বলির পাঁঠা বানানো পাকিস্তানে অভ্যাস হয়ে গেছে: মিসবাহ
উৎপলশুভ্রডটকম
২১ অক্টোবর ২০২১
পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়ার ইচ্ছার কথা বলে বিশ্বকাপের এক মাস আগে এক সাথে পদত্যাগ করেছিলেন পাকিস্তান দলের প্রধান কোচ মিসবাহ-উল-হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস। পদত্যাগের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল শুরু থেকেই। অবশেষে সংবাদ মাধ্যমে নিজের হতাশার কথা জানিয়ে মিসবাহ পরিষ্কার করে দিলেন, যে কারণের কথা বলে পদত্যাগ করেছেন, তা আসল কারণ নয়।
পদত্যাগের পরে প্রথমবার মিডিয়ার সামনে মুখ খুললেন মিসবাহ-উল-হক। তা কী বললেন তিনি? বললেন পাকিস্তান ক্রিকেটের চিরন্তন এক সমস্যার কথা, 'কাউকে না কাউকে বলির পাঁঠা বানানো পাকিস্তান ক্রিকেটের নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা বন্ধ না করলে পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতি অসম্ভব। কারণ, পাকিস্তান ক্রিকেটের সমস্যা আরও গভীর।'
পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়ার ইচ্ছার কথা বলে বিশ্বকাপের এক মাস আগে এক সাথে পদত্যাগ করেন পাকিস্তান দলের প্রধান কোচ মিসবাহ-উল-হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস। পদত্যাগের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল শুরু থেকেই। অবশেষে সংবাদ মাধ্যমে নিজের হতাশার কথা জানিয়ে মিসবাহ পরিষ্কার করে দিলেন, যে কারণের কথা বলে পদত্যাগ করেছেন, তা আসল কারণ নয়।
দীর্ঘ খেলোয়াড়ি জীবন শেষে কোচ...পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে এত বছরে জানাশোনা থেকে সমস্যাটা মিসবাহর খুব ভালো জানা, 'আমরা শুধু ফলাফল পছন্দ করি, পরিকল্পনা করে সিস্টেম পরিবর্তনের কথা ভাবি না। কাউকে পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট সময় ও সুযোগও দিই না। এটাই আমাদের ক্রিকেটের বড় সমস্যা।'
পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও ক্ষোভ ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, 'আমরা এই বিষয়ে মনোযোগ দিই না যে, আমাদের খেলোয়াড়দের প্রথমে ঘরোয়া পর্যায়ে এবং তারপর জাতীয় দলে গড়ে তুলতে হবে। তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আমরা শুধু ফলাফল চাই এবং আর যদি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাই, তাহলেই হয়েছে। আমরা বলির পাঁঠা খুঁজতে শুরু করি এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটাই আমাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। কোনো ম্যাচ বা সিরিজ হারলে কাউকে দোষারোপ করে আসল সমস্যা ধামাচাপা দেওয়া পরিণত হয়েছে নিয়মিত ঘটনায়। এভাবে চলতে থাকলে দেশের ক্রিকেটের কোনো পরিবর্তনই হবে না। আপনি চাইলে প্লেয়ার-কোচ পরিবর্তন করতে পারেন, কিন্ত তাতে সমস্যার সমাধান হবে না।'
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে দেওয়ার পর পাকিস্তানি সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকে সমালোচনার মুখে দলে পরিবর্তন আনে পাকিস্তান। উইকেটকিপার আজম খান ও তরুণ পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনকে সরিয়ে দলে জায়গা পান সরফরাজ আহমেদ ও হায়দার আলী। অন্যদিকে রিজার্ভ স্কোয়াডে থাকা ফখর জামানের কাছে জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে মূল স্কোয়াডের খুশদিল শাহকে। বিশ্বকাপ দলে পরিবর্তন করায় নির্বাচক প্যানেলেরও সমালোচনা করেছেন মিসবাহ-উল-হক, 'এটা কী হচ্ছে? প্রথমে, আপনি কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপ দলে নিলেন। ১০ দিন পরে আপনি একটি ইউ-টার্ন নিয়ে বাদ পড়া প্লেয়ারদের আবার ফিরিয়ে আনলেন!'
অস্থিরতা পাকিস্তান ক্রিকেটের নিত্যসঙ্গী। আর এ নিত্যসঙ্গীকে নিয়েই যে পাকিস্তান বিশ্বকাপে আরও একবার পা রাখছে, তা মিসবাহ-উল-হকের কথায় অনেকটাই পরিষ্কার।