বরাবর উৎপল শুভ্র

বরাবর উৎপল শুভ্র

সুপ্রিয়,\r\n\r\nপ্রথমেই ধন্যবাদ দেব নাকি অভিনন্দন? সাড়ম্বর সাফল্য দিয়ে সূচনা করেছেন আপনার ওয়েবসাইট। অভিনন্দনের চেয়েও আমাদের কাছ থেকে বোধ হয় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদই বেশি প্রাপ্য আপনার। বহু পুরনো লেখা ও মুগ্ধতার মায়াঞ্জন আঁকা শৈশব-কৈশোর এক ক্লিকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন আবার। ধন্যবাদ এই জন্যেও

সুপ্রিয়,

প্রথমেই ধন্যবাদ দেব নাকি অভিনন্দন? সাড়ম্বর সাফল্য দিয়ে সূচনা করেছেন আপনার ওয়েবসাইট। অভিনন্দনের চেয়েও আমাদের কাছ থেকে বোধ হয় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদই বেশি প্রাপ্য আপনার। বহু পুরনো লেখা ও মুগ্ধতার মায়াঞ্জন আঁকা শৈশব-কৈশোর এক ক্লিকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন আবার। ধন্যবাদ এই জন্যেও যে এই 'ফোর জি' ইন্টারনেটের যুগে আপনার ওয়েবসাইটে ‘আপনার পাতা’ রেখে আপনার সঙ্গে পত্রমিতালির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। প্রথম দিন থেকেই এই ‘আপনার পাতা’ বিভাগের সদ্ব্যবহার করি করি করে করা হয়ে উঠছিল না, এখন আপনি যদি এই লেখা পড়ে থাকেন, তাহলে বুঝতেই পারছেন কীভাবে 'অসদ্ব্যবহার' করে বসেছি পাতাটার। পাঠকের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি তো নিয়েছেন, আমার মতো অভাজনের ঝক্কি সামলান এইবার!

আপনার সঙ্গে প্রথম পরিচয় কবে ঠিক মনে নেই, তবে প্রথম আপনাকে আলাদা করে চোখে পড়া খুব সম্ভবত ২০০৬ বিশ্বকাপে। প্রথম আলোয় বিজ্ঞাপন দেয়া হতো—জার্মানি থেকে আপনি লিখবেন। বড় বড় ফুটবলার কয়েকজনের নামও ছিল, স্মৃতিশক্তি আমার লবডঙ্কা, বোধ হয় লোথার ম্যাথাউসের নামও ছিল সেবার। আর স্বদেশি কাজী সালাউদ্দীন ও গোলাম সারওয়ার টিপু মনে হয় লিখেছিলেন নিয়মিত। প্রথম আলোর ‘স্টেডিয়াম পাতা’ সেবার দারুণ কাজ করেছিল, সে পর্যন্ত সমস্ত ফুটবল বিশ্বকাপের এক টুকরো ইতিহাস তুলে ধরেছিল ধারাবাহিকভাবে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে বিশেষ সংখ্যায় আপনি লিখেছিলেন আপনার সেই বিখ্যাত লেখা—ব্রাজিল না হলে কে? ইতালি?

ইতালি ঠিক ঠিক চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিল সেবার। দুর্ভাগ্যবশত সেই সংখ্যাটা হারিয়ে ফেলেছি। তবে পরের দুটি বিশ্বকাপ আয়োজনই সযতনে সংগ্রহে রেখে দিয়েছি। ‘আনন্দযজ্ঞে সবার নিমন্ত্রণ’-এ স্পেন-নেদারল্যান্ডস ফাইনালের কথা বলেছিলেন, ফলে গিয়েছিল সেটাও। যেন হয়ে উঠেছিলেন জ্যোতিষী অক্টোপাস পল। পরের আসরে ২০১৪-তে বিশেষ আয়োজনে লিখলেন ‘এমন যদি হতো…’ শিরোনামে। ভাবছেন, এসব আবার বলার কী আছে? আমি কখন কী লিখেছি না-লিখেছি, আমি কি জানি না বাপু?

হুঁ হুঁ, জানেন বৈকি! তবে এটা নিশ্চয়ই মনে নেই, ব্রাজিল-জার্মানি সেমিফাইনাল ম্যাচের পর বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে কেউ একজন আপনাকে ফেসবুক নক দিয়ে বলছে, কেন যে আপনার মন মেসি-আর্জেন্টিনার কথা বলল না!

(মনে হলো কিছুটা অপরাধবোধ নিয়ে) আপনি উত্তর দিলেন, 'ভাই, জার্মানি এখনো তো বিশ্বকাপ জেতেনি!'

জার্মানি বিশ্বকাপ না জিতলেও, কেন যেন মনে হয়েছিল, এবারও ‘ঠিক’ প্রমাণিত হতে যাচ্ছেন আপনি। আপনার লেখাটায় সরাসরি না বললেও ইঙ্গিতটা যে জার্মানির দিকে ছিল তা কে না বুঝেছিল! আর্জেন্টিনা সমর্থক হওয়ায় খুব আশা নিয়ে বসেছিলাম সেবার, মেসি নামের রাজপুত্রটা সোনালি ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরুক সগর্বে। তা যে হয়নি, তাতে আপনার দায় নেই। এই সুযোগে এটাও বলে রাখি, তখনো আপনাকে অভিযুক্ত (যদি আপনার তেমনটা মনে হয়ে থাকে, তা নিতান্তই আমার ত্রুটিযুক্ত অভিব্যক্তির ফল। ক্ষমাপ্রার্থী।) করিনি কিন্তু! আপনার প্রতি মুগ্ধতা ছিল, সঙ্গে বারবার আপনার ‘ঠিক’ বনে যাওয়া, এবং ২০১৪-তে আপনি লেখাটা শেষ করেছিলেন এই বলে যে— ‘সরাসরি না হলেও ইঙ্গিতে বলা হয়েছে’ কথাটার অর্থ যে আমি ধরতে পেরেছি তা আপনাকে জানিয়ে দেয়ার কর্তব্য থেকে খুব সম্ভব মধ্যরাতে অমন উৎপাত। আবারও ক্ষমাপ্রার্থী। যদিও অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর খুব চেষ্টা করেও আপনি সে ঘটনা মনে করতে পারবেন না বলেই স্থির বিশ্বাস আমার।

আপনার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ওইটুকুই। এর আগে-পরে আর কখনো কোথাও কথা হয়নি আপনার সঙ্গে। ইনবক্সে তো নয়ই, কোনো লেখার কমেন্ট বক্সেও নয়। অথচ এখন যোগাযোগ কত সহজ!

গত দেড় দশক ধরে আপনাকে পড়া আমার কাছে মুগ্ধতা ও আনন্দের মিশ্রণে অব্যাখ্যনীয় এক অনুভূতি। আপনার যে ক’টি বই পড়েছি, প্রত্যেকটি বই নিয়ে আলাদা প্রতিক্রিয়া জানানোর কত ইচ্ছে কতবার জন্মেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি আর। আপনার জানার কথা নয়, ক্রিকেট নিয়ে টুকটাক ছাইপাশ লেখার যে ইচ্ছে আমার গড়ে উঠেছে, তার পুরোটাই আপনাকে পড়ার সকরুণ পরিণতি। তাহলে আপনার লেখা মানুষকে মুগ্ধই করে না কেবল, দু’ছত্র লিখতে উদ্বুদ্ধও করে বসে! ফলে আমার মতো অভাজনের ‘ছাইপাশ’ গিলতে বাধ্য হন অনেকেই। এই যে দেখুন না, এখানেও কেমন পট পট লিখছি; বুঝতেই পারছেন কী মস্ত নাছোড়বান্দার পাল্লায় পড়েছেন আপনি। বাচ্চাদের যেমন নাক টিপে ঠোঁট চেপে ওষুধ গিলতে বাধ্য করা হয়, ঠিক তেমনি পাঠক চান বা না চান, আমার সমস্ত ছাইপাশ গিলতে বাধ্য করি আমি পাঠককে।

তবে আপনার অনেক লেখা আক্ষরিক অর্থেই গিলেছি। শব্দ দিয়ে যে সুদৃশ্য চিত্র অঙ্কন করেছেন সাদা পাতায়, তা বহুবার আমাদের করেছে অভিভূত। বহু ক্রিকেটার, বহু ঘটনা, বহু ক্রীড়া-ইতিহাস আপনার লেখনীর কারিকুরিতে চিরস্থায়ী দাগ ফেলেছে মানসপটে। আজহারউদ্দিনের কথা ধরা যাক। আমার ক্রিকেট বুঝতে শেখার সময়ে তিনি ক্যারিয়ার সায়াহ্নে। জড়িয়ে গেছেন ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো জঘন্য কেলেঙ্কারিতে। তারপরও আজহারউদ্দিন, আমার কাছে একজন শিল্পী, ক্রিকেট মাঠের একজন সুনিপুণ চিত্রকর। মার্ক ওয়াহর স্টাইল, অরবিন্দ ডি সিলভার বিনয়ী ঔদ্ধত্য, আকরাম খানের সুগোই বুলোর মহাকাব্য… কত কী! যতবার আকরাম খানের ইনিংসটা নিয়ে পড়েছি, ততবারই চোখে জলকেলির অস্তিত্ব টের পেয়েছি! ‘বেনসন এন্ড হেজেস’ কাপে ডি সিলভার ১২৬-এর গল্প পেড়েছিলেন, বহু কাল বুঝতেই পারিনি সেটা কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ছিল না! কত ক্রিকেট গল্পে-আড্ডায় টেনেছি ইনিংসটা।

গিলবার্ট জেসপের গল্প প্রথম পড়ি ‘সেই সব ইনিংস’ বইয়ের ‘সনাৎ জয়সুরিয়া--মাতারা হারিকেনের রেকর্ড যাত্রা’ অংশটায়। পরে ‘ভেজা উইকেট’-এ ‘জেসপ-বন্দনা’ পড়ি। ফলে পরিস্থিতি এমন হলো যে, গিলবার্ট জেসপকে নিয়ে আস্ত একটা লেখা না লিখে উপায় রইল না। টাই টেস্টের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে প্রথম আলো’র স্টেডিয়াম পাতায় আপনার লেখা ‘জিয়ন-কাঠি’ এখনো রেখে দিয়েছি।

ওরেল, বেনো, ওয়েসলি হল সবাইকে আমার সামনে এনে জীবন্ত দাঁড় করিয়ে দেওয়া, যেন মাইক আথারটনের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আমিও—বিরস বদনে পনের ওভারের ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে যা বলছেন, দিব্যচোখে যেন দেখতে পাচ্ছি তা-ও। যেন আমার সামনেই স্টিভ ওয়াহ স্মিথহাস্যে বলছেন—ক’দিন পর আপনিই আমাকে অন্য প্রশ্ন করবেন। আরও কত গল্প, কত-কতজনকে আচমকা সামনে এনে দেয়া। আপনার সঙ্গে যেন এ এক আনন্দময় পরিভ্রমণ। বুঝি কোনো এক দুর্লভ ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহে ছিল আপনার, আমার সম্মুখে ‘অন’ করে দিয়েছেন তা। সাগ্রহে মুগ্ধ হয়ে গিলছি কেবল।

আপনার বই বা লেখার প্রভাবেই হয়তো,  অনেকেই আমাকে বলেন--আমি নাকি আপনার মতো লিখি! কী ভয়াবহ কাণ্ড। কেউ আরও এক কাঠি সরেস, বলেন--উৎপল শুভ্রকে নাকি মিস করবেন না তারা! বিশ্বাস করুন, ওদের কোনোরূপ উৎকোচ প্রদান করিনি এ সবের জন্য। তবে এটাও ঠিক, সম্মুখে ‘হ্যাঁ', 'হুঁ’ করে স্তুতি করার নামই তো ভদ্রতা। বাংলাদেশ ক্রিকেটের শিক্ষাসফরগুলোয় ভিনদেশি কমেন্টেটররা যেমন করেন আর কি! কিছু একটা না বললে তো আর চলে না। সেক্ষেত্রে অনেককে দেখা যায় অনেক বড় ক্রিকেটারের সঙ্গে মাঝারি প্রতিভার কাউকে তুলনা দিয়ে বসেন। আপনার সঙ্গে আমাকে মিলিয়ে ফেলার ব্যাপারটাকেও এভাবে দেখতে পারেন। এখন নিশ্চয়ই বলছেন, ওরে বাছা! আমি কীভাবে কি দেখব না দেখব, তা-ও তোমার শিখিয়ে দেয়া লাগবে নাকি?

উঁহু, মোটেই না। বলেছিলামই তো ‘অ-সদ্ব্যবহার’ করে বসব, ‘আপনার পাতা’ রেখে আপনাকে লেখার স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন বলেই না…!

আচ্ছা, শেষ করছি। বিরক্তি বাড়াব না আর। আপনার লেখায় কাউন্টি ক্রিকেটের নানান গল্প পড়ে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও লিখতে ইচ্ছে হয়েছিল। কল্পনা মিশিয়ে কয়েকটা লিখেওছি, তা পড়ে কেউ কেউ বলেছেন এভাবে হয় না। কল্পনা মেশানো ঠিক না। নেভিল কার্ডাসকে নিয়ে কত গল্প করেছেন আপনি। এক জায়গায় লিখেছিলেন, কার্ডাস নাকি কোনো কোনো ক্রিকেটারের মুখে নিজের মনগড়া বাক্য বসিয়ে দিতেন। কেউ যদি বলতেন, 'ও তো এমনটা বলেনি। আপনি লিখলেন কেন?' চট করে জবাব দিতেন—বলেনি, কিন্তু বলা উচিত ছিল।

এই ইচ্ছেটা এখনো রয়ে গেছে। এটা সু-ইচ্ছে নাকি কু-ইচ্ছে জানি না, তবে জেসপ-বন্দনায় তাঁকে ঘিরে লেখা ইংরেজি কবিতা পড়ে, বাংলা ভাষায় কেন ক্রিকেট নিয়ে কবিতা লেখা হয় না--এমন ভেবে ‘ক্রিকেট-কবিতা’ লিখতে বসাটা অবশ্যই আস্ত একটা কু-ইচ্ছে। কারণ, এই ক্ষেত্রে যেভাবে কবিতার সম্ভ্রমহানি হয়, বাংলাদেশের কবি-সমাজ টের পেলে পয়সা-টয়সা গছিয়ে হলেও হয়তো নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতেন আমাকে। পয়সাও সাধেনি কেউ, তাই কবিতাও বন্ধ হয়নি।

ক্রিকেট বা ক্রীড়া লিখিয়েদের প্রতি একটা মোহগ্রস্থতা তো আছেই, আছে কৃতজ্ঞতাবোধও। সেই বোধ থেকে ক্রিকেট লিখিয়েদের প্রতি সম্মাননা জানানোর একটা চেষ্টা ছিল। সেখানে আপনাকে ঘিরে লেখা অংশটা দিয়ে শেষ করছি আজকের এই পত্র।

'এবার এই সময়ের একজনের গল্প হোক। উৎপল শুভ্র। বাংলা ক্রিকেট সাহিত্যে সময়ের অন্যতম উজ্জ্বল ধ্রুবতারা। তাঁর কল্পনাশক্তি যেমন অনন্ত, বর্ণনার ভঙ্গিটাও তেমনি মনকাড়া। কারও কারও কাছে তাঁকে পড়া আর মুগ্ধতা হয়ে গেছে সমার্থক। উদাহারণ স্বরূপ দূরে যাওয়ার দরকার নেই, অধমই তাঁর একজন গুণমুগ্ধ।

একটা ছোট্ট উদাহরণ দেয়া যাক। ধরুন, পানি পানের আদব ও শিষ্টাচার বোঝাবেন তিনি, সুকৌশলে পাঠককে বলে যাবেন পরপর—পানি কিন্তু বাংলা নয়, বাংলায় বলা হয় জল। সুকুমার রায়ের বিখ্যাত একটা গল্প আছে, অবাক জলপান। সুকুমার রায় কে, জানেন তো? তিনি হচ্ছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ছেলে, সত্যাজিৎ রায়ের বাবা। সত্যাজিৎ রায় একটি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করেছিলেন, ফেলুদা। বাংলা ভাষায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবু’ হচ্ছে তেমনি একটি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র। সুনীল গাঙ্গুলী ছিলেন সব্যসাচী লেখক। তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতা আছে, কেউ কথা রাখেনি…

ঠিক এভাবে এক গল্প বলতে গিয়ে তিনি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেন অনেক অনেক গল্পের, সুতো ধরিয়ে দেন নানান ঘটনা ও রটনার, আগ্রহ জাগিয়ে দেন কত! পাঠক মুগ্ধ হয়, পাঠক উৎসুক হয়, পাঠক পাঠ-সুখ পেয়ে আপ্লুত হয়। অসম্ভব শক্তিধর এই লেখক ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলা নিয়েও লিখেন, তবে ক্রিকেট আর অন্য সবে যেন কত ব্যবধান!

বেশ কয়েকটা গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। তবে ‘কল্পলোকে ক্রিকেটের গল্প’ বইয়ে অভাবনীয় এক কাণ্ডের কাণ্ডারি হন তিনি। কল্পনাশক্তির সঙ্গে তাঁর ক্রিকেট-জ্ঞান, পরিসংখ্যানের সাবলীল বর্ণনা--সব মিলেমিশে একাকার। গল্প করতে করতে কবে যে ক্রিকেট ইতিহাসের বিশাল এক পথ পরিভ্রমণ করা হয়ে যায়, তা টেরই পাওয়া যায় না।

সুপ্রিয় উৎপল শুভ্র! বহুদিন ‘ভেজা উইকেটে’ গ্রন্থের মতো চমৎকার সেই সব গল্পের দেখা নেই। কবে নাগাদ আবার ‘অবাক এক ম্যাচের গল্প’ বা ‘স্বপ্নের একদিন’ বা ‘জেসপ বন্দনা’ গল্পগুলোর মতো নতুন কোনো গল্প শোনাবেন?

ক্রিকেট মাঠের সুনিপুণ বর্ণন
সুচারুশব্দের প্রয়োগে
অদেখা ক্রিকেটে জাগে শিহরণ
অদ্ভুত পাঠ-সুখ সংযোগে।

বুঝি শব্দরাজ্যের রাজাধিরাজ!
শব্দেরা নেহাৎ ভৃত্য
রাজার ডাকে শব্দের সাজ
সে এক সুন্দরতম চিত্র! 

মুগ্ধতার সীমা-রেখা নেই
পাঠ-সুখ সুখ-পাঠ
মোহগ্রস্থতার প্রমাণ এই—
রেখে যাই নিখাদ;
কিঞ্চিৎ শুধিবার প্রচেষ্টা
কত যে আছি ঋণী!

দেখি অপলক, ক্রিকেট-লেখা
তোমাতে মুগ্ধ, হে গুণী!'

আপনার ওয়েবসাইট ও আপনার সমস্ত শুভ-আকাঙ্খার জন্য রইল আন্তরিক শুভকামনা। বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষায় ক্রিকেট লিখিয়েদের ইতিহাসে আপনি একজন প্রবাদপ্রতিম। নতুন পরিচয় ও উদ্যোগে ব্র্যাডম্যানীয় মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হবেন, এই আশাবাদ।

ইতি,

আপনার একজন মুগ্ধ পাঠক

মোঃ ইয়াসির ইরফান

(পুনশ্চ ০১: বহু পুরনো লেখা পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। আপনার বাবাকে নিয়ে একটা লেখা ছিল, বাবা থেকে কীভাবে যেন তিনি ‘বাবু’ হয়ে যান আপনাদের মুখে, রস+আলো তে লিখেছিলেন খুব সম্ভবত। সেই লেখা কি আবার পড়ার সুযোগ হবে আমাদের?

পুনশ্চ ০২: এই পত্রের কোনো ছত্রে আপনার কোনো সমালোচনা নেই। সমালোচনার উর্ধ্বে নিশ্চয়ই নন। কিন্তু একজন মুগ্ধ পাঠক অনেকটা নেশাগ্রস্থের মতো। তার পক্ষে পছন্দের লেখকের কোনো ত্রুটি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তাই আমার কাছে আপনাকে পাঠ করার অপর নামই হয়ে গেছে 'মুগ্ধতা'।)

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×