নতুন চোট নিয়ে তামিম ইকবাল

‘মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে’

উৎপল শুভ্র

১৫ নভেম্বর ২০২১

‘মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে’

তামিম ইকবাল

গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে সিরিজ খেলার পর থেকেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। প্রথমে কারণ ছিল হাঁটুর চোট। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তাই দর্শক। মাঝখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে সরে দাঁড়ানো নিয়ে কত বিতর্ক। নেপালে খেলতে গিয়ে ফিরে এলেন আঙুলে চোট পেয়ে। তা থেকে সেরে উঠে যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই আবার বড় এক দুঃসংবাদ। যা শোনার পর তামিম ইকবালকে ফোনে ধরে তাঁর মুখ থেকেই শোনা গেল ঘটনার বিস্তারিত...

উৎপল শুভ্র: কী শুনলাম এটা! খবরটা কি সত্যি?

তামিম ইকবাল: কী শুনলেন?

শুভ্র: আঙুলে নাকি নতুন চিড় ধরা পড়েছে?

তামিম: ঠিকই শুনেছেন। তবে নতুন ধরা পড়লেও চিড়টা নতুন না। আগে থেকেই ছিল। আগেরটা চেয়েও বড় একটা ফ্র্যাকচার।

শুভ্র: বলেন কি! তাহলে আগে ওটা ধরা পড়ল না কেন?

তামিম: সেটা তো আমারও প্রশ্ন। 

শুভ্র: ঘটনাটা খুলে বলুন তো, শুনি।

তামিম: নেপালে এভারেস্ট লিগ খেলতে গিয়ে ব্যাটিংয়ের সময় বুড়ো আঙুলে বল লাগার পর ওই ইনজুরির কারণে দেশে ফিরে এসেছিলাম, এটা তো জানেনই। দেশে এসে এক্স রে করানোর পর একটা চিড় ধরা পড়ায় এত দিন তো খেলার বাইরেই ছিলাম। কদিন আগে নেট করতে শুরু করি। আঙুলটা ফুলে ছিল, ব্যাটিং করার সময় ব্যথাও লাগছিল। এতদিন পর ব্যাটিং করলে যা স্বাভাবিকই। তারপরও চোটটা পুরোপুরি সেরেছে কি না বোঝার জন্য আজ আবার এক্স রে করালাম। এক্স রেতে আগেরটার চেয়েও বড় একটা সমস্যা ধরা পড়েছে। আগে যা সবার চোখ এড়িয়ে গেছে।

শুভ্র: তাহলে তো এটা পুরোনো চোট। তখন ধরা পড়েনি কেন...কোন ডাক্তার দেখেছিলেন?

তামিম: এই প্রসঙ্গ থাক্।

শুভ্র: আমার একটা ব্যাপার একটু বোঝার ইচ্ছা। আগে এটা ধরা পড়লেও তো চিকিৎসা এটাই হতো, তাই না? আঙুল তো একটাই। তাহলে চিকিৎসা-বিশ্রাম এসবে এটাও কি এতদিনে সেরে যাওয়ার কথা না?

তামিম: হ্যাঁ, আগে ধরা পড়লেও হয়তো বিশ্রামই নিতে হতো। তবে কে জানে, প্রথম কয়েক দিন তো আঙুলটা ব্যান্ডেজ করা ছিল, এটার জন্য হয়তো এক্সস্ট্রা প্যাডিং-ট্যাডিং লাগত।

শুভ্র: এখন তাহলে কী হবে?

তামিম: আমি দেশের বাইরে যাওয়ার চিন্তা করছি। আল্লাহ-আল্লাহ করছি যাতে অপারেশন না লাগে। অপারেশন লাগলে তো আরও অনেক দিনের জন্য খেলার বাইরে থাকতে হবে। 

শুভ্র: এমনিতেই তো বোধ হয় সবচেয়ে বেশি সময় খেলার বাইরে থাকার রেকর্ড হয়ে গেছে। সেই ২০০৭ সালে অভিষেকের পর এতদিন তো বাংলাদেশ দলের বাইরে কখনো থাকেননি, তাই না?

তামিম: না, এর আগে মনে হয় না চোটের কারণে এক মাসের বেশি বাইরে থেকেছি। এবার তো এখনই প্রায় চার মাস হয়ে গেছে। আরও কতদিন লাগে ফিরতে কে জানে!

তামিম সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে

শুভ্র: প্রশ্নটা একটু নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে। তারপরও করি, এতদিন পর যখন খেলায় ফেরার কথা, নতুন করে আবার এই ইনজুরি কতটা হতাশার?

তামিম: এটা বলে বোঝাতে পারব না। পাকিস্তানের সঙ্গে খেলার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে ছিলাম। আজ থেকে শুরু ন্যাশনাল লিগের ম্যাচেও আমার খেলার কথা ছিল। ভেরি ডিসঅ্যাপয়েন্টিং। এত খারাপ লাগছে যে, কী বলব! মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মাথা ঠিক কাজ করছে না। যদি এক্স রেতে দেখা যেত, যে চোটটার কথা জানি, সেটা এখনো ঠিক হয়নি, তাহলেও হয়তো এত খারাপ লাগত না। কিন্তু নতুন একটা প্রবলেমের কথা জেনে বেশি খারাপ লাগছে। এটা তো কল্পনাও করিনি।

শুভ্র: পাকিস্তান বলেই কি আরও বেশি খারাপ লাগছে...২০১৫ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তো দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল আপনার।

তামিম: না, এটা কারণ না। সেবার ভালো খেলেছিলাম বলে এবারও ভালো খেলতাম, এর তো আর কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। সেবারের চেয়েও ভালো খেলতে পারতাম, আবার খারাপও খেলতে পারতাম। খেলতে পারছি না, এটাই বেশি খারাপ লাগছে।

শুভ্র: তা তো ঠিকই। তবে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আপনার পারফরম্যান্স এত ভালো ছিল যে, এ কারণেই কথাটা বলেছি। সেবার ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ হওয়ায় তো আপনার বড় ভূমিকা ছিল...২টা সেঞ্চুরি, একটা ফিফটি। আচ্ছা, টেস্টে যেন কী হয়েছিল? আরে, দেখো কাণ্ড, খুলনায় প্রথম টেস্টে তো আপনার ডাবল সেঞ্চুরি, ইমরুলের সঙ্গে ওই ওপেনিং পার্টনারশিপে ম্যাচ ড্র। কীভাবে ভুলে গেলাম! ঢাকায় পরের টেস্টে কত করেছিলেন যেন…

তামিম: ২৫ আর ৪৩ (আসলে ৪ আর ৪২)।

শুভ্র: মাঝখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘিরে বাংলাদেশের ক্রিকেট তো টালমাটাল সময় কাটাল। আপনাকে নাকি...

তামিম: (থামিয়ে দিয়ে) টি-টোয়েন্টির প্রসঙ্গ থাক। আজ আর অন্য কোনো কিছু নিয়েই কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×