসাবেই ধরেনি। সেই পাকিস্তানই যে শিরোপা জিতে সবাইকে চমকে দিয়েছিল, তাতে বড় ভূমিকা ছিল শহীদ আফ্রিদির। এবারের দলকে সেবারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আবারও ২০০৯ ফিরিয়ে আনার ডাক দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।
পরিস্থিতি প্রতিকূল গেলেই সম্ভাবনার সূর্য উঁকি দিতে শুরু করে পাকিস্তান ক্রিকেটের ভাগ্যাকাশে। বিশ্ব আসরে তাদের সব শিরোপাই এসেছে প্রতিকূল পরিস্থিতি জয় করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়। যার মাস তিনেক আগে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের বাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিন্দার ঝড়ে বিপর্যস্ত ছিল গোটা পাকিস্তান জাতি। যাদের কেউই আমলে নেয়নি, তারাই কি না চমকে দিয়েছিল শিরোপা জিতে। অবসাদগ্রস্ত জাতির মাঝে প্রাণ সঞ্চার করেছিল সেই শিরোপা।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি এবার বিশ্বকাপের ঠিক আগে জেগে ওঠার ডাক দিলেন। ২০০৯ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়কের বিশ্বাস, সেবারের বিশ্বকাপ জয় থেকে এবারের দল শিক্ষা নিতে পারে। ২০০৯-এর লড়াইয়ের স্পৃহা দলের মধ্যে এনে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে গর্জে উঠতেই পারে।
অতীত ইতিহাস বলে, প্রতিকূলতা ভিন্নভাবে জাগিয়ে তোলে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে। এটাই পাকিস্তান ক্রিকেটের বৈশিষ্ট বা সৌন্দর্য। ২০০৯ সালের সেই আসরের শুরুতেই হোঁচট খায় পাকিস্তান স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হেরে। বিষাদগ্রস্ত জাতি এরপরও আশা ছেড়ে দেয়নি। গ্যালারি ও টিভি পর্দায় সমর্থন জুগিয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত। পরের ম্যাচে ডাচদের হারিয়ে নিশ্চিত হয় সুপার এইটের টিকেট।
সুপার এইটের প্রথম ম্যাচেও হোঁচট খায় পাকিস্তান। ধাপে ধাপে ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছে রূপই পাল্টে যায় পাকিস্তানের। যে দল সেমিফাইনালেও অল্পের জন্য হোঁচট খেতে গিয়ে বেঁচে গেছে, সেই দল কি না ফাইনালে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে জিতে নিয়েছে শিরোপা। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল দুটিতেই হাফ সেঞ্চুরি করে শহীদ আফ্রিদি হয়ে যান সেই ইতিহাসের নায়ক।
সেই মধুর স্মৃতি রোমন্থন করে আফ্রিদি বলছেন, 'এটাই পাকিস্তান ক্রিকেট। চরম দুঃসময় পার করা জাতিকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তুলতে এই শিরোপা জেতার বিকল্প ছিল না। পাকিস্তানকে কেউ শিরোপার দাবিদারের তালিকায় না রাখলেও আমাদের "আনপ্রেডিক্টেবল" চরিত্রের কারণেই শিরোপা জিতেছি।’ এবারও সেই প্রেরণা নিয়েই পাকিস্তান শিরোপা স্পর্শ করবে বলে বিশ্বাস তাঁর।
আফ্রিদির এমন কথার পেছনের কারণ সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজ বাতিল করার ঘোষণা। যা প্রভাব ফেলেছে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতেও। ২০০৯ বিশ্বকাপেও সব মিলিয়ে ঘাটতির মধ্যেই ছিল পাকিস্তান। তাই এবারও প্রতিকূল এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ভালো কিছু করার সম্ভাবনা দেখছেন ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক আফ্রিদি।
আফ্রিদির বিশ্বাস, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে পাকিস্তানের গভীর সখ্য রয়েছে। বাবর আজমের নেতৃত্বে পাকিস্তানের বর্তমান টি-টোয়েন্টি দলের চরিত্রে প্রতিভা, নিবেদন ও আগ্রাসন কোনোটারই কমতি নেই। সমর্থকরাও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ভালোবাসেন। গেল কয়েক বছরে নিজেদের উন্নতির মাত্রা নজর কেড়েছে অন্য পরাশক্তিদেরও। ব্যাটে-বলে এবারও দেখিয়ে দেওয়ার অপেক্ষায় পাকিস্তান।