এবাদতও পারেন
রিজওয়ান রেহমান সাদিদ
২৯ নভেম্বর ২০২১
তাইজুল ইসলাম ৭ উইকেট নিয়েছেন, তবে বাংলাদেশের বোলিংয়ে আলো কেড়েছেন এবাদত হোসেনও। গতকাল পর্যন্তও যাঁর বোলিং নিয়ে প্রশ্ন ছিল বিস্তর।
৮ টেস্টে ৮ উইকেট, বোলিংয়ে ব্র্যাডম্যানীয় গড়... এবাদতকে নিয়ে কাল পর্যন্ত শোনা আলোচনাগুলোর সারমর্ম ছিল একটাই, 'একে দলে নেওয়ার কারণ কী!'
কারণটা এবাদত বোঝালেন আজ। বাংলাদেশ যে প্রথম ইনিংসে লিড পেল, কিছুটা ভালো ব্যাটিং করলে জিতেও যেতে পারে; তাইজুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর অনেকটা কৃতিত্ব এবাদতেরও প্রাপ্য।
দিনের প্রথম ওভারেই ২ উইকেট নিয়ে যে সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন তাইজুল, অন্য প্রান্ত থেকে তাতে যোগ্য সঙ্গত করেছেন এবাদত। দিনের প্রথমে ৪ ওভারের যে স্পেল করেছিলেন, তাতে রান দিয়েছিলেন মাত্র ৩! তাঁর ২২ বলেই কোনো রান নিতে পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটাররা, মাত্র দুটি বল করেছিলেন গা কিংবা পা বরাবর। বোলিং মার্কে ফেরত যেতে যেতে হাতের যে ভঙ্গি করছিলেন, তাতে বোঝা যাচ্ছিল, ব্যাটসম্যানকে ড্রাইভ করিয়ে স্লিপে ক্যাচ তোলাটাই উদ্দেশ্য। কিন্তু পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা সে ফাঁদে পা দেননি বলেই উইকেটটা পাননি।
যেটা পেয়েছেন লাঞ্চ-পরবর্তী সেশনে। লাঞ্চের আগেই নতুন বল নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এবাদত নতুন বলটা হাতে পেয়েছেন ৮৯তম ওভারে। প্রথম ওভারের কোনো বলই রাখতে পারেননি জায়গামতো, নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি সুইংটাই। তবে ৯১তম ওভারের প্রথম বলটাই করলেন দুর্দান্ত। হালকা ভেতরে ঢোকা বলে ফেরালেন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে।
পরে ফিরিয়েছেন সাজিদ খানকেও। ফোর্থ স্টাম্প লাইনে বল করে এবাদত নাভিশ্বাসই তুলে ছেড়েছিলেন সাজিদের। যে বলটায় আউট হলেন, সে বলটায় যেমন বলের লাইনে পা-ই নেননি সাজিদ। এর আগের বলগুলোতে যেখানে ফ্রন্ট ফুট প্রেসটা হচ্ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে পর্যন্ত, আউট হওয়া ডেলিভারিটায় সাজিদের পা থেমে গিয়েছিল মিডল স্টাম্প আর অফ স্টাম্পের মাঝেই, এবং প্রতিটা বলে কেবল একবার পা এগোলেও আউট হওয়া বলটাতে পা নড়িয়েছিলেন দুবার।
তবে এবাদতের আজকের বোলিংয়ের হাইলাইটস বলতে গেলে ফাহিম আশরাফকে তাঁর করা দুটো লেংথ বলই ভেসে উঠছে সামনে। দুটি বলই অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে ছিল, একটু খাটো লেংথেই। দুই বলেই কাটমতো কিছু করতে চেয়েছিলেন ফাহিম, কিন্তু ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। কারণ আর কিছুই নয়, ১৪০ কিলোমিটার গতি।
এবাদতকে দলে নেওয়ার কারণও তো সেটাই, 'গতি....'।