বোলারদের প্রশংসা করে কিউইদের প্রচ্ছন্ন হুমকি মাহমুদউল্লাহর

উৎপলশুভ্রডটকম

১০ আগস্ট ২০২১

বোলারদের প্রশংসা করে কিউইদের প্রচ্ছন্ন হুমকি মাহমুদউল্লাহর

মাহমুদউল্লাহর এই ছবিটা পুরোনো। করোনা-পূর্ব সময় যখন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন হতো

অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানালেন এই সাফল্যের নেপথ্য কারণ। সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, এখানেই থামতে চান না। জিততে চান প্রতিটা সিরিজই।

ইশ, ড্যান ক্রিস্টিয়ানকে যদি ফেরানো যেত প্রথম ওভারেই!

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় ছিল না একটিও, ব্যবধানটা ছিল ৪-০। সাত দিনের ব্যবধানে স্কোরলাইন হয়ে গেল ৫-৪, যেকোনো ফরম্যাটেই প্রথমবারের মতো সিরিজ হারের স্বাদ দেওয়া গেল অস্ট্রেলিয়াকে, জয় এলও ঘরের মাঠে সর্বশেষ নয় টি-টোয়েন্টির আটটিতেই...তবুও যেন একটু আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে। সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে সাকিব আল হাসানকে ওই ভুতুড়ে ওভার দেখতে না হলেই তো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া যেত বাংলাওয়াশের স্বাদ!

কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, সিরিজ শুরুর আগে যদি বলা হতো 'বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে ৪-১ ম্যাচে', বিনা বাক্য ব্যয়ে আপনি কি সেটাই মেনে নিতেন না? বরং একটু বোধ হয় অবিশ্বাসই করতেন। স্কোরলাইনটা ৫-০ না হলে কী হবে, যা হয়েছে, সেটাও তো কম বড় অর্জন না।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাই বড় করে দেখতে চাইলেন অর্জনটাকেই, ‘আমি খুবই খুশি। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ক্রিকেটাররা জয়ের যে ক্ষুধা দেখিয়েছে, সেটা প্রশংসা পাওয়ার মতো। আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে ব্যবহার করতে পেরেছি।'

তা কেমন ছিল সেই পরিকল্পনা? যে উইকেটে পাঁচ ম্যাচে রান উঠেছে মোট ১০৬২, সে উইকেটে ব্যাটিংটাই বেশি হিসাব-নিকাশের দাবি করছিল। মাহমুদউল্লাহ বলছেন, ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে উইকেট ধরে রেখে খেলাতেই গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা, 'অবশ্যই এখানে রান তোলা কঠিন ছিল। তবে আমরা কিছু কাজ করেছি এবং উইকেট ধরে রেখে খেলে ১২০-১৩০ রান করার চেষ্টা করেছি। ম্যাচগুলোও তাই জিতেছি।’

১২০-১৩০ রানই যখন দলের লক্ষ্য, বোলারদের বাড়তি দায়িত্ব তাই নিতেই হতো। মাহমুদউল্লাহ বলছেন, বোলারদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল সিরিজের আগেই, ‘সিরিজ শুরুর আগে আমি বোলারদের বলেছিলাম যে, ওদের ওপরে অনেক দায়িত্ব। স্নায়ুচাপ সামলে স্মার্ট বোলিং করতে হবে এবং নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।'

স্কোরকার্ডে তাকিয়ে বলাই যায়, সেই দায়িত্ব তারা দারুণভাবেই পালন করেছেন। পাঁচ ম্যাচের কোনোটিতেই অস্ট্রেলিয়া তুলতে পারেনি ১২১ রানের বেশি। সিরিজের শেষ ম্যাচে তো ডুবতে হয়েছে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাতেও। সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৮২ বল, ক্রিকেট খেলতে শুরু করার পর এর কম রানে গুটিয়ে যায়নি অস্ট্রেলিয়া নামধারী আর কোনো দল।

মাহমুদউল্লাহ তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসায় ভাসালেন তাঁর বোলারদের, 'আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্ট চমৎকার কাজ করেছে। স্পিনার ও ফাস্ট বোলার সবাই খুব ভালো করেছে। ওদের উন্নতির গ্রাফটা ঠিক দিকেই আছে। জিম্বাবুয়েতে কিংবা এই সিরিজে ফাস্ট বোলার-স্পিনাররা অনেক পরিশ্রম করেছে। স্নায়ুচাপের সময়ে তারা শান্ত থেকে খেলতে পেরেছে, যেটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'

তবে শান্ত থাকাটা তো কেবলই খেলোয়াড়দের হাতে থাকে না, শান্তিপূর্ণ পরিবেশটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব থাকে দল সংশ্লিষ্টদেরও। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সেই কাজটা যথাযথভাবে করা হয়েছে বলে মাহমুদউল্লাহ ধন্যবাদ দিতে চাইলেন টিম ম্যানেজমেন্টকেও।

এমন পরিবেশ তারা পরের সিরিজেও বজায় রাখতে পারেন কি না, সেটাই অবশ্য দেখার। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড আসছে এই মাসের শেষদিকেই, আজ ঘোষণা করে দিয়েছে দলও। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষেও সিরিজ জয়ের প্রত্যয় জানিয়ে গেলেন, 'আমাদের সব সময়ই মনে হয়, নিজেদের মাটিতে আমরা খুব ভালো দল। যারাই বাংলাদেশে খেলতে আসবে, তাদের জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হবে এবং আমরা প্রতিটি সিরিজই জিততে চাইব।'

টম ল্যাথাম কী শুনছেন? কথাটায় প্রচ্ছন্ন হুমকিই মিশে আছে কিন্তু!

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×