উৎপল শুভ্র নির্বাচিত পাঠকের লেখা
পরের ম্যাচে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ
রিফাত বিন জামাল
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
একের পর এক লো-স্কোরিং ম্যাচ বিরক্তি ছড়াচ্ছে, একে টি-টোয়েন্টি বলে নাকি! রেকর্ড বইয়ে তাই যেসব আঁকিবুঁকি হচ্ছে, সবই সর্বনিম্ন আর বোলারদের কীর্তির স্মারক। সঙ্গে অবশ্য আছে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নতুন কিছু অর্জনও। যার একটিতে এখন বাংলাদেশের সঙ্গী পাকিস্তান। সিরিজের শেষ ম্যাচে আছে যাদেরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ।
প্রথম জয় যে সিরিজে এলো, বাংলাদেশ জিতে নিল সে সিরিজও। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশ পেল নিউজিল্যান্ডের সাথে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের চাইতে বেশি জয় পায়নি আর কোনো দলই। আজকের এই জয়টা এ বছরে বাংলাদেশের নবম টি-টোয়েন্টি জয়। সেই জয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আনন্দের জায়গা কিছুটা বাগিয়ে নিচ্ছে বিরক্তি। চার-ছক্কার খরার সাথে সাথে একের পর এক লো-স্কোরিং ম্যাচই এর মূল কারণ। মিরপুরে আজও চলেছে বোলারদেরই রাজত্ব। তা দেখে নেওয়া যাক সংখ্যায় সংখ্যায়…
২- নাছুম আহমেদ আজ ৪ ওভার বল করে মেডেন দিয়েছেন দুটি ওভার। বাংলাদেশি কোনো বোলারের এক ইনিংসে দুটি মেডেন নেওয়ার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল হোসেন অপু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১৮ সালে এমনটা করেছিলেন প্রথম।
১- আজই প্রথম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুই বোলার একই ম্যাচে চারটি করে উইকেট পেয়েছেন। একই ইনিংসে অর্থাৎ একই ম্যাচে এক দেশের দুজন বোলারের কমপক্ষে চারটি করে উইকেট পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে আরও দুবার। প্রথমবার এমন কিছুর দেখা মিলেছিল ২০০৭ সালে। স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে উমর গুল নিয়েছিলেন ৪ উইকেট, শহীদ আফ্রিদিও তা-ই। সর্বশেষ উদাহরণ ২০১০ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে সুলেমান বেন ৪ ওভারে ২ মেডেন নিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন, সে ম্যাচেই ড্যারেন সামি পেয়েছিলেন ৫ উইকেট।৫- টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে একই ম্যাচে দুটি মেডেনের সঙ্গে কমপক্ষে ৪ উইকেট নেওয়া পঞ্চম বোলার নাছুম আহমেদ। দুই মেডেনের পর বাকি বলগুলোতেও সবচেয়ে কম রান দিয়ে এই পাঁচজনের মধ্যে রঙ্গনা হেরাথের ইকোনমি রেটই সবচেয়ে কম। ৩.৩ বল করে তিনি রান দিয়েছিলেন মাত্র ৩, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৪ সালের সেই ম্যাচে ০.৮৫ ইকোনমিতে বল করে উইকেটও নিয়েছিলেন পাঁচটি। হেরাথেরই স্বদেশি অজন্তা মেন্ডিস ৪ ওভার বল করে ২ মেডেন নিয়ে বাকি দুই ওভারে ৬ রান দিয়ে ২০১২ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। বাকি যে দুজন আছেন, ভিন্ন ম্যাচে দুজনেরই শিকার ৪টি করে উইকেট। তা নিতে সুলিমান বেন খরচ করেছেন ৬ রান, হরভজন সিংয়ের খরচ ১২ রান।
১- নাছুম আজ রান দিয়েছেন মাত্র ১০। প্রথম ইনিংসে পুরো ৪ ওভার বল করে তাঁর চেয়ে কম রান দিয়েছেন বাংলাদেশের আর মাত্র একজন। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রান দিয়েছিলেন মাত্র ৮। আর নাছুমের সমান রান দিয়ে বোলিং কোটা শেষ করতে পেরেছেন বাংলাদেশের আরও দুই বোলার। ২০০৭ সালে সৈয়দ রাসেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দিয়েছিলেন ১০ রান। সাকিব চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ২৪ বলে ১০ রান দিয়ে শেষ করেছিলেন তাঁর বোলিং।
২- আজকের ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্র ওভার প্রতি রান দিয়েছেন মাত্র ২। টি-টোয়েন্টিতে চার ওভারের স্পেলে নিউজিল্যান্ডের কোনো বোলারের চতুর্থ সেরা মিতব্যয়ী বোলিং এটি। দ্বিতীয় ইনিংসে যা দ্বিতীয় সেরা। ৪ ওভার বল করে সবচেয়ে কম ১.৫০ ইকোনমি ছিল ড্যানিয়েল ভেট্টোরির।
৯- ২০২১ সালে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ জয় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের। সেই নয় জয় পেতে পাকিস্তানের লেগেছে ১৭ ম্যাচ, বাংলাদেশের ১৫টি। চলতি বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার আছে আটটি করে জয়। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড জয় পেয়েছে সমান সাতটি করে ম্যাচে।
৭- এজাজ প্যাটেল এই ম্যাচে শূন্য রানে ফিরিয়েছেন মুশফিকের রহিমকে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের শূন্যের সংখ্যা এখন সাত। বাংলাদেশের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ৯টি শূন্য সৌম্য সরকারের।