চার বছর আগের কেলেঙ্কারিতে পেইনের পদত্যাগ
উৎপলশুভ্রডটকম
১৯ নভেম্বর ২০২১
স্মিথ-ওয়ার্নারদের স্যান্ডপেপার কেলেঙ্কারিতে অপ্রত্যাশিতভাবে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন টিম পেইন। আরেকটি কেলেঙ্কারিতে সেই অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করতে হলো তাঁকে। প্রায় চার বছর আগের ঘটনা আবার নতুন করে আলোতে আসায় যে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন পেইন।
এক কেলেঙ্কারি তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক বানিয়ে ছিল, আরেক কেলেঙ্কারিতে অধিনায়কত্ব ছাড়তে হলো টিম পেইনকে। চার বছর আগে ক্রিকেট তাসমানিয়ার এক নারী সহকর্মীকে অশ্লীল ছবি ও মেসেজ পাঠিয়েছিলেন।তখন এটির মীমাংসাও হয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনা এতদিন পর মিডিয়ায় নতুন করে ফিরে এসে আলোড়ন তৈরি করার ভিত্তিতে অ্যাশেজের ঠিক আগে পদত্যাগ করতে হলো পেইনকে।
শুক্রবার হোবার্টে এক সংবাদ সম্মেলনে পেইন একটা লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান। যাতে পদত্যাগের ঘোষণা তো ছিলই, ছিল ওই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও অনুতাপও। পেইন এটাও জানাতে ভোলেননি যে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নৈতিক কমিটি সে সময় ঘটনা তদন্ত করেছে এবং তিনি তাতে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। ক্রিকেট তাসমানিয়ার মানবসম্পদ বিভাগও আলাদাভাবে ঘটনার তদন্ত করেছিল। দুটি ভিন্ন তদন্ত একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে, পেইন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কোড অব কনডাক্ট বা আচরণবিধি ভঙ্গ করার মতো কিছু করেননি।
Tim Paine speaking after confirming he'd stand down as the Australian Men's Test captain. He will be available for the Ashes. pic.twitter.com/PdwPIvfHXl
— Chloe-Amanda Bailey (@ChloeAmandaB) ১৯ নভেম্বর, ২০২১
যে কারণে অ্যাশেজ শুরুর সপ্তাহ দুয়েক আগে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ককে পদত্যাগ করতে হলো, তা ২০১৭ সালের নভেম্বরের ঘটনা। তখন এটা প্রকাশ হয়নি বা এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে ওই নারী সহকর্মীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠলে ওই ঘটনা প্রথম ক্রিকেট তাসমানিয়ার নজরে আসে। এরপরই ওই তদন্ত হয়। টিম পেইনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণও জানানো হয়েছে ক্রিকেট তাসমানিয়ার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। ঘটনাটা ব্যক্তিগত, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এবং একবারই হয়েছে বলে পেইনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল পেইনকে।
এতদিন এই ঘটনা গোপনই ছিল। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার হেরাল্ড সান পত্রিকা তা প্রকাশ করে দেওয়ার পর ঘটনাটা নিয়ে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় এবং বহুল আলোচিত টপিকে পরিণত হয়। এসবের পরই পেইনের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত, যা ঘোষণা করার সময় টিমমেটদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দেওয়াটা যে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া, সেটাও উল্লেখ করেছেন। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলে থাকতে চান এবং অ্যাশেজের জন্য উন্মুখ অপেক্ষায় আছেন, জানিয়ে দিয়েছেন এটাও।
টিম পেইন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কও হয়েছিলেন ক্রিকেট বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেওয়া এক কেলেঙ্কারিতে। ২০১৮ সালে মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে ‘স্যান্ডপেপার স্ক্যান্ডালে’ অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার নিষিদ্ধ হলে পেইনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে কে টস করতে নামেন, তা এখন বড় একটা কৌতূহলের বিষয়। প্যাট কামিন্স বর্তমানে টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক। তিনিই কি তাহলে দায়িত্ব পাচ্ছেন? দেখা যাক্!